০৫:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উপজেলা ভোট : আ.লীগের তৃণমূলে বিভক্তি বাড়ছেই

❖থামছে না সংঘাত, আহত দেড় শতাধিক
❖বিএনপির বহিষ্কৃতদের পক্ষে কাজ করছেন আ.লীগ নেতারা

শেষ হয়েছে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণার সময়। আগামীকাল বুধবার দেশের ১৫০টি উপজেলায় একযোগে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। উপজেলা ভোটে এবার দলীয় প্রতিক ছাড়াই অংশ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম উন্মুক্ত নির্বাচনের কৌশল বেছে নিয়েছে। তবে দলের এমন কৌশলে দেশজুড়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে টানা চারবার ক্ষমতায় থাকা দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। প্রথম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বেড়েছে সংঘাত সহিংসতা। জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংকট নিরসন না হলেও নতুন করে ভাবাচ্ছে দলের উপজেলার কোন্দল।

 

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা গতকাল সোমবার রাতে শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে আগামীকাল উপজেলায় প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭ জন চেয়ারম্যান, ৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন।

 

নির্বাচনে অধিকাংশ আসনেই লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। কোনো স্থানে ত্রীমুখী আবার চতুরমুখী লড়াইও হচ্ছে দলটির নেতাদের। দলের কেন্দ্র থেকে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশনা থাকলেও কোথাও স্বজন আবার কোথাও ‘মাইম্যানদের’ প্রার্থী করেছেন তারা। এমপি-মন্ত্রীদের এমন অবস্থানে তৃণমূলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়িয়েছে। ১ম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত সহিংসতা বাড়তে থাকে। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারধর, হামলা-পাল্টা হামলা, ভাঙচুর, হুমকিসহ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার খবর পাওয়া যাচ্ছে প্রতিদিনই। গণমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী ১ম ধাপের নির্বাচনের প্রচারণা পর্বেই আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক।

 

 

তৃণমূলে গৃহদাহের মাঝে নতুন করে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের চিন্তার কারণ হয়েছে বিএনপি নেতাদের উপজেলা ভোটে অংশ নেওয়া। ১ম ধাপে অংশ নেওয়া ৮১ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী আছে ২৮ জন। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সুবধিা পাচ্ছেন বিএনপির এসব নেতারা। একাধিক প্রার্থী থাকায় বিভক্ত আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা এ সুযোগে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বিএনপির প্রার্থীদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১ম ধাপ ছাড়াও পরবর্তী ধাপে অংশ নিতে যাওয়া বিএনপির এসব নেতারা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। স্থানীয় বিএনপির অনেক নেতাও তাদের সঙ্গে প্রচারে নেমেছেন। আবার কিছু স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকে বিএনপির এসব নেতাদের মৌন ও আর্থিক সমর্থন দিচ্ছেন। তবে পুরো বিষয়টি সংঘটিত হচ্ছে আড়ালে।

 

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনও যাতে অংশগ্রহণমূলক হয়, তাই দলীয় প্রতীক নৌকা তুলে নেওয়া হয়েছে। দলের যে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন। এতে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে। শুধু এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে ত্যাগি নেতাকর্মীরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। এরই মধ্যে অনেক জায়গায় এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এতে তৃণমূলে সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা থাকে এটাই স্বাভাবিক। তবে নেত্রী চান, উপজেলা নির্বাচন হোক অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইয়েমেনের দক্ষিণে সৌদি বিমান হামলার অভিযোগ, নতুন করে উত্তেজনার আশঙ্কা

উপজেলা ভোট : আ.লীগের তৃণমূলে বিভক্তি বাড়ছেই

আপডেট সময় : ০৭:০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

❖থামছে না সংঘাত, আহত দেড় শতাধিক
❖বিএনপির বহিষ্কৃতদের পক্ষে কাজ করছেন আ.লীগ নেতারা

শেষ হয়েছে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণার সময়। আগামীকাল বুধবার দেশের ১৫০টি উপজেলায় একযোগে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। উপজেলা ভোটে এবার দলীয় প্রতিক ছাড়াই অংশ নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করতে দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম উন্মুক্ত নির্বাচনের কৌশল বেছে নিয়েছে। তবে দলের এমন কৌশলে দেশজুড়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে টানা চারবার ক্ষমতায় থাকা দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। প্রথম ধাপের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বেড়েছে সংঘাত সহিংসতা। জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংকট নিরসন না হলেও নতুন করে ভাবাচ্ছে দলের উপজেলার কোন্দল।

 

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা গতকাল সোমবার রাতে শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে আগামীকাল উপজেলায় প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ করে এনেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭ জন চেয়ারম্যান, ৯ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন।

 

নির্বাচনে অধিকাংশ আসনেই লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। কোনো স্থানে ত্রীমুখী আবার চতুরমুখী লড়াইও হচ্ছে দলটির নেতাদের। দলের কেন্দ্র থেকে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশনা থাকলেও কোথাও স্বজন আবার কোথাও ‘মাইম্যানদের’ প্রার্থী করেছেন তারা। এমপি-মন্ত্রীদের এমন অবস্থানে তৃণমূলে বিশৃঙ্খলা আরও বাড়িয়েছে। ১ম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত সহিংসতা বাড়তে থাকে। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারধর, হামলা-পাল্টা হামলা, ভাঙচুর, হুমকিসহ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার খবর পাওয়া যাচ্ছে প্রতিদিনই। গণমাধ্যমে আসা খবর অনুযায়ী ১ম ধাপের নির্বাচনের প্রচারণা পর্বেই আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক।

 

 

তৃণমূলে গৃহদাহের মাঝে নতুন করে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের চিন্তার কারণ হয়েছে বিএনপি নেতাদের উপজেলা ভোটে অংশ নেওয়া। ১ম ধাপে অংশ নেওয়া ৮১ জনকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী আছে ২৮ জন। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সুবধিা পাচ্ছেন বিএনপির এসব নেতারা। একাধিক প্রার্থী থাকায় বিভক্ত আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকরা এ সুযোগে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বিএনপির প্রার্থীদের। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১ম ধাপ ছাড়াও পরবর্তী ধাপে অংশ নিতে যাওয়া বিএনপির এসব নেতারা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। স্থানীয় বিএনপির অনেক নেতাও তাদের সঙ্গে প্রচারে নেমেছেন। আবার কিছু স্থানে আওয়ামী লীগ নেতাদের অনেকে বিএনপির এসব নেতাদের মৌন ও আর্থিক সমর্থন দিচ্ছেন। তবে পুরো বিষয়টি সংঘটিত হচ্ছে আড়ালে।

 

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনও যাতে অংশগ্রহণমূলক হয়, তাই দলীয় প্রতীক নৌকা তুলে নেওয়া হয়েছে। দলের যে কেউ প্রার্থী হতে পারবেন। এতে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু হবে। শুধু এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব না খাটানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে ত্যাগি নেতাকর্মীরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। এরই মধ্যে অনেক জায়গায় এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এতে তৃণমূলে সংঘাত বাড়ার আশঙ্কা থাকে এটাই স্বাভাবিক। তবে নেত্রী চান, উপজেলা নির্বাচন হোক অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ।