ম্যাচের আগে ছিল স্বপ্ন। ম্যাচে হয়েছে বাস্তবতার উপলব্ধি। বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে ফ্ল্যামেঙ্গো কোচ ফিলিপি লুইস অনুভব করতে পেরেছেন, দুই দলের মানের ব্যবধান আকাশ-পাতাল। পুরোনো আক্ষেপও তার জেগে উঠল, যদি নিজেদের সেরা ফুটবলারদের হারাতে না হতো! যেমন ফ্ল্যামেঙ্গো ছেড়েই রেয়াল মাদ্রিদে নাম লিখিয়েছিলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর ম্যাচটিতে রোববার ফ্ল্যামেঙ্গোকে ৪-২ গোলে হারায় বায়ার্ন মিউনিখ। জোড়া গোল করেন জার্মান দলটির তারকার স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন। প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই দুই গোল হজম করা ফ্ল্যামেঙ্গো পরে লড়াই করলেও পেরে ওঠেনি বায়ার্নের সঙ্গে। ম্যাচের পর কোচ ফিলিপি লুইস তুলে ধরলেন ফুটবলীয় বাস্তবতার ছবি। ওরা শুরু থেকেই আমাদেরকে প্রবল চাপে রেখেছে। একসঙ্গে ৮ জন, ১০ জন ফুটবলার মিলে চেপে ধরেছে প্রায়। আমাদের পরিকল্পনাও অবশ্য কাজে লেগেছে এবং আমরা ওদেরকে পাল্টা চাপে রাখতে পেরেছি ও গোলের সুযোগ তৈরি করেছি। তবে ওরা আমাদের থেকে শ্রেয়তর দল ছিল। ‘আমরা বিশ্ব ফুটবলের অভিজাতদের সঙ্গে লড়ছিলাম। ভিনিসিয়ুস যদি আমাদের ক্লাব ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ না দিত, আমাদের দলেও থাকত বিশ্বের সেরা ফুটবলার।’
ছয় বছর বয়সে ফ্ল্যামেঙ্গোর একাডেমিতে পা রেখে ভিনিসিয়ুস বেড়ে ওঠেন এখানেই। ১৭ বছর বয়সে এই ক্লাবের হয়েই পা রাখেন পেশাদার ফুটবলে। পরের বছরই তিনি পাড়ি জমান রিয়াল মাদ্রিদে। শুধু তিনিই নন, এই অঞ্চলের আরও অসংখ্য ফুটবলারের গল্প এটি। প্রতিভাবান ফুটবলারদের ওপর অল্প বয়সেই নজর পড়ে ইউরোপের ক্লাবগুলির। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, খ্যাতি ও অর্থের হাতছানিতে তারা পাড়ি জমান ইউরোপের নানা প্রান্তে। ফ্ল্যামেঙ্গো এই ম্যাচে কোনোভাবে জিতে গেলেও দক্ষিণ আমেরিকা ও ইউরোপের ফুটবলের সত্যিকারের ছবিটা বদলাত না, বলছেন কোচ। ‘তারা (দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ফুটবলাররা) অভিজাত ফুটবলে খেলতে চায় এবং সেজনই তারা সেখানে আছে। আমরা যদি আজকে জিততাম বায়ার্নের সঙ্গে, তাহলেও বাস্তবতা বদলাত না। ইউরোপের দলগুলি অনেক উঁচু মানের। ‘আমাদের দলে অনেক ভালো মানের ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার আছে। কিন্তু তাদের দলে আছে সেরা ফুটবলাররা। ওদের ফুটবলাররা আমাদের চেয়ে এগিয়ে, এটাই সত্যি।’
বায়ার্নের কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি অবশ্য প্রতিপক্ষ কোচের সঙ্গে শতভাগ একমত নন। ‘যে কোনো টুর্নামেন্টে ফুটবলারদের মান একটি বড় ব্যাপার বটে, তবে পাশাপাশি বিশ্বাসও গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানি না, ব্যাপারটি এতটাই সত্যি কি না, তবে আমি যা দেখি, বিশ্বের সেরা ফিনিশারদের অনেকেই তো দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের। এই অঞ্চলের দলগুলির রক্তে মিশে আছে ফুটবল।’ কোয়ার্টার-ফাইনালে বায়ার্নের অপেক্ষায় কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। আগামী শনিবার আটলান্টায় তাদের প্রতিপক্ষ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি।
ক্লাব বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলটি টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে।
রোববার রাতে মার্সিডিজ বেঞ্জ স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধেই ৪-০ গোলের লিড নেয় লা প্যারিসিয়ানরা। এর মধ্যে ৬ ও ৩৯ মিনিটে গোল করেন পর্তুগিজ মিডফিল্ডার জোয়ও নেভেস। তার গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয় লুইস এনরিকের দল। এরপর প্রথমার্ধের শেষ সময়ে আরও দুই গোল হজম করে মেসিদের মায়ামি। এর মধ্যে ৪৪ মিনিটের গোলটি পিএসজি পায় আত্মঘাতী থেকে। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে চতুর্থ গোলটি করেন আশরাফ হাকিমি। দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচ বদলি নামিয়ে শুরু করে পিএসজি। মাঠে নামেন উসমান ডেম্বেলে ও জাইরি এমেরি। তারা গোলেন সুযোগ তৈরি করলেও জালে বল পাঠাতে পারেননি।


























