এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে ইনফ্লুয়েঞ্জা (শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ) বা ফ্লু হয়। এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি থাকে জুন ও জুলাই মাসে। ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুমে ছয়গুণ বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে আইইডিসিআর ও আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে ইনফ্লুয়েঞ্জা পর্যবেক্ষণ বিষয়ক প্রচার’ সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে বলা হয়, আইইডিসিআরের ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ন্ত্রণের জন্য জাতীয় ইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টার (এনআইসি) কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর আওতায় আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি জাতীয় ইনফ্লুয়েঞ্জা নজরদারি ও হাসপাতালভিত্তিক ইনফ্লুয়েঞ্জা নজরদারি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে দেশের ১৯টি হাসপাতালে তাদের পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চলছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ২০০৭ সালের মে থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ নিয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৫৮০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে মাত্র ১১ দশমিক ৫ শতাংশের ইনফ্লুয়েঞ্জা শনাক্ত হয়। বয়সের হিসাবে পাঁচ থেকে ২৫ বছর বয়সিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩২ শতাংশ ইনফ্লুয়েঞ্জা পাওয়া গেছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে মারা যাওয়ার হার এক শতাংশ। ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হলে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি এবং ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ ও ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি তিনগুণ বেশি। ইনফ্লুয়েঞ্জার সময় প্রতি চারজন শ্বাসতন্ত্রের রোগীর একজন ইনফ্লুয়েঞ্জা পজিটিভ হয়, যা অন্য সময়ে ২৫ জনে একজন। ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে সুরক্ষা পেতে টিকা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়। দেশে যেহেতু এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ইনফ্লুয়েঞ্জার মৌসুম, তাই ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের মধ্যেই টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি, ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সি শিশু, গর্ভবতী নারী এবং যাঁরা হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগেন, তাঁদের টিকা নেওয়ার কথা বলা হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ হিসেবে বলা হয়, জ্বর, কাশি, মাথাব্যথা, পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা, খারাপ লাগা বোধ করা, গলাব্যথা ও নাক দিয়ে সর্দি ঝরা।
সেমিনারে ইনফ্লুয়েঞ্জার বৈশ্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে উপস্থাপনা তুলে ধরেন আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী ফাহমিদা চৌধুরী। বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উন্নয়ন পরিকল্পনা শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক তাহমিদ আহমেদ, আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, সিডিসির এপিডেমিওলজিস্ট গ্রেচেন কাওম্যান প্রমুখ।























