পাঠককে গল্প দিয়ে টেনে আনেন নিজের কাছে, শব্দের পরতে পরতে বলেন সময়ের অজানা গল্প। নানান পটপরিবর্তনে এ তুলে আনেন ভিন্নমাত্রিক এক উপাখ্যান। সামাজিক চিত্র আর নানান সংকটের মধ্যে দিয়ে ভ্রমণ করাতে চান পাঠককে। ‘জনতার জহুরগণি’রা উঠে আসে পাঠকের নজরে, ভালোবাসায়। এবারের বইমেলায় কথাসাহিত্যিক তৌকিব তৌফিকের আসছে ‘ঘর কিংবা ঘোর’। এ যেন এক ঘোর লাগা জীবনের উপাখ্যান। আবারও নজর রাখুন চব্বিশের বইমেলায়।
“নসর আলি চোখের জল মুছে কিছুটা স্থির হয়ে বললেন, ‘আমার অভাব ভালোবাসার, আমার অভাব আন্তরিকতার। টাকা পয়সা, থাকা খাওয়া এসব দিলে খাই না দিলে সয়ে যাই। এ নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই। জীবনে একটা সময় আসে যখন মানুষের সব থেকেও কিছুই থাকে না। এসব নিয়ে মন খারাপ করি না। কিন্তু ছেলেটা কেমন জানি হয়ে গেছে। চলতে ফিরতে খারাপ আচরণ করে, গাল মন্দ করে। ভালোভাবে কবে আব্বা ডেকেছে তা হয়তো তার মনেই নেই। আহারে ছেলে আমার, কী সুন্দর করে আব্বা করে আমাকে ডাকত। এখন আর আব্বা ডাকে না’।
মশিউর রহমান চুপ করে রইলেন। এসবের উত্তর তার কাছে নেই, কিছু কথার কোনো প্রত্যুত্তর থাকে না। স্বান্তনার ভাষাও নেই। শুনে যাওয়াটাই শ্রেয়।
নসর আলি আবার বললেন, তবে এখন কষ্টটা অনেক কম পাই। ‘আশিকের মা বেঁচে থাকাকালীন বেশি কষ্ট পেতাম। বেচারি সন্তানটাকে কত আদর যত্নে বড় করেছে কিন্তু দিন দিন খারাপ আচরণের বুলি সহ্য করতে না পেরে ঘুমের মধ্যেই দুনিয়া ছেড়েছে। সে দুনিয়া ছেড়ে গিয়ে মুক্তিই পেয়েছে। আমি নিজের কষ্টের চেয়ে তার কষ্টগুলো দেখে বেশি আঘাত পেতাম। কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারিনি। যতবারই প্রতিবাদ করেছিলাম, ততবারই ছেলে আমার দিকে তেড়ে এসেছিল। আমি পরাস্ত হয়েছি। ছেলের হাতে মার খাওয়াকে ভয় পেয়েছি। যাক আশিকের মা এখন শান্তিতে আছে, আমারও অনেক কষ্ট কমে গেছে। আমার ছেলেটাও ভালো থাকুক, আমার খোকা আশিক খুব ভাল থাকুক’, বলতে বলতে চোখ মুছলেন নসর আলী।”
উপন্যাস: ঘর কিংবা ঘোর
প্রকাশনা: অন্যপ্রকাশ
প্রচ্ছদ: আনিসুজ্জামান সোহেল
বইমেলা: ২০২৪


























