ইসরাইল ও হামাসের মধ্যেকার যুদ্ধ এরইমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। ফলে স্থানীয় ও বৈশ্বিক শক্তিগুলোর মধ্যে একটি সংঘর্ষ দিন দিন অনিবার্য হয়ে উঠছে। মধ্যপ্রাচ্যে এখন যে ধরনের লড়াই দেখা যাচ্ছে তা অনেকটা ছোট ধরনের হামলা ও এর পালটা হামলা। ইরান সমর্থিত যোদ্ধা সংগঠনগুলো ও মার্কিন সেনাবাহিনীর মধ্যে এসব লড়াই চলছে। এছাড়া ইসরাইলকে টার্গেট করছে ইরানপন্থি বাহিনীগুলো। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি সরাসরি যুদ্ধও দিন দিন ঘনিয়ে আসছে। এতদিন পর্যন্ত ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি একে অপরের মুখোমুখি যুদ্ধ এড়িয়ে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাকে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলিকে আক্রমণ করেছে। অপরদিকে ইরান-সম্পর্কিত গোষ্ঠীগুলি ইরাক এবং সিরিয়ায় মার্কিন ঘাটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তেহরানও ইরাক, সিরিয়া ও পাকিস্তানে ইরানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে শায়েস্তা করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সম্প্রতি ইরানে পালটা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানও। ইরান দীর্ঘদিন ধরেই তার চারদিকে মার্কিন বাহিনীর ঘাঁটি স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছে।
ইরান মধ্যপ্রাচ্যকে নিজের উঠোন বলে মনে করে। গত কয়েক দশক ধরে ইসলামপন্থি, পশ্চিমা-বিরোধী এবং ইসরায়েল-বিরোধী বহু বাহিনী গড়ে তুলেছে ইরান। দেশটি এই পুরো নেটওয়ার্ক তৈরি করতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। তারাই এসব বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, তহবিল এবং অস্ত্র দেয়। এই গোষ্ঠীগুলি সাম্প্রতিক সময়ে আরও সক্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক জলপথে জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত করছে। এতে পশ্চিমা দেশগুলোর বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিজেদের অর্থনীতি বাঁচাতে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলি ইয়েমেনে আক্রমণ করেছে। ইরান গাজার হামাসকেও অর্থায়ন করে। এই বাহিনী গত ৭ই অক্টোবর ইসরাইলের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছিল। এতে ১২০০ ইসরাইলি নিহত হয়।
হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের আগেই মধ্যপ্রাচ্যে ৩০ হাজার মার্কিন সেনা উপস্থিত ছিল। যুদ্ধ শুরুর পর আরও ১২০০ সেনা পৌঁছেছে সেখানে। সাথে মধ্যপ্রাচ্যের কাছাকাছি মোতায়েন করা হয়েছে আরও দুই হাজারের বেশি সেনা। ইরাক ও সিরিয়ায়ও আছে মার্কিন সেনারা। এতে ইরানকে ভালোভাবেই চাপে রাখতে পারছে দেশটি। তবে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অংশে নিজেদের বাহিনীকে শক্তিশালী করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান উভয়ই।
এদিকে ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা পরিকল্পনার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরফলে যে কোনো সময় দেশ দুটি লক্ষ্য করে হামলা চালাবে মার্কিন সেনারা।
স/ম


























