মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নাচ, গান ও সংস্কৃতিক্রমে খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ১২৬তম বর্ষবিদায় ও ১২৭তম বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উদযাপন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে খাসিয়া জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙালি ও দেশী-বিদেশী পর্যটকরাও অংশগ্রহণ করেন।
এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় কমলগঞ্জের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে। সিলেট অঞ্চলের প্রায় অর্ধশত খাসিয়া পুঞ্জির প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে পুঞ্জি প্রধানদের পাগরী পরিয়ে সম্মাননা দেওয়া হয় এবং অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানানো হয়।

সেং কুটস্নেম বা বর্ষবিদায় খাসিয়াদের একটি সার্বজনীন উৎসব। প্রাচীন খাসিয়া সমাজে দেবতার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশের মাধ্যমে এ উৎসব পালন করা হতো। অনুষ্ঠানস্থলে বাঁশের খুঁটির ওপর নারিকেল পাতার ছাউনী তৈরি করে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সভাপতিত্ব করেন মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির প্রধান জিডিসন প্রধান সুচিয়াং। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও ধানের শীষের প্রার্থী আলহাজ্ব মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী হাজী মুজিব, এনসিপি প্রার্থী প্রীতম দাশ প্রমুখ।

উৎসবে খাসিয়ারা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে আদি পাহাড়ি নৃত্য ও গান পরিবেশন করেন। জুম চাষ ও জীবন-জীবিকার বিভিন্ন পদ্ধতিও নৃত্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। দিনব্যাপী মাছ শিকার, ঐতিহ্যগত খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার চেষ্টা করা হয়।
মাগুরছড়া পুঞ্জিতে বসানো মেলায় খাসিয়া জনগোষ্ঠীর লোকেরা ঐতিহ্যবাহী পণ্য যেমন পোশাক, বাঁশ-বেতের জিনিসপত্র, পান, তীর ও ধনুকের স্টল সাজিয়ে রাখেন। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খাসিয়া তরুণ প্রজন্মকে তাদের প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করানো হয়।

বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের কো-চেয়ারম্যান জিডিসন প্রধান সুচিয়াং বলেন, সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও আদিবাসীদের অধিকার বাস্তবায়নের পাশাপাশি খাসিয়া সংস্কৃতির সৌরভ বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়াই এ উৎসবের মূল উদ্দেশ্য।
এমআর/সবা























