নির্ধারিত থাকছে না গরুর গোশতের দাম। নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগে গোশত বিক্রেতা ও খামারিরা মিলে গরুর গোশতের দাম নির্ধারণ করেন প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা। এখন আবার নির্ধারিত দামে গরুর গোশত বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দাম বেঁধে দিয়ে গোশত বিক্রি করতে গেলে অনেকের লোকসান হচ্ছে বলে দাবি তাদের। এখন থেকে বাজারের চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে গোশতের দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচনের ঠিক এক মাস আগে গোশত বিক্রেতা ও খামারিরা মিলে গরুর গোশতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ দামে কিনলে ক্রেতা প্রতি কেজি গরুর গোশতে ৭৫০ গ্রাম গোশত, ২০০ গ্রাম হাড় ও ৫০ গ্রাম চর্বি পেতেন। নির্বাচনের দিন (৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত বাজারে এ দাম কার্যকর ছিল। এখন সেটা থাকছে না।
সম্প্রতি গরুর গোশতের দাম নিয়ে ব্যবসায়ীরা সভা করেছেন। এ বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মুর্তজা বলেন, এখন থেকে গরুর গোশতের কোনো নির্ধারিত দাম থাকবে না। কারণ, নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করতে গিয়ে অনেক ব্যবসায়ী লোকসানের শিকার হচ্ছেন। বাজারের চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে মাংসের দাম নির্ধারিত হবে। তবে ক্রেতাদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে মাংসের দাম যতটুকু সম্ভব কমিয়ে রাখা হবে বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গোশত ব্যবসায়ীদের এ সিদ্ধান্তের আগেই বাজারে গরুর মাংসের দাম এক দফা বেড়েছে। এখন অধিকাংশ জায়গায় প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। কোথাও কোথাও ৬৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও তাতে মাংসের মানের ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হচ্ছে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত এক মাসে গরুর গোশতের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আবার একটানা ৯ বছর বৃদ্ধির পাওয়ার পর দেশে প্রথমবারের মতো মাংসের উৎপাদনও কমেছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) ৫ লাখ ৫৫ হাজার মেটট্রিক টন গোশত কম উৎপাদিত হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থবছর থেকে দেশে প্রতিবছর গোশতের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছিল। গত অর্থবছরই প্রথম উৎপাদন কমেছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে গোশতের উৎপাদন ছিল ৯২ লাখ ৬৫ হাজার মেটট্রিক টন। গত বছর তা কমে দাঁড়ায় ৮৭ লাখ ১০ হাজার মেটট্রিক টনে। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগিসহ সব ধরনের মেটট্রিক উৎপাদনই কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ সামনে আসছে পবিত্র শবে বরাত ও রমজান মাস। সাধারণত এ সময়ে বাজারে মাংসের দাম একটু বাড়তি থাকে। ঠিক এ সময়ে ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের নির্ধারিত দর থেকে সরে এলেন ভোক্তাদের পকেট কাটার জন্য। সরকারের উচিত একটি দাম নির্ধারণ করে দেওয়া।
স/মিফা

























