০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্বজুড়ে খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা

 

► বিশুদ্ধ পানি পায় না বিশ্বের ২২০ কোটি মানুষ ইউনেস্কোর প্রতিবেদন

 

 

বৈশ্বিক উষ্ণতা ও দাবদাহের কারণে ভবিষ্যতে বিশ্বজুড়ে খাদ্যদ্রব্যের দাম ও সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি জার্মান গবেষক ও ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের করা এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের অন্তত ২২০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি পায় না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

 

গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট শীর্ষক সাময়িকীতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব একেক জায়গায় একেক রকম হলেও তা সবখানেই প্রভাব দেখা যাবে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর প্রভাব পড়বে বেশি। জলবায়ু উষ্ণ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দাবদাহ, খরা ও বন্যার মতো চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠছে। এতে কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনসহ অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোর ওপর প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১ দশমিক ৪৯ থেকে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। গবেষণার জন্য জার্মানির পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের (পিআইকে) গবেষক ও ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের পক্ষ থেকে ১৯৯৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১২১টি দেশের জিনিসপত্রের দাম ও আবহাওয়ার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

 

এদিকে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর তৈরি করা এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের প্রতি দুজনের একজন বছরের কয়েক মাস পানির অভাবে কাটায়। বিশ্বের অন্তত ২২০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি পায় না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজুলে বলেছেন, বিশ্বের কিছু অঞ্চলে পানির সংকট ব্যতিক্রমের চেয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। আমরা এই ধরনের পরিস্থিতির পরিণতি জানি। পানির ঘাটতি শুধুমাত্র ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনাকে উসকে দেয় না বরং সামগ্রিকভাবে মৌলিক অধিকারের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। জাতিসংঘ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানির সংকট বাড়তে থাকায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সংঘাত প্রতিরোধের জন্য আন্তঃসীমান্ত পানি সহযোগিতার গুরুত্ব বাড়ছে।

 

বার্তা সংস্থা এএফপিকে জাতিসংঘের ওয়াটার কনভেনশনের সচিব সনিয়া ক্যোপেল বলেছেন, পানি ও শান্তি একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট। স্বাদু পানি সম্পদের ৬০ শতাংশের বেশি দুই বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক দেশ শেয়ার করে, যেমন ইউরোপের রাইন ও দানিয়ুব নদী, এশিয়ার মেকং, আফ্রিকার নীল ও লাতিন আমেরিকার আমাজন নদী। শান্তি, উন্নয়ন ও জলবায়ু অ্যাকশনের জন্য এসব পানি নিয়ে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। পানি এতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ যে, এটি দ্বন্দ্বে থাকা দেশগুলোকে এক টেবিলে আনতে পারে। ফলে পানি ছাড়াও দ্বন্দ্বের অন্যান্য ইস্যুতেও সমাধানের পথ খোলা হয়।

 

২০১৬ সালে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় বলা হয়েছিল, বিশ্বের ১৪০টি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে নিরাপদ খাবার পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনের ব্যবস্থা করতে ২০১৬ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১.৭ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হবে, অর্থাৎ বছরে ১১৪ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পানি খাতে উন্নয়ন সহায়তা ১৫ শতাংশ কমেছে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

বিশ্বজুড়ে খাদ্যদ্রব্যের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা

আপডেট সময় : ০৭:২১:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

 

► বিশুদ্ধ পানি পায় না বিশ্বের ২২০ কোটি মানুষ ইউনেস্কোর প্রতিবেদন

 

 

বৈশ্বিক উষ্ণতা ও দাবদাহের কারণে ভবিষ্যতে বিশ্বজুড়ে খাদ্যদ্রব্যের দাম ও সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্প্রতি জার্মান গবেষক ও ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের করা এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের অন্তত ২২০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি পায় না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

 

গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত কমিউনিকেশনস আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট শীর্ষক সাময়িকীতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাব একেক জায়গায় একেক রকম হলেও তা সবখানেই প্রভাব দেখা যাবে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর প্রভাব পড়বে বেশি। জলবায়ু উষ্ণ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে দাবদাহ, খরা ও বন্যার মতো চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠছে। এতে কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনসহ অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোর ওপর প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১ দশমিক ৪৯ থেকে ১ দশমিক ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। গবেষণার জন্য জার্মানির পটসডাম ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট ইমপ্যাক্ট রিসার্চের (পিআইকে) গবেষক ও ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের পক্ষ থেকে ১৯৯৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১২১টি দেশের জিনিসপত্রের দাম ও আবহাওয়ার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

 

এদিকে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর তৈরি করা এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিশ্বের প্রতি দুজনের একজন বছরের কয়েক মাস পানির অভাবে কাটায়। বিশ্বের অন্তত ২২০ কোটি মানুষ বিশুদ্ধ পানি পায় না বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজুলে বলেছেন, বিশ্বের কিছু অঞ্চলে পানির সংকট ব্যতিক্রমের চেয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। আমরা এই ধরনের পরিস্থিতির পরিণতি জানি। পানির ঘাটতি শুধুমাত্র ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনাকে উসকে দেয় না বরং সামগ্রিকভাবে মৌলিক অধিকারের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। জাতিসংঘ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানির সংকট বাড়তে থাকায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সংঘাত প্রতিরোধের জন্য আন্তঃসীমান্ত পানি সহযোগিতার গুরুত্ব বাড়ছে।

 

বার্তা সংস্থা এএফপিকে জাতিসংঘের ওয়াটার কনভেনশনের সচিব সনিয়া ক্যোপেল বলেছেন, পানি ও শান্তি একে অন্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট। স্বাদু পানি সম্পদের ৬০ শতাংশের বেশি দুই বা তার চেয়ে বেশি সংখ্যক দেশ শেয়ার করে, যেমন ইউরোপের রাইন ও দানিয়ুব নদী, এশিয়ার মেকং, আফ্রিকার নীল ও লাতিন আমেরিকার আমাজন নদী। শান্তি, উন্নয়ন ও জলবায়ু অ্যাকশনের জন্য এসব পানি নিয়ে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। পানি এতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ যে, এটি দ্বন্দ্বে থাকা দেশগুলোকে এক টেবিলে আনতে পারে। ফলে পানি ছাড়াও দ্বন্দ্বের অন্যান্য ইস্যুতেও সমাধানের পথ খোলা হয়।

 

২০১৬ সালে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় বলা হয়েছিল, বিশ্বের ১৪০টি নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে নিরাপদ খাবার পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিনের ব্যবস্থা করতে ২০১৬ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১.৭ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হবে, অর্থাৎ বছরে ১১৪ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে পানি খাতে উন্নয়ন সহায়তা ১৫ শতাংশ কমেছে।