১০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দ্রোহ, প্রেম ও চেতনার মহাকাব্যিক সুর নজরুল

কাজী নজরুল ইসলাম (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬)—এই নাম শুধু একটি কবির নাম নয়, এটি বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত ও বাঙালি জাতিসত্তার এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের প্রতিচ্ছবি। প্রায় ৭৭ বছরের জীবনকালে নজরুল তার সৃষ্টিকর্ম ও জীবনাদর্শ দিয়ে যে প্রভাব রেখে গেছেন, তা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মনে চিরজাগরূক থাকবে। তাঁর সাহিত্যিক কর্ম, রাজনৈতিক দর্শন এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লব—সবকিছু মিলিয়ে নজরুল এক প্রোজ্জ্বল মহাযাত্রার প্রতীক।
প্রাথমিক জীবন ও উত্থান: বিদ্রোহের বীজ বপন
১৮৯৯ সালের ২৫ মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে নজরুলের জন্ম। অভাব-অনটনের মধ্যেও তাঁর প্রবল জ্ঞানস্পৃহা ছিল লক্ষণীয়। গ্রামের মক্তবে লেখাপড়ার পর রুটির দোকানে কাজ, লেটোর দলে যোগদান, এমনকি সৈনিক জীবন (১৯১৭-২০) তাঁকে বিচিত্র অভিজ্ঞতা দান করে। এই সৈনিক জীবনেই (৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্ট) তিনি বিশ্বযুদ্ধ ও বিভিন্ন সংস্কৃতির সংস্পর্শে আসেন, যা তাঁর চিন্তাধারাকে প্রসারিত করে। করাচি সেনানিবাসে বসেই তিনি সাহিত্যচর্চায় গভীর মনোযোগী হন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত লেখা ‘বাউণ্ডুলের আত্মকথা’ (১৯১৯) এবং এরপর ‘মুক্তি’ ও ‘হেনা’র মতো গল্পগুলি তাঁর ভেতরের সুপ্ত প্রতিভাকে উন্মোচন করে। ১৯২০ সালে সৈনিক জীবন ত্যাগ করে কলকাতায় ফিরে আসার পর তাঁর সাহিত্যিক জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
সাহিত্যিক কর্ম ও অবদান: দ্রোহের বহুমুখী প্রকাশ
নজরুলের সাহিত্যিক জীবনের মূলসুর ছিল দ্রোহ এবং মানবমুক্তি। তাঁর লেখনীতে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা শ্রেণির ঊর্ধ্বে মানবতাকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
কবিতা: নজরুল তাঁর কবিতার মধ্য দিয়ে প্রচলিত সমাজব্যবস্থা, শোষণ এবং পরাধীনতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ‘বিদ্রোহী’ (১৯২১) কবিতা প্রকাশের পর তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এই কবিতায় তিনি নিজেকে মহাবিশ্বের সকল শক্তির প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করে সকল প্রকার অন্যায়-অবিচারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। ‘অগ্নিবীণা’ (১৯২২), ‘বিষের বাঁশি’ (১৯২৪), ‘ভাঙার গান’ (১৯২৪) কাব্যগ্রন্থগুলি তাঁর দ্রোহী সত্তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি নারী-পুরুষের সমতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং শ্রমিকের অধিকার নিয়ে অসংখ্য কবিতা লিখেছেন।
সঙ্গীত: সঙ্গীত জগতে নজরুলের অবদান অবিস্মরণীয়। প্রায় ৪,০০০-এরও বেশি গান তিনি রচনা করেছেন, যা ‘নজরুলগীতি’ নামে পরিচিত। তিনি বাংলা সঙ্গীতে গজলের প্রচলন করেন, যা তাঁর অন্যতম মৌলিক অবদান। এছাড়া, রাগপ্রধান গান, ভজন, কীর্তন, শ্যামাসংগীত, দেশাত্মবোধক গান এবং গণসঙ্গীত রচনায় তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিভিন্ন রাগ-রাগিণীকে তিনি বাংলা গানের মূলধারায় এনেছেন এবং বহু নতুন রাগের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সঙ্গীত ছিল তাঁর প্রতিবাদের ভাষা, যা গণমানুষের কাছে সহজে পৌঁছে যেত।
উপন্যাস ও ছোটগল্প: যদিও তাঁর কবিতার মতো বিস্তৃত না হলেও, নজরুলের উপন্যাস ‘বাঁধন হারা’ (১৯২৭), ‘মৃত্যুক্ষুধা’ (১৯৩০) এবং ‘কুহেলিকা’ (১৯৩১) তাঁর সমাজ-সচেতন মনোভঙ্গির পরিচয় দেয়। ছোটগল্পেও তিনি সামাজিক অসঙ্গতি, গ্রামীণ জীবন এবং মানবিক সম্পর্ককে তুলে ধরেছেন।
নাটক ও প্রবন্ধ: নজরুলের ‘ঝিলিমিলি’ (১৯২৮), ‘আলেয়া’ (১৯৩১) প্রভৃতি নাটক তাঁর নাট্যপ্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। প্রবন্ধ সাহিত্যে তাঁর ‘যুগবাণী’ (১৯২২), ‘দুর্দিনের যাত্রী’ (১৯২৬) এবং ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ (১৯২৩) তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরে এবং তাঁর বলিষ্ঠ মতাদর্শকে প্রকাশ করে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন: এক ভিন্ন চেতনার উন্মোচন
নজরুল কেবল একজন সাহিত্যিক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ও সমাজ সংস্কারক। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিবাদ ছিল আপসহীন। তিনি ১৯২৫ সালে ‘শ্রমিক-প্রজা স্বরাজ দল’ গঠন করেন এবং ‘লাঙল’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী লেখনীর জন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে।
নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছিল তাঁর দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি হিন্দু-মুসলিমের মিলন ও সহাবস্থানের স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর সৃষ্টিকর্মে মুসলিম ঐতিহ্যের পাশাপাশি হিন্দু দেব-দেবী ও পুরাণের অবাধ বিচরণ দেখা যায়, যা তাঁকে সত্যিকার অর্থেই ‘সেক্যুলার’ করে তোলে। তিনি শুধু মুখে নয়, জীবনাচরণেও এই অসাম্প্রদায়িকতা ধারণ করতেন।
শেষ জীবন ও উত্তরাধিকার
১৯৪২ সালে এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে নজরুল বাকশক্তি ও স্মৃতিশক্তি হারান। দীর্ঘ ৩৪ বছর তিনি এই কঠিন অবস্থায় ছিলেন। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে সসম্মানে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন এবং জাতীয় কবির মর্যাদা দান করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর স্বল্পকালীন সক্রিয় জীবনে যে বিশাল সাহিত্য ভান্ডার রেখে গেছেন, তা অতুলনীয়। তিনি শুধু বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেননি, বাঙালি জাতিসত্তার নির্মাণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর দ্রোহ, প্রেম, সাম্যবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং মানবতাবাদী দর্শন আজও আমাদের পথ দেখায়। নজরুল এক চিরন্তন অনুপ্রেরণার উৎস, যাঁর মহাযাত্রা কাল থেকে কালান্তরে প্রবহমান।
জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

দ্রোহ, প্রেম ও চেতনার মহাকাব্যিক সুর নজরুল

আপডেট সময় : ০২:১২:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
কাজী নজরুল ইসলাম (২৫ মে ১৮৯৯ – ২৯ আগস্ট ১৯৭৬)—এই নাম শুধু একটি কবির নাম নয়, এটি বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত ও বাঙালি জাতিসত্তার এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের প্রতিচ্ছবি। প্রায় ৭৭ বছরের জীবনকালে নজরুল তার সৃষ্টিকর্ম ও জীবনাদর্শ দিয়ে যে প্রভাব রেখে গেছেন, তা বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মনে চিরজাগরূক থাকবে। তাঁর সাহিত্যিক কর্ম, রাজনৈতিক দর্শন এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লব—সবকিছু মিলিয়ে নজরুল এক প্রোজ্জ্বল মহাযাত্রার প্রতীক।
প্রাথমিক জীবন ও উত্থান: বিদ্রোহের বীজ বপন
১৮৯৯ সালের ২৫ মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে নজরুলের জন্ম। অভাব-অনটনের মধ্যেও তাঁর প্রবল জ্ঞানস্পৃহা ছিল লক্ষণীয়। গ্রামের মক্তবে লেখাপড়ার পর রুটির দোকানে কাজ, লেটোর দলে যোগদান, এমনকি সৈনিক জীবন (১৯১৭-২০) তাঁকে বিচিত্র অভিজ্ঞতা দান করে। এই সৈনিক জীবনেই (৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্ট) তিনি বিশ্বযুদ্ধ ও বিভিন্ন সংস্কৃতির সংস্পর্শে আসেন, যা তাঁর চিন্তাধারাকে প্রসারিত করে। করাচি সেনানিবাসে বসেই তিনি সাহিত্যচর্চায় গভীর মনোযোগী হন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত লেখা ‘বাউণ্ডুলের আত্মকথা’ (১৯১৯) এবং এরপর ‘মুক্তি’ ও ‘হেনা’র মতো গল্পগুলি তাঁর ভেতরের সুপ্ত প্রতিভাকে উন্মোচন করে। ১৯২০ সালে সৈনিক জীবন ত্যাগ করে কলকাতায় ফিরে আসার পর তাঁর সাহিত্যিক জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
সাহিত্যিক কর্ম ও অবদান: দ্রোহের বহুমুখী প্রকাশ
নজরুলের সাহিত্যিক জীবনের মূলসুর ছিল দ্রোহ এবং মানবমুক্তি। তাঁর লেখনীতে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা শ্রেণির ঊর্ধ্বে মানবতাকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
কবিতা: নজরুল তাঁর কবিতার মধ্য দিয়ে প্রচলিত সমাজব্যবস্থা, শোষণ এবং পরাধীনতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ‘বিদ্রোহী’ (১৯২১) কবিতা প্রকাশের পর তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এই কবিতায় তিনি নিজেকে মহাবিশ্বের সকল শক্তির প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করে সকল প্রকার অন্যায়-অবিচারকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। ‘অগ্নিবীণা’ (১৯২২), ‘বিষের বাঁশি’ (১৯২৪), ‘ভাঙার গান’ (১৯২৪) কাব্যগ্রন্থগুলি তাঁর দ্রোহী সত্তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি নারী-পুরুষের সমতা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং শ্রমিকের অধিকার নিয়ে অসংখ্য কবিতা লিখেছেন।
সঙ্গীত: সঙ্গীত জগতে নজরুলের অবদান অবিস্মরণীয়। প্রায় ৪,০০০-এরও বেশি গান তিনি রচনা করেছেন, যা ‘নজরুলগীতি’ নামে পরিচিত। তিনি বাংলা সঙ্গীতে গজলের প্রচলন করেন, যা তাঁর অন্যতম মৌলিক অবদান। এছাড়া, রাগপ্রধান গান, ভজন, কীর্তন, শ্যামাসংগীত, দেশাত্মবোধক গান এবং গণসঙ্গীত রচনায় তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিভিন্ন রাগ-রাগিণীকে তিনি বাংলা গানের মূলধারায় এনেছেন এবং বহু নতুন রাগের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সঙ্গীত ছিল তাঁর প্রতিবাদের ভাষা, যা গণমানুষের কাছে সহজে পৌঁছে যেত।
উপন্যাস ও ছোটগল্প: যদিও তাঁর কবিতার মতো বিস্তৃত না হলেও, নজরুলের উপন্যাস ‘বাঁধন হারা’ (১৯২৭), ‘মৃত্যুক্ষুধা’ (১৯৩০) এবং ‘কুহেলিকা’ (১৯৩১) তাঁর সমাজ-সচেতন মনোভঙ্গির পরিচয় দেয়। ছোটগল্পেও তিনি সামাজিক অসঙ্গতি, গ্রামীণ জীবন এবং মানবিক সম্পর্ককে তুলে ধরেছেন।
নাটক ও প্রবন্ধ: নজরুলের ‘ঝিলিমিলি’ (১৯২৮), ‘আলেয়া’ (১৯৩১) প্রভৃতি নাটক তাঁর নাট্যপ্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। প্রবন্ধ সাহিত্যে তাঁর ‘যুগবাণী’ (১৯২২), ‘দুর্দিনের যাত্রী’ (১৯২৬) এবং ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ (১৯২৩) তৎকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটকে তুলে ধরে এবং তাঁর বলিষ্ঠ মতাদর্শকে প্রকাশ করে।
রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন: এক ভিন্ন চেতনার উন্মোচন
নজরুল কেবল একজন সাহিত্যিক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ও সমাজ সংস্কারক। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিবাদ ছিল আপসহীন। তিনি ১৯২৫ সালে ‘শ্রমিক-প্রজা স্বরাজ দল’ গঠন করেন এবং ‘লাঙল’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী লেখনীর জন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে।
নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছিল তাঁর দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তিনি হিন্দু-মুসলিমের মিলন ও সহাবস্থানের স্বপ্ন দেখতেন। তাঁর সৃষ্টিকর্মে মুসলিম ঐতিহ্যের পাশাপাশি হিন্দু দেব-দেবী ও পুরাণের অবাধ বিচরণ দেখা যায়, যা তাঁকে সত্যিকার অর্থেই ‘সেক্যুলার’ করে তোলে। তিনি শুধু মুখে নয়, জীবনাচরণেও এই অসাম্প্রদায়িকতা ধারণ করতেন।
শেষ জীবন ও উত্তরাধিকার
১৯৪২ সালে এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে নজরুল বাকশক্তি ও স্মৃতিশক্তি হারান। দীর্ঘ ৩৪ বছর তিনি এই কঠিন অবস্থায় ছিলেন। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে সসম্মানে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন এবং জাতীয় কবির মর্যাদা দান করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর স্বল্পকালীন সক্রিয় জীবনে যে বিশাল সাহিত্য ভান্ডার রেখে গেছেন, তা অতুলনীয়। তিনি শুধু বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেননি, বাঙালি জাতিসত্তার নির্মাণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর দ্রোহ, প্রেম, সাম্যবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং মানবতাবাদী দর্শন আজও আমাদের পথ দেখায়। নজরুল এক চিরন্তন অনুপ্রেরণার উৎস, যাঁর মহাযাত্রা কাল থেকে কালান্তরে প্রবহমান।