০৬:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীদের বিচার হওয়ার যত ঘটনা

বাঁ থেকে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি, থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা ও ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট।

ক্ষমতা হারানোর পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীদের বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা আছে। গত মাসেই কারাভোগ করেছেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার তালিকায় আরও আছেন, থাইল্যান্ডের ইংলাক সিনাওয়াত্রা, মালয়েশিয়ার নাজিব রাজাক, ইসরায়েলের এহুদ ওলমার্ট।

নিকোলাস সারকোজি, ফ্রান্স
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিকোলাস সারকোজিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে একটি চুক্তির মাধ্যমে লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছে থেকে অর্থ নেওয়ার আভিযোগ আছে। এ মামলায় গত ২১ অক্টোবর কারাগারে পাঠানো হয় সারকোজিকে। কিছুদিন পরই তিনি জামিন পান। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সারকোজি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

ইংলাক সিনাওয়াত্রা, থাইল্যান্ড
বিবিসির তথ্য, ক্ষমতায় থাকাকালেই চালে ভর্তুকির একটি দুর্নীতি মামলার অভিযোগ আনা হয়েছিল থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে তাঁর সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী। ২০১৭ সালের অগাস্টে তিনি গোপনে দেশ ছাড়েন। পরে তাঁর অনুপস্থিতিতে পাঁচ বছরের জেল দেওয়া হয়।

এহুদ ওলমার্ট, ইসরায়েল
প্রতারণার অভিযোগে দুই বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে তিনি ছাড়া পান। রাজনীতি থেকে বিদায় নিলেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্পর্কে একটি মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন ওলমার্ট।

বাঁ থেকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাক গান হে

 

নেতানিয়াহু নিজেও বর্তমানে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের আওতায় আছেন। আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, এই মামলায় নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দিতে সম্প্রতি দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নাজিব রাজাক, মালয়েশিয়া
দুর্নীতির মামলায় ২০২০ সালে ১২ বছরের কারাদণ্ড হয় নাজিব রাজাকের। বিবিসির তথ্য, উচ্চ আদালতে আপিল খারিজের পর ২০২২ সালের আগস্টে কারাগারে পাঠানো হয় এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। যদিও সে সময় অভিযোগ অস্বীকার করে রাজাক বলেছিলেন, আর্থিক উপদেষ্টারা তাঁকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন।

জ্যাকব জুমা, দক্ষিণ আফ্রিকা
দুর্নীতির মামলার তদন্তে সহযোগিতা না করায় সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। গণবিক্ষোভের পর তিনি নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে আরও দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল জুমা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতায় ছিলেন।

পাক গান হে, দক্ষিণ কোরিয়া
তিনি ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট (২০১৩-১৭)। বিবিসির তথ্য, দুর্নীতির কেলেঙ্কারির কারণে পাক গান প্রথমে ক্ষমতাচ্যুত ও পরে জেলে যান। তাঁর সঙ্গে স্যামসাং গ্রুপের উত্তরাধিকারীর সম্পৃক্ততা ও চাঁদা দাবির অভিযোগ ছিল। ২০১৭ সালে তিনি অভিসংশিত হন। ২০২১ সালে পাক গান হে’কে ক্ষমা করে দেন প্রেসিডেন্ট মুন জা ইন।

ক্ষমতা হারানোর পর বিচারের মুখোমুখি হওয়া প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীদের তালিকায় আরও আছেন- ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনি, ব্রাজিলের লুলা দা সিলভা (বর্তমানে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায়) ও বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জিনাইন আনেজ।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীদের বিচার হওয়ার যত ঘটনা

আপডেট সময় : ০৫:৩৯:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

ক্ষমতা হারানোর পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীদের বিচারের মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা আছে। গত মাসেই কারাভোগ করেছেন ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার তালিকায় আরও আছেন, থাইল্যান্ডের ইংলাক সিনাওয়াত্রা, মালয়েশিয়ার নাজিব রাজাক, ইসরায়েলের এহুদ ওলমার্ট।

নিকোলাস সারকোজি, ফ্রান্স
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ সেপ্টেম্বর নিকোলাস সারকোজিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন দেশটির আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে একটি চুক্তির মাধ্যমে লিবিয়ার নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির কাছে থেকে অর্থ নেওয়ার আভিযোগ আছে। এ মামলায় গত ২১ অক্টোবর কারাগারে পাঠানো হয় সারকোজিকে। কিছুদিন পরই তিনি জামিন পান। ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সারকোজি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

ইংলাক সিনাওয়াত্রা, থাইল্যান্ড
বিবিসির তথ্য, ক্ষমতায় থাকাকালেই চালে ভর্তুকির একটি দুর্নীতি মামলার অভিযোগ আনা হয়েছিল থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে তাঁর সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী। ২০১৭ সালের অগাস্টে তিনি গোপনে দেশ ছাড়েন। পরে তাঁর অনুপস্থিতিতে পাঁচ বছরের জেল দেওয়া হয়।

এহুদ ওলমার্ট, ইসরায়েল
প্রতারণার অভিযোগে দুই বছর ৩ মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টের। ২০১৭ সালের শুরুর দিকে তিনি ছাড়া পান। রাজনীতি থেকে বিদায় নিলেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্পর্কে একটি মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন ওলমার্ট।

বাঁ থেকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাক গান হে

 

নেতানিয়াহু নিজেও বর্তমানে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগে বিচারের আওতায় আছেন। আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, এই মামলায় নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দিতে সম্প্রতি দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নাজিব রাজাক, মালয়েশিয়া
দুর্নীতির মামলায় ২০২০ সালে ১২ বছরের কারাদণ্ড হয় নাজিব রাজাকের। বিবিসির তথ্য, উচ্চ আদালতে আপিল খারিজের পর ২০২২ সালের আগস্টে কারাগারে পাঠানো হয় এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। যদিও সে সময় অভিযোগ অস্বীকার করে রাজাক বলেছিলেন, আর্থিক উপদেষ্টারা তাঁকে ভুল পথে পরিচালিত করেছেন।

জ্যাকব জুমা, দক্ষিণ আফ্রিকা
দুর্নীতির মামলার তদন্তে সহযোগিতা না করায় সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। গণবিক্ষোভের পর তিনি নিজেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে আরও দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল জুমা দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতায় ছিলেন।

পাক গান হে, দক্ষিণ কোরিয়া
তিনি ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট (২০১৩-১৭)। বিবিসির তথ্য, দুর্নীতির কেলেঙ্কারির কারণে পাক গান প্রথমে ক্ষমতাচ্যুত ও পরে জেলে যান। তাঁর সঙ্গে স্যামসাং গ্রুপের উত্তরাধিকারীর সম্পৃক্ততা ও চাঁদা দাবির অভিযোগ ছিল। ২০১৭ সালে তিনি অভিসংশিত হন। ২০২১ সালে পাক গান হে’কে ক্ষমা করে দেন প্রেসিডেন্ট মুন জা ইন।

ক্ষমতা হারানোর পর বিচারের মুখোমুখি হওয়া প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীদের তালিকায় আরও আছেন- ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বারলুসকোনি, ব্রাজিলের লুলা দা সিলভা (বর্তমানে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায়) ও বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জিনাইন আনেজ।

এমআর/সবা