১২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘ছোটদের সময়’ বর্ণিল ঈদ সংখ্যা

চমৎকার প্রচ্ছদের ‘ছোটদের সময়’ সংখ্যাটি হাতে পেলাম। প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী রজত। দেশের অনেক শিশু সাহিত্যিক লিখেছেন এ সংখ্যায়। পড়ে বেশ ভালো লাগল। ১২ ফর্মার সংখ্যাটি আকারে ছোট হলেও এর বিষয় বৈচিত্র্য ও ব্যাপ্তি অনেক।

 

 

কথায় বলে, ‘দানি মরিচের ঝাল বেশি’। ব্যাপার সেরকমই। ছোট এ সংখ্যাটিতে স্থান পেয়েছে গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সাইন্স ফিকশন, ফিচারসহ সাহিত্যের নানান বিষয়। পত্রিকাজুড়ে একটার পর একটা লেখা চুম্বকের মতো আকর্ষণ করল। টানা না পড়ে থামা গেলনা। বেশিরভাগ লেখকের লেখা পড়ে ভালো লেগেছে। তার মধ্যে দুজন লেখকের বিষয় উল্লেখ না করে পারছি না। প্রথমজন হলেন কবি জব্বার আল নাঈম। ছোটদের জন্য ‘বোকা বাঘ ও চতুর শিয়াল’ গল্পটি লিখেছেন। মামা বাঘ ও ভাগিনা শিয়ালের অনেক গল্পই আমরা পড়েছি। ধূর্ত শিয়াল বারবরাই তার উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে বাঘকে বোকা বানিয়েছে। এই গল্পও সেই চিরাচরিত নিয়মে লেখা। তবে মজার ব্যাপার হলো এ গল্পে শিয়ালের বন্ধু হলো কচ্ছপ! বন্ধু কচ্ছপকে যখন বাঘ শিকার করল তখন নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে শিয়াল তার ধূর্তামি দিয়ে বাঁচিয়ে ফেলে। শিয়ালের বুদ্ধিতে কচ্ছপকে মজা করে খাওয়ার জন্য বাঘ নিজেই কচ্ছপকে একসময় নদীতে ফেলে দেয়। অবশেষে বাঘ যখন বুঝতে পারল এ শিয়ালের ধূর্তামি ততক্ষণে কচ্ছপও বেঁচে গেল। এদিকে শিয়ালও পালিয়ে গেল। শুধু শিশু কেন বড়দেরও মনোরঞ্জন দিতে এ গল্পের জুড়ি নেই।

 

 

দ্বিতীয় জন হলেন আমার প্রিয় লেখক শিশু সাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম ভাই। ছোটদের জন্য উপন্যাস লিখেছেন তিনি। উপন্যাসের নাম ‘রাফখাতা’। ছোটবেলায় কত কিনা আমি রাফখাতায় লিখেছি। এমন একটা মোটা বাংলা খাতা আমারও ছিল। একদিন ঘর থেকে খাতাটা কে যেন নিয়ে যায়। অনেক খুঁজেও আর পাইনি। এতে খুব কষ্ট পেয়েছি। সে কষ্ট আজও ভুলতে পারিনি। ছোটদের সময় পড়ে বুঝলাম আমীরুল ইসলাম ভাইও ভুলতে পারেন নি। তাইতো তিনি হারিয়ে যাওয়া রাফখাতার সব কথা স্মৃতি থেকে এনে ঢেলে দিয়েছেন ‘রাফখাতা’ উপন্যাসে। পড়ে মনে হয়েছে এটাই আমীরুল ইসলাম ভাইয়ের ছোটবেলা। আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। হবেও তাই। ছোট পরিসরে দশটি অধ্যায়ে লেখাটি শেষ করেছেন তিনি। প্রতিটি অধ্যায়ে আবেগ ঘন লেখনি দ্বারা তিনি আমাদের নিয়ে গেলেন হারিয়ে যাওয়া শৈশব-কৈশোরে।

 

 

শিশু সাহিত্যিক ফারুক হোসেন একটি উপন্যাস লিখেছেন এ সংখ্যায়। স্মৃতি গল্পে রেজাউল করিম খোকন তার ছোটবেলার ট্রেনে ছড়ার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেছেন। সেই সময়ের সাথে বর্তমান সময়ে পদ্মাসেতুতে ট্রেন চালুর বিষয়ও উল্লেখ করেছেন।

 

সংখাটিতে ছোটদের জন্য বেশ চমৎকার কবিতা লিখেছেন কবি নাসির আহমেদ, ফারুক নওয়াজ, আনজির লিটন ভাই। উপন্যাস লিখেছেন কাইজার চৌধুরী, ফারুক হোসেন ও আমীরুল ইসলাম। গল্প লিখেছেন ফরিদুর রেজা সাগর, রোকেয়া খাতুন রুবী, জাব্বার আল নাঈম। রূপ কথার গল্প লিখেছেন কবি ও শিশু সাহিত্যিক হাসান হাফিজসহ আরও অনেকে।

 

সবশেষে এমন সুন্দর গোছাল একটা সংখ্যা পাঠকদের উপহার দেয়ার জন্য সম্পাদককে সাধুবাধ দিতেই হবে। সংখ্যাটির দাম ২০০ টাকা।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

‘ছোটদের সময়’ বর্ণিল ঈদ সংখ্যা

আপডেট সময় : ০৬:১৬:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চমৎকার প্রচ্ছদের ‘ছোটদের সময়’ সংখ্যাটি হাতে পেলাম। প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী রজত। দেশের অনেক শিশু সাহিত্যিক লিখেছেন এ সংখ্যায়। পড়ে বেশ ভালো লাগল। ১২ ফর্মার সংখ্যাটি আকারে ছোট হলেও এর বিষয় বৈচিত্র্য ও ব্যাপ্তি অনেক।

 

 

কথায় বলে, ‘দানি মরিচের ঝাল বেশি’। ব্যাপার সেরকমই। ছোট এ সংখ্যাটিতে স্থান পেয়েছে গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সাইন্স ফিকশন, ফিচারসহ সাহিত্যের নানান বিষয়। পত্রিকাজুড়ে একটার পর একটা লেখা চুম্বকের মতো আকর্ষণ করল। টানা না পড়ে থামা গেলনা। বেশিরভাগ লেখকের লেখা পড়ে ভালো লেগেছে। তার মধ্যে দুজন লেখকের বিষয় উল্লেখ না করে পারছি না। প্রথমজন হলেন কবি জব্বার আল নাঈম। ছোটদের জন্য ‘বোকা বাঘ ও চতুর শিয়াল’ গল্পটি লিখেছেন। মামা বাঘ ও ভাগিনা শিয়ালের অনেক গল্পই আমরা পড়েছি। ধূর্ত শিয়াল বারবরাই তার উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে বাঘকে বোকা বানিয়েছে। এই গল্পও সেই চিরাচরিত নিয়মে লেখা। তবে মজার ব্যাপার হলো এ গল্পে শিয়ালের বন্ধু হলো কচ্ছপ! বন্ধু কচ্ছপকে যখন বাঘ শিকার করল তখন নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে শিয়াল তার ধূর্তামি দিয়ে বাঁচিয়ে ফেলে। শিয়ালের বুদ্ধিতে কচ্ছপকে মজা করে খাওয়ার জন্য বাঘ নিজেই কচ্ছপকে একসময় নদীতে ফেলে দেয়। অবশেষে বাঘ যখন বুঝতে পারল এ শিয়ালের ধূর্তামি ততক্ষণে কচ্ছপও বেঁচে গেল। এদিকে শিয়ালও পালিয়ে গেল। শুধু শিশু কেন বড়দেরও মনোরঞ্জন দিতে এ গল্পের জুড়ি নেই।

 

 

দ্বিতীয় জন হলেন আমার প্রিয় লেখক শিশু সাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম ভাই। ছোটদের জন্য উপন্যাস লিখেছেন তিনি। উপন্যাসের নাম ‘রাফখাতা’। ছোটবেলায় কত কিনা আমি রাফখাতায় লিখেছি। এমন একটা মোটা বাংলা খাতা আমারও ছিল। একদিন ঘর থেকে খাতাটা কে যেন নিয়ে যায়। অনেক খুঁজেও আর পাইনি। এতে খুব কষ্ট পেয়েছি। সে কষ্ট আজও ভুলতে পারিনি। ছোটদের সময় পড়ে বুঝলাম আমীরুল ইসলাম ভাইও ভুলতে পারেন নি। তাইতো তিনি হারিয়ে যাওয়া রাফখাতার সব কথা স্মৃতি থেকে এনে ঢেলে দিয়েছেন ‘রাফখাতা’ উপন্যাসে। পড়ে মনে হয়েছে এটাই আমীরুল ইসলাম ভাইয়ের ছোটবেলা। আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। হবেও তাই। ছোট পরিসরে দশটি অধ্যায়ে লেখাটি শেষ করেছেন তিনি। প্রতিটি অধ্যায়ে আবেগ ঘন লেখনি দ্বারা তিনি আমাদের নিয়ে গেলেন হারিয়ে যাওয়া শৈশব-কৈশোরে।

 

 

শিশু সাহিত্যিক ফারুক হোসেন একটি উপন্যাস লিখেছেন এ সংখ্যায়। স্মৃতি গল্পে রেজাউল করিম খোকন তার ছোটবেলার ট্রেনে ছড়ার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করেছেন। সেই সময়ের সাথে বর্তমান সময়ে পদ্মাসেতুতে ট্রেন চালুর বিষয়ও উল্লেখ করেছেন।

 

সংখাটিতে ছোটদের জন্য বেশ চমৎকার কবিতা লিখেছেন কবি নাসির আহমেদ, ফারুক নওয়াজ, আনজির লিটন ভাই। উপন্যাস লিখেছেন কাইজার চৌধুরী, ফারুক হোসেন ও আমীরুল ইসলাম। গল্প লিখেছেন ফরিদুর রেজা সাগর, রোকেয়া খাতুন রুবী, জাব্বার আল নাঈম। রূপ কথার গল্প লিখেছেন কবি ও শিশু সাহিত্যিক হাসান হাফিজসহ আরও অনেকে।

 

সবশেষে এমন সুন্দর গোছাল একটা সংখ্যা পাঠকদের উপহার দেয়ার জন্য সম্পাদককে সাধুবাধ দিতেই হবে। সংখ্যাটির দাম ২০০ টাকা।