এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলতে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। ভারতের ক্লাব ওড়িশা এফসি তাদের প্রতিপক্ষ। আজ রাত আটটায় ভুবেনশ^রের কালিঙ্গা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। এ ম্যাচে ড্র করলেই গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে আঞ্চলিক পর্বের সেমিফাইনালে উঠবে বসুন্ধরা কিংস।
‘ডি’ গ্রæপে বসুন্ধরা কিংস ৫ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ ম্যাচে কিংসের প্রতিপক্ষ ওড়িশা ঠিক তাদের নিচে। কিংসের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তারা। ৫ ম্যাচ থেকে তাদের পয়েন্ট ৯। ফলে এ ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস এক পয়েন্ট পেলেই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে। অন্যদিকে ওড়িশার সামনে জয় ভিন্ন কোনো পথ নেই।
ঢাকা আবাহনী প্রথম বাংলাদেশি ক্লাব, যারা এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল প্লে অফের সেমিফাইনাল খেলেছিল। ২০১৯ সালের ঘটনা এটি। উত্তর কোরিয়ার ক্লাব ছিল তাদের প্রতিপক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই আবাহনী এ বাধা পার হতে পারেনি। অবশ্য হোম ম্যাচ দারুণ এক জয়ে দেশবাসীকে আশাবাদী করে তুলেছিল আবাহনী। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে আবাহনী ৪-২ গোলে জয় পেলেও অ্যাওয়ে ম্যাচে ০-২ গোলে হেরে যাওয়ায় গোল গড়ে বাদ পড়ে গিয়েছিল আবাহনী।
বসুন্ধরা কিংস ও ওড়িশার মধ্যকার প্রথম লেগের খেলায় বসুন্ধরা জয় পেয়েছিল। কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথমে গোল হজম করলেও ৩-২ গোলে ওড়িশাকে হারিয়েছিল তারা। ওড়িশার আক্রমণভাগ বেশ শক্তিশালী। দক্ষতার পরিচয় দিয়ে তাদের আক্রমণভাগে একের পর এক গোল করেছে। গ্রæপে তারা সবচেয়ে বেশি গোল করেছে, ১৬টি। বসুন্ধরার গোলের সংখ্যা ১০। আবার বসুন্ধরা রক্ষণভাগ খুব একটা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি। বড় ধরনের আক্রমণে তারা তাল মেলাতে পারছে না। তাইতো তাদের রক্ষণভাগকে এলেমেলো করে প্রতিপক্ষরা ৯ গোল করেছে।
বসুন্ধরা কিংসের জন্য আজকের ম্যাচটা একটু কঠিনই হতে পারে। কেননা ওড়িশা খুবই শক্তিশালী দল। তারা কতটা শক্তিশালী তা ভালোভাবেই টের পেয়েছে মোহনবাগান ক্লাব। একটা বা দুটো নয়, গত ২৭ নভেম্বর সল্ট লেক স্টেডিয়ামে মোহনবাগানকে নিয়ে তারা ছেলেখেলা করেছে। ৫-২ গোলে জয় পেয়েছিল ওড়িশা। ফলে বসুন্ধরা কিংসের রক্ষণভাগ আজ অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
বসুন্ধরা কিংসকে অবশ্য এতটা চিন্তায় থাকতে হতো না। যে মাজিয়া ক্লাব গ্রæপ পর্বে মাত্র একটা ম্যাচে জয় পেয়েছে সেই মাজিয়ার কাছে হার দিয়ে বসুন্ধরা এএফসি কাপের মিশন শুরু করেছিল। অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-৩ গোলে হেরেছিল বসুন্ধরা। মাজিয়া আর কারো বিপক্ষে জয় পায়নি। এমনকি ড্রও করতে পারেনি। বাকি চার ম্যাচের সব কটিতেই হেরেছে তারা। হোম ম্যাচে সেই মাজিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পেয়েছিল বসুন্ধরা। অনেকটা নাটকীয় জয়। শুরুর মাত্র দশম মিনিটে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়েছিল বসুন্ধরা। হারটাও প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ৮০ ও ৮৮ মিনিটের দুই গোল বসুন্ধরা শুধু জয় এনে দেয় তা নয়, দলকে গ্রæপের শীর্ষে পৌঁছে দেয়। গ্রæপের সবচেয়ে দুর্বল দলের বিপক্ষে সেদিন না হারলে আজ বসুন্ধরাকে এতটা দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো না।
হার দিয়ে মিশন শুরু করলেও ওড়িশাকে হারিয়ে বসুন্ধরা জয়ের ধারা ফিরে আসে। কলকাতায় মোহনবাগানের সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে। নিজেদের মাঠে মোহনবাগানকে ২-১ গোলে হারায়। মোহনবাগানের বিপক্ষে এটাই ছিল তাদের প্রথম জয়।
কিংসের নিয়মিত অধিনায়ক ব্রাজিলিয়ান রবসন রবিনহো ইনজুরির জন্য এএফসি কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচ ও স্বাধীনতা কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেননি। তবে ভালো খবর হচ্ছে ওড়িশার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সব খেলোয়াড় সুস্থ রয়েছে এবং নেই কোনো কার্ড জটিলতা।


























