০৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যাংক ঋণের ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল ৪ প্রতারক

ভুয়া এনআইডি ব্যবহার

ভুয়া এনআইডি দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ একটি প্রতারকচক্র। অবশেষে সেই চক্রের প্রধানসহ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে সক্রিয় ৪ সদস্য। এরা হলেন জয়নাল আবেদীন ওরফে ইদ্রিস (৪২), নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী পল্লব দাস (৩৬), রফিকুল ইসলাম খান (৩৮) ও আলিফ হোসেন (২০)। গতকাল শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গত শুক্রবার গোপন সংবাদে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
হারুন অর রশীদ বলেন, এই প্রতারক জয়নালের এক সময় কিছুই ছিল না। তিনি ইমিটেশন পণ্যের দোকান করতেন। কিন্তু সেই ব্যবসায় লস করে তিনি ব্যবসা ছাড়েন। এরপর জড়িয়ে পড়েন প্রতারণায়। জয়নাল তার প্রতারণার জন্য একটি কোম্পানি খুলে সেখান থেকে আরো সাতটি কোম্পানির নামে কাগজপত্র তৈরি করে রেখেছিলেন। পরে সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের দিয়ে ঋণ নিতেন। আমরা তাকেসহ পল্লব দাসকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করব। এছাড়া তারা আর কতটি ব্যাংক থেকে এমন ঋণ নিয়েছেন তা আমরা খতিয়ে দেখব। তাদের সঙ্গে যদি কেউ জড়িত থাকে তাদেরও আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। তিনি বলেন, পল্লব জাল এনআইডি বানিয়ে দিতেন। পরে এসব এনআইডি দিয়ে ব্যাংক লোন নেওয়া হতো। তবে এই পল্লব এনআইডি বানিয়ে দিয়ে কত টাকা কামিয়েছেন এবং অর্থসম্পদ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখবে ডিবি।

ডিবিপ্রধান বলেন, জয়নালের কার্যকর ১০টি এনআইডি ছিল। এসব এনআইডি দিয়ে সে বিভিন্ন ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করত। এনআইডির নাম ও ঠিকানা ঠিক থাকত শুধু সে সেটির নম্বর পরিবর্তন করে আরেকটি তৈরি করতো। পল্লব দাস যে অফিসে চাকরি করত সেই অফিসারের ব্যবহৃত সার্ভারের পাসওয়ার্ড তার কাছ থাকতো এই সুবাদে সে এসব ভুয়া কার্যকর এনআইডি করত। তিনি বলেন, জয়নাল তার এনআইডি দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে শুধু নম্বরগুলো পরিবর্তন করে আরেকটা এনআইডি বানাতো। এজন্য কোনোটাতে সে দাড়িসহ ছবি দিতো। আবার কোনোটাতে গোঁফ, কোনটা দাড়ি গোঁফ ছাড়া থাকত। কোনোটা দুই বছর আগের আবার কোনটা পরের। একই জমি, একই ফ্ল্যাট ও একই অফিস দেখিয়ে ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করত জয়নাল। কিছু ব্যাংক থেকে তিনি ঋণ নিয়েছিলেন আবার কিছু ব্যাংক থেকে তার ঋণ প্যান্ডিং অবস্থায় ছিল। প্যান্ডিং এমন ঋণের পরিমাণ ৫০ কোটির টাকার কম নয়। একই এনআইডি ও ভুয়া দলিল দিয়ে জয়নাল একই নামে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ তুলেছে।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, ভরি ছাড়াল দুই লাখ ২৭ হাজার

ব্যাংক ঋণের ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিল ৪ প্রতারক

আপডেট সময় : ০৪:১৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪

ভুয়া এনআইডি দিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সংঘবদ্ধ একটি প্রতারকচক্র। অবশেষে সেই চক্রের প্রধানসহ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে সক্রিয় ৪ সদস্য। এরা হলেন জয়নাল আবেদীন ওরফে ইদ্রিস (৪২), নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী পল্লব দাস (৩৬), রফিকুল ইসলাম খান (৩৮) ও আলিফ হোসেন (২০)। গতকাল শনিবার দুপুরে ডিএমপির মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, গত শুক্রবার গোপন সংবাদে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
হারুন অর রশীদ বলেন, এই প্রতারক জয়নালের এক সময় কিছুই ছিল না। তিনি ইমিটেশন পণ্যের দোকান করতেন। কিন্তু সেই ব্যবসায় লস করে তিনি ব্যবসা ছাড়েন। এরপর জড়িয়ে পড়েন প্রতারণায়। জয়নাল তার প্রতারণার জন্য একটি কোম্পানি খুলে সেখান থেকে আরো সাতটি কোম্পানির নামে কাগজপত্র তৈরি করে রেখেছিলেন। পরে সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের দিয়ে ঋণ নিতেন। আমরা তাকেসহ পল্লব দাসকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসা করব। এছাড়া তারা আর কতটি ব্যাংক থেকে এমন ঋণ নিয়েছেন তা আমরা খতিয়ে দেখব। তাদের সঙ্গে যদি কেউ জড়িত থাকে তাদেরও আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। তিনি বলেন, পল্লব জাল এনআইডি বানিয়ে দিতেন। পরে এসব এনআইডি দিয়ে ব্যাংক লোন নেওয়া হতো। তবে এই পল্লব এনআইডি বানিয়ে দিয়ে কত টাকা কামিয়েছেন এবং অর্থসম্পদ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখবে ডিবি।

ডিবিপ্রধান বলেন, জয়নালের কার্যকর ১০টি এনআইডি ছিল। এসব এনআইডি দিয়ে সে বিভিন্ন ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করত। এনআইডির নাম ও ঠিকানা ঠিক থাকত শুধু সে সেটির নম্বর পরিবর্তন করে আরেকটি তৈরি করতো। পল্লব দাস যে অফিসে চাকরি করত সেই অফিসারের ব্যবহৃত সার্ভারের পাসওয়ার্ড তার কাছ থাকতো এই সুবাদে সে এসব ভুয়া কার্যকর এনআইডি করত। তিনি বলেন, জয়নাল তার এনআইডি দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নামে শুধু নম্বরগুলো পরিবর্তন করে আরেকটা এনআইডি বানাতো। এজন্য কোনোটাতে সে দাড়িসহ ছবি দিতো। আবার কোনোটাতে গোঁফ, কোনটা দাড়ি গোঁফ ছাড়া থাকত। কোনোটা দুই বছর আগের আবার কোনটা পরের। একই জমি, একই ফ্ল্যাট ও একই অফিস দেখিয়ে ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করত জয়নাল। কিছু ব্যাংক থেকে তিনি ঋণ নিয়েছিলেন আবার কিছু ব্যাংক থেকে তার ঋণ প্যান্ডিং অবস্থায় ছিল। প্যান্ডিং এমন ঋণের পরিমাণ ৫০ কোটির টাকার কম নয়। একই এনআইডি ও ভুয়া দলিল দিয়ে জয়নাল একই নামে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ তুলেছে।