০১:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্যাম্পে দুই গ্রুপের গোলাগুলি, শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ নিহত ২

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে পৃথক গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পৃথক ঘটনায় উভয়পক্ষের দুজনের মৃত্যুও হয়েছে। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়েছে।
নিহতদের পরিচয় হলো- উখিয়ার ৯ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইয়াসিনের ছেলে ইউনুস প্রকাশ চাকমা ইউনুস (৩২)। তাঁর বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে। অপরজন হলেন উখিয়ার ১৫ নম্বর জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা ইমান হোসাইনের ছেলে আরাফাত হোসেন (১৫)।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৬ টায় ক্যাম্প-১৫ এলাকার ডি/৪ ও ডি/১৩ ব্লকে আরসা ও আরএসও গ্রুপের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। এসময় আরসা সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক মো. আরাফাত হোসেন নামক এক রোহিঙ্গাকে তুলে নিয়ে ডি/৪ ব্লকের রাস্তায় জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক আমির জাফর বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে এক রোহিঙ্গার গলাকাটা মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উখিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাতে ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপ আরএসও ও আরসার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুই গ্রুপের মধ্যে অনেক্ষণ ধরে গুলি ছোড়াছুড়ি হয়। এক পর্যায়ে আরএসও’র ছোঁড়া গুলিতে আরসা গ্রুপের শীর্ষ কমান্ডার চাকমাইয়া ওরফে ইউসুফ গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে জবাই করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এপিবিএন-১৪ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল জানান, আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ক্যাম্পে প্রতিনিয়ত কিছু সন্ত্রাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে থাকে। আর এই আধিপত্য বিস্তারের জেরে এবারও দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়, সেখানে চাকমাইয়া ইউসুফ নামে একজন নিহত হয়। তিনি ক্যাম্প-৯ এলাকার বাসিন্দা।
সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন- এ ঘটনার পর থেকে পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আর এই চাকমাইয়া ইউসুফ আরসার কিলিং স্কোয়াডের শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরসা বিরোধী অভিযান এবং আরএসওর হাতে একের পর এক সদস্য নিহতের ঘটনায় দুর্বল হয়ে পড়ে আরসা। ফলে ক্যাম্পে কিলিং মিশন চালানোর জন্য আরসা প্রধান চাকমাইয়া ইউসুফকে সম্প্রতি উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠান।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের পৃথক ঘটনায় দুই জন নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও বর্তমানে ক্যাম্প অভ্যন্তরের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

ক্যাম্পে দুই গ্রুপের গোলাগুলি, শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ নিহত ২

আপডেট সময় : ০৪:৫২:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে পৃথক গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পৃথক ঘটনায় উভয়পক্ষের দুজনের মৃত্যুও হয়েছে। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অরগানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়েছে।
নিহতদের পরিচয় হলো- উখিয়ার ৯ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইয়াসিনের ছেলে ইউনুস প্রকাশ চাকমা ইউনুস (৩২)। তাঁর বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় তিনটি হত্যা মামলা রয়েছে। অপরজন হলেন উখিয়ার ১৫ নম্বর জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা ইমান হোসাইনের ছেলে আরাফাত হোসেন (১৫)।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৬ টায় ক্যাম্প-১৫ এলাকার ডি/৪ ও ডি/১৩ ব্লকে আরসা ও আরএসও গ্রুপের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। এসময় আরসা সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক মো. আরাফাত হোসেন নামক এক রোহিঙ্গাকে তুলে নিয়ে ডি/৪ ব্লকের রাস্তায় জবাই করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক আমির জাফর বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে এক রোহিঙ্গার গলাকাটা মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উখিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাতে ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপ আরএসও ও আরসার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুই গ্রুপের মধ্যে অনেক্ষণ ধরে গুলি ছোড়াছুড়ি হয়। এক পর্যায়ে আরএসও’র ছোঁড়া গুলিতে আরসা গ্রুপের শীর্ষ কমান্ডার চাকমাইয়া ওরফে ইউসুফ গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাকে জবাই করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এপিবিএন-১৪ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ ইকবাল জানান, আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে ক্যাম্পে প্রতিনিয়ত কিছু সন্ত্রাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে থাকে। আর এই আধিপত্য বিস্তারের জেরে এবারও দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়, সেখানে চাকমাইয়া ইউসুফ নামে একজন নিহত হয়। তিনি ক্যাম্প-৯ এলাকার বাসিন্দা।
সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন- এ ঘটনার পর থেকে পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আর এই চাকমাইয়া ইউসুফ আরসার কিলিং স্কোয়াডের শীর্ষ কমান্ডার ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরসা বিরোধী অভিযান এবং আরএসওর হাতে একের পর এক সদস্য নিহতের ঘটনায় দুর্বল হয়ে পড়ে আরসা। ফলে ক্যাম্পে কিলিং মিশন চালানোর জন্য আরসা প্রধান চাকমাইয়া ইউসুফকে সম্প্রতি উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠান।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের পৃথক ঘটনায় দুই জন নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও বর্তমানে ক্যাম্প অভ্যন্তরের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।