০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডি’র বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

এমডিকে পরিচালকদের চিঠি

এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি’র চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আর্জু ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ব্যাংকের কার্যক্রমে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে।
আর এসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার তোহেল আহমেদ, উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার সোনাওর আলী, উদ্যোক্তা পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন, উদ্যোক্তা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, উদ্যোক্তা পরিচালক সারোয়ার জামান চৌধুরী, উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার এসএম গোলাম রব্বানী চৌধুরী ও উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার সাখাওয়াত আলী।

এসব অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তারা চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়ার বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। এমনকি চিঠির এক জায়গায় তারা এমডির বিরুদ্ধেও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সব স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের অবগত করানোর জন্যও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যথায়, ব্যাংকটির এমডি গোলাম আউলিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন বলেও তারা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
চিঠিটি তারা অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বিএফআইইউ’র প্রধান, বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইসিএসডির পরিচালক, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালককেও ফরোয়ার্ড করেছেন।

এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের চিঠির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমরা চিঠির একটি কপি পেয়েছে। এ ব্যাংক নিয়ে আরও অভিযোগ আছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আর শেয়ারহোল্ডারদের দেয়া চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া একটি ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আশা করছি তাড়াতাড়িই তাদের চিঠির জবাব দিব।

এনআরবিসি ব্যাংকের এমডি গোলাম আউলিয়ার বরাবর লেখা চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন, ২০২১ সালে আপনার যোগদানের পর থেকেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যানের অন্যায় হস্তক্ষেপ ও সিন্ডিকেট সদস্যদের দৌরাত্ম্য ক্রমবর্ধমানহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়ম আরও গভীরে প্রথিত হয়েছে। দুষ্টের দমনের দায়িত্ব নিয়েও এ সময়ে দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করতে বিশেষ ইনক্রিমেন্ট ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করেছেন। বিপরীতে সৎ, কর্তব্যপরায়ণ ও দুর্নীতির অসহযোগিতাকারী বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হয়রানি চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। বিশেষ বাহিনী ও টর্চার সেল গঠন করে কর্তব্যনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করার অভিযোগও বাংলাদেশ ব্যাংকে তদন্তাধীন রয়েছে। ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী শনাক্ত না করেই রিলায়েবল বিল্ডার্স, ইক্সোরা অ্যাপারেলসসহ পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

চিঠিতে তারা আরো উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে আপনার ওপর যে পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে ব্যাংক কোম্পানি আইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ ল’ মোতাবেক ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঋণ ও অগ্রিম অনুমোদন-বিতরণে স্বচ্ছতা আনয়ন ও নিয়ম পরিপালনে নিরপেক্ষ ও নিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে দায়ী পরিষদ সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি। অন্যথায়, পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ন্যায় আপনার বিরুদ্ধেও যথাযথ বিধিমোতাবেক ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ ধারা আরোপসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া চিঠিতে তারা এনআরবিসি ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত ঋণ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরেছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডি’র বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি’র চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আর্জু ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ব্যাংকের কার্যক্রমে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে।
আর এসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন ব্যাংকটির উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার তোহেল আহমেদ, উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার সোনাওর আলী, উদ্যোক্তা পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন, উদ্যোক্তা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, উদ্যোক্তা পরিচালক সারোয়ার জামান চৌধুরী, উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার এসএম গোলাম রব্বানী চৌধুরী ও উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার সাখাওয়াত আলী।

এসব অনিয়মের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে তারা চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ৬ তারিখ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়ার বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন। এমনকি চিঠির এক জায়গায় তারা এমডির বিরুদ্ধেও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে সব স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের অবগত করানোর জন্যও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যথায়, ব্যাংকটির এমডি গোলাম আউলিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন বলেও তারা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।
চিঠিটি তারা অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বিএফআইইউ’র প্রধান, বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইসিএসডির পরিচালক, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালককেও ফরোয়ার্ড করেছেন।

এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের চিঠির বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আমরা চিঠির একটি কপি পেয়েছে। এ ব্যাংক নিয়ে আরও অভিযোগ আছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আর শেয়ারহোল্ডারদের দেয়া চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম আউলিয়া একটি ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে দৈনিক সবুজ বাংলাকে বলেন, আশা করছি তাড়াতাড়িই তাদের চিঠির জবাব দিব।

এনআরবিসি ব্যাংকের এমডি গোলাম আউলিয়ার বরাবর লেখা চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছেন, ২০২১ সালে আপনার যোগদানের পর থেকেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যানের অন্যায় হস্তক্ষেপ ও সিন্ডিকেট সদস্যদের দৌরাত্ম্য ক্রমবর্ধমানহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়ম আরও গভীরে প্রথিত হয়েছে। দুষ্টের দমনের দায়িত্ব নিয়েও এ সময়ে দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করতে বিশেষ ইনক্রিমেন্ট ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করেছেন। বিপরীতে সৎ, কর্তব্যপরায়ণ ও দুর্নীতির অসহযোগিতাকারী বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হয়রানি চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। বিশেষ বাহিনী ও টর্চার সেল গঠন করে কর্তব্যনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করার অভিযোগও বাংলাদেশ ব্যাংকে তদন্তাধীন রয়েছে। ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী শনাক্ত না করেই রিলায়েবল বিল্ডার্স, ইক্সোরা অ্যাপারেলসসহ পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

চিঠিতে তারা আরো উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে আপনার ওপর যে পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে ব্যাংক কোম্পানি আইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ ল’ মোতাবেক ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঋণ ও অগ্রিম অনুমোদন-বিতরণে স্বচ্ছতা আনয়ন ও নিয়ম পরিপালনে নিরপেক্ষ ও নিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে দায়ী পরিষদ সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি। অন্যথায়, পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ন্যায় আপনার বিরুদ্ধেও যথাযথ বিধিমোতাবেক ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ ধারা আরোপসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়া চিঠিতে তারা এনআরবিসি ব্যাংকের বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত ঋণ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের তথ্য তুলে ধরেছেন।