০৪:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জবির অডিটোরিয়াম যেন পরিত্যক্ত কক্ষ

◆আসনগুলো প্রায় বসার অনুপযোগী
◆অকেজো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রগুলোও
◆ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিগুলোও ত্রুটিপূর্ণ
◆আসন সংকটে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের
◆অডিটোরিয়াম আধুনিকায়নে বরাদ্দ হলেও কাজ শুরু হয়নি

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিবিএ বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামটি। নিত্যদিন সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভা-সেমিনার। তবে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় অডিটোরিয়ামটির বেহাল দশা।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কক্ষের পেছনের আসনগুলো প্রায় সবগুলো ভেঙে বসার অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রগুলোও অকেজো। উপরন্তু নেই পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা। ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিগুলোও ত্রুটিপূর্ণ। সেইসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে আসন সংখ্যার স্বল্পতার কারণে পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

 

এই পরিত্যক্ত কক্ষ সদৃশ অডিটরিয়ামটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষক, অতিথি ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হতে হয়। এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামটি দেখে বুঝার উপায় নেই যে, এটা একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য একটিমাত্র বড় মাপের অডিটোরিয়াম। তা সত্ত্বেও সেই অডিটোরিয়াটিই অপরিচ্ছন্ন ও অনাধুনিক। সিলিং খুলে পড়তে শুরু করেছে। অডিটোরিয়ামের সিটগুলোতে ময়লার আস্তরণ পড়ে গেছে এবং প্রায় অনেকগুলো সিট ভাঙা। সিলিং খুলে পড়তে শুরু করেছে। সবগুলো এসিও নষ্ট। অডিটোরিয়ামের পাশে যে টয়লেট আছে সেটা এতটাই অপরিষ্কার যে, শিক্ষার্থীদের জন্য অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, দ্রুততার সঙ্গে অডিটোরিয়ামে সংস্কার কাজ শুরু করুন।

 

২০২৩ সালে ৭ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম আধুনিকায়ন ও শিক্ষার্থীদের টয়লেট নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে এককালীন দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। তবে অডিটোরিয়ামটির আধুনিকায়ন এখনও শুরু হয়নি।

 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এ বরাদ্দটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীনে দিয়েছে কাজটি এখানে করে দেওয়ার জন্য। পরবর্তীকালে এটি আমাদের জানানো হলে আমরা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তারা আমাদের এখানে ভিজিট আসে। বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামের নকশা আমরা আগে থেকেই প্রস্তুত করে রেখেছিলাম। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা সেটি দেখেন এবং অডিটোরিয়ামের মাপজোখ নিয়ে যান এবং বলেন শিগগির আমরা টেন্ডার করব। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা নকশায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন, নতুনভাবে ডিজাইন করেছেন। তবে সেই প্রক্রিয়া শেষ করে এখনো টেন্ডারটি করতে পারেননি।

 

নকশার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নকশাটি দেখেছি। দেখে বেশ ভালোই লেগেছে। তারাও আশ্বাস দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর অডিটোরিয়াম তারা বানিয়ে দিবেন। আমরাও মনে করি, নকশা অনুযায়ী যদি তারা অডিটোরিয়ামটি করে তাহলে বেশ ভালো হবে।

 

 

তিনি আরো বলেন, আমরা নিয়মিত সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমি নিজে সিটি করপোরেশনে যাই, প্রধান প্রকৌশলীর ও নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলি। আমরা সর্বশেষ অবস্থা জানতে পেরেছি, তারা এটি অনুমোদনের লক্ষে মেয়র মহোদয়ের কাছে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। তিনি সেটি অনুমোদন করলেই, দ্রুত টেন্ডারটি হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, ভরি ছাড়াল দুই লাখ ২৭ হাজার

জবির অডিটোরিয়াম যেন পরিত্যক্ত কক্ষ

আপডেট সময় : ০৪:৪২:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

◆আসনগুলো প্রায় বসার অনুপযোগী
◆অকেজো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রগুলোও
◆ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিগুলোও ত্রুটিপূর্ণ
◆আসন সংকটে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের
◆অডিটোরিয়াম আধুনিকায়নে বরাদ্দ হলেও কাজ শুরু হয়নি

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিবিএ বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামটি। নিত্যদিন সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৮টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভা-সেমিনার। তবে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় অডিটোরিয়ামটির বেহাল দশা।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কক্ষের পেছনের আসনগুলো প্রায় সবগুলো ভেঙে বসার অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রগুলোও অকেজো। উপরন্তু নেই পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা। ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিগুলোও ত্রুটিপূর্ণ। সেইসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে আসন সংখ্যার স্বল্পতার কারণে পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

 

এই পরিত্যক্ত কক্ষ সদৃশ অডিটরিয়ামটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষক, অতিথি ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হতে হয়। এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামটি দেখে বুঝার উপায় নেই যে, এটা একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য একটিমাত্র বড় মাপের অডিটোরিয়াম। তা সত্ত্বেও সেই অডিটোরিয়াটিই অপরিচ্ছন্ন ও অনাধুনিক। সিলিং খুলে পড়তে শুরু করেছে। অডিটোরিয়ামের সিটগুলোতে ময়লার আস্তরণ পড়ে গেছে এবং প্রায় অনেকগুলো সিট ভাঙা। সিলিং খুলে পড়তে শুরু করেছে। সবগুলো এসিও নষ্ট। অডিটোরিয়ামের পাশে যে টয়লেট আছে সেটা এতটাই অপরিষ্কার যে, শিক্ষার্থীদের জন্য অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, দ্রুততার সঙ্গে অডিটোরিয়ামে সংস্কার কাজ শুরু করুন।

 

২০২৩ সালে ৭ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম আধুনিকায়ন ও শিক্ষার্থীদের টয়লেট নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে এককালীন দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। তবে অডিটোরিয়ামটির আধুনিকায়ন এখনও শুরু হয়নি।

 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এ বরাদ্দটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অধীনে দিয়েছে কাজটি এখানে করে দেওয়ার জন্য। পরবর্তীকালে এটি আমাদের জানানো হলে আমরা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং তারা আমাদের এখানে ভিজিট আসে। বিশ্ববিদ্যালয় অডিটোরিয়ামের নকশা আমরা আগে থেকেই প্রস্তুত করে রেখেছিলাম। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা সেটি দেখেন এবং অডিটোরিয়ামের মাপজোখ নিয়ে যান এবং বলেন শিগগির আমরা টেন্ডার করব। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা নকশায় কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন, নতুনভাবে ডিজাইন করেছেন। তবে সেই প্রক্রিয়া শেষ করে এখনো টেন্ডারটি করতে পারেননি।

 

নকশার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নকশাটি দেখেছি। দেখে বেশ ভালোই লেগেছে। তারাও আশ্বাস দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর অডিটোরিয়াম তারা বানিয়ে দিবেন। আমরাও মনে করি, নকশা অনুযায়ী যদি তারা অডিটোরিয়ামটি করে তাহলে বেশ ভালো হবে।

 

 

তিনি আরো বলেন, আমরা নিয়মিত সিটি করপোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমি নিজে সিটি করপোরেশনে যাই, প্রধান প্রকৌশলীর ও নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলি। আমরা সর্বশেষ অবস্থা জানতে পেরেছি, তারা এটি অনুমোদনের লক্ষে মেয়র মহোদয়ের কাছে ফাইলটি পাঠিয়েছেন। তিনি সেটি অনুমোদন করলেই, দ্রুত টেন্ডারটি হবে।