১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম রেলস্টেশন যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন অপরাধীদের জন্য এখন যেন নিরাপদ স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। চুরি, ছিনতাই, মাদক কারবার, পতিতাবৃত্তি— এমন কোনো অপরাধ নেই, যা এখানে ঘটে না। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর স্টেশন ও আশপাশের এলাকাজুড়ে তৈরি হয় আতঙ্কের পরিবেশ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশন এলাকায় প্রকাশ্যেই চলে মাদক কেনাবেচা। পতিতাবৃত্তির জন্য দালালরা ঘুরে বেড়ায় স্টেশন চত্বরে। পুরাতন স্টেশন থেকে নারীদের পাঠানো হয় আশপাশের হোটেলগুলোতে। আর এসব ঘটনার বেশির ভাগই ঘটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনেই।

নগরের কোতোয়ালী থানার ওসি মো. আব্দুল করিম বলেন, “রেলস্টেশন এলাকা থেকে অপরাধীদের অবস্থান ভেঙে দিতে পারলে অপরাধ অনেকটাই কমে যাবে।” তিনি জানান, বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা স্টেশনকেন্দ্রিকভাবে নানা অপরাধ সংঘটিত করছে।

রেলওয়ে পুলিশ সুপার শাকিলা সুলতানা বলেন, “স্টেশন অপরাধমুক্ত করতে অভিযান চলছে। পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে আমরা লিফলেট বিতরণ ও মতবিনিময় সভা করছি।”

তবে যাত্রী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন কোনো না কোনো অপরাধ সংঘটিত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে থানায় মামলা হয় না। অভিযোগ করলেও প্রতিকার পান না ভুক্তভোগীরা।

গত ১০ ও ১৫ জুলাই রাতে পুরাতন স্টেশন এলাকায় ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্টেশনের প্রবেশ পথ, গ্রামীণ মাঠ, ফুটওভার ব্রিজ— সবখানেই ঘুরে বেড়াচ্ছে ছিনতাইকারী, মাদক কারবারি ও দেহব্যবসায় জড়িত দালালরা।

স্টেশনের আশপাশে রয়েছে মাদকসেবীদের অবাধ আনাগোনা। গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল— সব ধরনের মাদকই এখানে সহজলভ্য। পুরাতন স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় সাহেদা নামে এক নারীর নেতৃত্বে চলে মাদক বেচাকেনা, যার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

অন্যদিকে, স্টেশন এলাকায় প্রতিদিন বসে জুয়ার আসর। গ্রামীণ মাঠ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যারাকের সামনে চলে অনলাইন জুয়া ও মদের আড্ডা।

এ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

স্থানীয়রা মনে করেন, পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে স্টেশন এলাকায় এ অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্য চলছে।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, ভরি ছাড়াল দুই লাখ ২৭ হাজার

চট্টগ্রাম রেলস্টেশন যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য

আপডেট সময় : ০৬:০৩:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন অপরাধীদের জন্য এখন যেন নিরাপদ স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। চুরি, ছিনতাই, মাদক কারবার, পতিতাবৃত্তি— এমন কোনো অপরাধ নেই, যা এখানে ঘটে না। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর স্টেশন ও আশপাশের এলাকাজুড়ে তৈরি হয় আতঙ্কের পরিবেশ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশন এলাকায় প্রকাশ্যেই চলে মাদক কেনাবেচা। পতিতাবৃত্তির জন্য দালালরা ঘুরে বেড়ায় স্টেশন চত্বরে। পুরাতন স্টেশন থেকে নারীদের পাঠানো হয় আশপাশের হোটেলগুলোতে। আর এসব ঘটনার বেশির ভাগই ঘটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনেই।

নগরের কোতোয়ালী থানার ওসি মো. আব্দুল করিম বলেন, “রেলস্টেশন এলাকা থেকে অপরাধীদের অবস্থান ভেঙে দিতে পারলে অপরাধ অনেকটাই কমে যাবে।” তিনি জানান, বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা স্টেশনকেন্দ্রিকভাবে নানা অপরাধ সংঘটিত করছে।

রেলওয়ে পুলিশ সুপার শাকিলা সুলতানা বলেন, “স্টেশন অপরাধমুক্ত করতে অভিযান চলছে। পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে আমরা লিফলেট বিতরণ ও মতবিনিময় সভা করছি।”

তবে যাত্রী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন কোনো না কোনো অপরাধ সংঘটিত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে থানায় মামলা হয় না। অভিযোগ করলেও প্রতিকার পান না ভুক্তভোগীরা।

গত ১০ ও ১৫ জুলাই রাতে পুরাতন স্টেশন এলাকায় ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের মোবাইল ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্টেশনের প্রবেশ পথ, গ্রামীণ মাঠ, ফুটওভার ব্রিজ— সবখানেই ঘুরে বেড়াচ্ছে ছিনতাইকারী, মাদক কারবারি ও দেহব্যবসায় জড়িত দালালরা।

স্টেশনের আশপাশে রয়েছে মাদকসেবীদের অবাধ আনাগোনা। গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল— সব ধরনের মাদকই এখানে সহজলভ্য। পুরাতন স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় সাহেদা নামে এক নারীর নেতৃত্বে চলে মাদক বেচাকেনা, যার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

অন্যদিকে, স্টেশন এলাকায় প্রতিদিন বসে জুয়ার আসর। গ্রামীণ মাঠ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যারাকের সামনে চলে অনলাইন জুয়া ও মদের আড্ডা।

এ নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও রেলওয়ে থানার ওসি এস এম শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

স্থানীয়রা মনে করেন, পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের যোগসাজশে স্টেশন এলাকায় এ অপরাধ চক্রের দৌরাত্ম্য চলছে।

এমআর/সবা