১১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খাইবার পাখতুনখোয়ায় পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর বোমা হামলায় ৩০ জন নিহত

পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বোমা হামলায় খাইবার পখতুনখোয়া প্রদেশের তিরাহ ভ্যালির মাত্রে দারা গ্রামে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও আছে। স্থানীয় সময় রোববার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো গ্রামটির ওপর টানা ৮টি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করে। এর ফলে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ঘটে। নিহত সবাই সাধারণ নাগরিক। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বহু মানুষ আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের সঠিক অবস্থা জানা যায়নি। হামলার পর প্রকাশিত ভয়াবহ ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে- শিশুসহ নিহতদের মৃতদেহ চারপাশে ছড়িয়ে আছে। উদ্ধারকারী দল ধ্বংসস্তূপের নিচে মৃতদেহ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

খাইবার পখতুনখোয়ায় অতীতে বহু সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানে অসংখ্য বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছেন। এ বছরের জুনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলে, এ প্রদেশে বারবার চালানো ড্রোন হামলা পাকিস্তানের বেসামরিক জনগণের জীবনের প্রতি গভীর অবহেলার ইঙ্গিত দেয়। অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়ার ডেপুটি রিজিওনাল ডিরেক্টর ইসাবেল লাসে বলেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ খাইবার পখতুনখোয়ার বেসামরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

গত শুক্রবারের ড্রোন হামলায় এক শিশু নিহত হয়েছে। মার্চ থেকে এ ধরনের ভয়াবহ হামলা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। খাইবার পখতুনখোয়া পুলিশ জানায়, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রদেশটিতে মোট ৬০৫টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় কমপক্ষে ১৩৮ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৭৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। শুধু আগস্ট মাসেই ১২৯টি হামলা হয়। সেখানে পাকিস্তান সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী ফেডারেল কনস্ট্যাবুলারির ৬ সদস্য নিহত হন।

সম্প্রতি ভারতের চালানো অপারেশন সিঁদুর অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) ভেতরে নয়টি বড় সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। এর পর জৈশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) ও হিজবুল মুজাহিদিন (এইচএম)-এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো নতুন ঘাঁটি স্থাপন করছে খাইবার পখতুনখোয়ার গভীর এলাকায়, আফগান সীমান্তের কাছাকাছি। প্রদেশটির দুর্গম পাহাড়ি ভৌগোলিক অবস্থান এবং আফগানিস্তানের সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এসব এলাকায় সহজেই লুকানো সম্ভব। এখনও বহু গোপন আস্তানা রয়ে গেছে যেগুলো গড়ে উঠেছিল সোভিয়েতবিরোধী আফগান যুদ্ধে (১৯৮০-এর দশক) এবং ৯/১১–এর পর আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের সময়।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

খাইবার পাখতুনখোয়ায় পাকিস্তানি বিমান বাহিনীর বোমা হামলায় ৩০ জন নিহত

আপডেট সময় : ০৮:৩০:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বোমা হামলায় খাইবার পখতুনখোয়া প্রদেশের তিরাহ ভ্যালির মাত্রে দারা গ্রামে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও আছে। স্থানীয় সময় রোববার দিবাগত রাত প্রায় ২টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো গ্রামটির ওপর টানা ৮টি এলএস-৬ বোমা নিক্ষেপ করে। এর ফলে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ঘটে। নিহত সবাই সাধারণ নাগরিক। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বহু মানুষ আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের সঠিক অবস্থা জানা যায়নি। হামলার পর প্রকাশিত ভয়াবহ ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে- শিশুসহ নিহতদের মৃতদেহ চারপাশে ছড়িয়ে আছে। উদ্ধারকারী দল ধ্বংসস্তূপের নিচে মৃতদেহ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

খাইবার পখতুনখোয়ায় অতীতে বহু সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। সেখানে অসংখ্য বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছেন। এ বছরের জুনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে বলে, এ প্রদেশে বারবার চালানো ড্রোন হামলা পাকিস্তানের বেসামরিক জনগণের জীবনের প্রতি গভীর অবহেলার ইঙ্গিত দেয়। অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়ার ডেপুটি রিজিওনাল ডিরেক্টর ইসাবেল লাসে বলেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ খাইবার পখতুনখোয়ার বেসামরিকদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

গত শুক্রবারের ড্রোন হামলায় এক শিশু নিহত হয়েছে। মার্চ থেকে এ ধরনের ভয়াবহ হামলা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। খাইবার পখতুনখোয়া পুলিশ জানায়, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রদেশটিতে মোট ৬০৫টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় কমপক্ষে ১৩৮ জন বেসামরিক নাগরিক ও ৭৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। শুধু আগস্ট মাসেই ১২৯টি হামলা হয়। সেখানে পাকিস্তান সেনা ও আধাসামরিক বাহিনী ফেডারেল কনস্ট্যাবুলারির ৬ সদস্য নিহত হন।

সম্প্রতি ভারতের চালানো অপারেশন সিঁদুর অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) ভেতরে নয়টি বড় সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। এর পর জৈশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) ও হিজবুল মুজাহিদিন (এইচএম)-এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলো নতুন ঘাঁটি স্থাপন করছে খাইবার পখতুনখোয়ার গভীর এলাকায়, আফগান সীমান্তের কাছাকাছি। প্রদেশটির দুর্গম পাহাড়ি ভৌগোলিক অবস্থান এবং আফগানিস্তানের সীমান্ত ঘেঁষা হওয়ায় এসব এলাকায় সহজেই লুকানো সম্ভব। এখনও বহু গোপন আস্তানা রয়ে গেছে যেগুলো গড়ে উঠেছিল সোভিয়েতবিরোধী আফগান যুদ্ধে (১৯৮০-এর দশক) এবং ৯/১১–এর পর আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের সময়।

এমআর/সবা