- কেজিতে বেড়েছে ৩০-৮০ টাকা
- শ্রেণিভেদে বিদেশি আপেল কেজিপ্রতি ৩৫০-৪৫০ টাকা
- শ্রেণিভেদে বিদেশি আঙুর কেজিপ্রতি ৩৮০-৪৮০ টাকা
- আকারভেদে আনারের দাম কেজিপ্রতি ৪৫০-৬০০ টাকা
- ভরা মৌসুমেও নেপালি-দেশি সাগর কলা ডজনপ্রতি ১২০-১৮০ টাকা
সরবরাহ সংকটের অজুহাতে রাজধানীতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশি-বিদেশি সবধরনের ফলের দাম। পাইকারি থেকে খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি ফল আগের তুলনায় ৩০ থেকে ৮০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। শ্রেণিভেদে বিদেশি আপেল কেজিপ্রতি বিক্রি করা হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। বিদেশি আঙুর কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪৮০ টাকা দরে। আকারভেদে আনার বিক্রি করা হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। সাগর কলার ভরা মৌসুমেও উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে নেপালি ও দেশিয় সাগর কলা। ডজনপ্রতি এর দাম রাখা হচ্ছে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা। পেঁপের ভরা মৌসুমেও আকারভেদে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১২০ টাকা দরে। আমড়া কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা দরে। আকারভেদে জামবুড়া প্রতিপিস ৩০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে কদবেল হালিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির ফল সংগ্রহে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ফল ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুমী বায়ু আর বৃষ্টির প্রভাবে উৎপাদন ও সরবরাহ সংকটের কারণে পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে বিভিন্ন ফলের দাম বেশি পড়ছে। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে পৌঁছাতে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ যোগ করতেই কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি পড়ে যাচ্ছে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে আসবে।
রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার গালা আপেল বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০০ টাকা। একইভাবে চায়না গালা আপেল বেড়ে হয়েছে ৩৫০ টাকা। সাধারণ সাদা আপেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০ টাকা কেজিতে। অস্ট্রেলিয়ান আপেল কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। আঙুরের বাজারেও বেড়েছে চাপ। কালো আঙুর কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেশি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে সাদা আঙুরও। লাল আঙুরের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮০ টাকা। আকারভেদে আনারের দাম কেজিতে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে, যা ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেশি। এছাড়া কমলা কেজিপ্রতি ৩৫০ টাকা, নাসপাতি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাল্টার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে, এখনও প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সাগর কলার ভরা মৌসুমেও উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে নেপালি ও দেশিয় সাগর কলা। ডজনপ্রতি এর দাম রাখা হচ্ছে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা। পেঁপের ভরা মৌসুমেও আকারভেদে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ১২০ টাকা দরে। আমড়া কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা দরে। আকারভেদে জামবুড়া প্রতিপিস ৩০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে কদবেল হালিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে।
ভোক্তারা জানান, পছন্দের ফল কিনতে গেলে পকেট ফাঁকা হয়ে যায়। সরকারের তদারকির অভাবে এখনও গ্রামের কৃষকপর্যায় থেকে পিস হিসাবে কিনে আনা তরমুজ ঢাকায় বিক্রি করা হচ্ছে কেজিদরে। বিক্রেতারা আকারভেদে কেজিপ্রতি তরমুজের দাম হাঁকছেন ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। একটি ছোট আকৃতির তরমুজের ওজনও প্রায় ৫ কেজি। মৌসুমীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফল কিনতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন। সব ফলই এখন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। জরুরি প্রয়োজনে শুধু রোগীর জন্য ফল কেনা হয়। তাও আবার অর্থনৈতিক বিবেচনায় অল্প অল্প করে ফল কিনেত হচ্ছে। আগে যেখানে ২ থেকে ৫ কেজি করে ফল কেনা হতো, এখন দাম বাড়ায় তা চাহিদার তুলনায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে।, যেমন ধরেন- আঙুর ২৫০ গ্রাম, আনার, নাসপতি, আপেলসহ অন্যান্য ফল আধাকেজির উপরে কেনার সাহস করেন না ভোক্তারা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পূজার সময় স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে পাইকারি বাজারে, আর সেখান থেকেই খুচরায় দাম বেড়েছে। তবে তারা আশা করছেন, আগামী সপ্তাহেই দাম আবার স্বাভাবিক হবে।
ফল ব্যবসায়ী মো. আলাউদ্দিন বলেন, তারা খুব বেশি লাভ করছেন না। মৌসুমী বায়ু আর বৃষ্টির প্রভাবে উৎপাদন ও সরবরাহ কম থাকার কারণে পাইকারি আড়তে দাম বেশি পড়ছে। এছাড়া পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে পৌঁছাতে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ যোগ করতেই কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি রাখতে হয়।
একই কথা জানান নিউমার্কেটের ফল ব্যবসায়ী আমজাত হোসেন, পল্টনের ফল বিক্রেতা নাসির উদ্দিন ও মতিঝিলের ফল বিক্রেতা মনির হোসেন। তারা বলেন, প্রতি বছর পূজার সময় ভারত থেকে পণ্যবাহী ট্রাক আসে না। ফলে সরবরাহ কমে যায় আর দাম বেড়ে যায়। তবে পূজা শেষ হওয়ায় আগামী সপ্তাহ থেকে দাম কমে আসবে বলেও জানান খুচরা পর্যায়ের ফল ব্যবসায়ীরা।


























