০১:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনলাইনে লিচু বিক্রির বিজ্ঞাপন, বাজারের দাম পাচ্ছেন বাড়ি থেকেই

অনলাইনে লিচু বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বর্তা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে বাবলু মিয়া এখন বাজারের দাম পাচ্ছেন বাড়ি থেকেই। খুচরায় বেড়েছে লিচু বিক্রি। প্রতিবেশি ছাড়াও প্রতিদিনই আসছেন বহু দূর দুরান্ত থেকে ক্রেতারা।

জানা যায়, দাদার লাগানো গাছ থেকে প্রতি বছর লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেন তিনি। গত দশ বছরে লিচু বিক্রি করে ১০ লাখেরও বেশি টাকা আয় করেছেন বাবলু। জীবিত অবস্থায় বাবলুর দাদা বাড়ির পাশে কয়েকটি লিচু গাছ লাগিয়ে যান। সেই গাছের লিচু বিক্রি করে লাভ পাওয়ার পর আরও ৩০ থেকে ৩৫টি লিচুর চারা রোপন করেন তিনি। ঠিক সময় সার ও কীটনাশকসহ সঠিক পরিচর্যা করায় প্রতি বছরই ফলন হয় প্রচুর। গত দশ বছরে বাবলু তার ওই বাগান থেকে ১০ লাখের বেশি টাকা আয় করেছেন।

চাষি বাবলু মিয়া জানা, এক বছর আগে পাইকাররা তার গাছ থেকে লিচু নিয়ে যেতো ৮শ টাকা, ৯শ টাকা হাজার। ওই লিচুই বাজারে গিয়ে তিনি দেখতেন পাইকাররা খুচরায় বিক্রি করছে ৩শ টাকা থেকে সাড়ে ৩শ টাকায়। তিনি তখন চিন্তা করতেন তার লিচু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ, আর তিনি পাচ্ছেন ৯০ থেকে ১০০ টাকা। ক্রেতাদের হাতে সরাসরি লিচু তুলে দিতে পরে তিনি অনলাইনের মাধ্যমে লিচু বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। ইতোমধ্যে তিনি ১০ হাজার লিচু সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রতি শ লিচু বিক্রি করেছেন ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়।

আমিনুল নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি ২শ টাকায় ৫০ পিস লিচু কিনেছেন। দাম একটু চড়া বলে জানান তিনি। বিক্রেতা আনু মিয়া জানান, লিচু গাছে থাকে ৫ হাজার, ঝরে পইড়া হয়ে যায় ২ হাজার। এই জন্য বেড়ে যায়। যেটি ২শ টাকা বিক্রি হতো, সেটি তখন সাড়ে ৩শ টাকায় বিক্রি হয়। এই ক্ষতিটা সাধারণ ক্রেতারা বুঝেনা।

বিল্লাল হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, বাজারে একশো লিচু কিনলে বাড়িতে এসে গুণে দেখা যায় সেখানে রয়েছে ৮০ পিস। একদিকে যেমনি চড়া দাম নিচ্ছে পাইকাররা, অন্য দিকে সংখ্যায় কম নিচ্ছে। এতে মধ্যস্বত্বভোগী যারা তারাই লাভবান হচ্ছেন। যদি কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি লিচু কেনা যায় তাহলে কৃষকও লাভবান হবে, ক্রেতারাও ন্যায্য মূল্যে ভাল মানের ফ্রেস লিচু হবে।

আরেক চাষী নুর ইসলাম জানান, বাজারে যে দামে লিচু বিক্রি করে, কৃষকরা যদি ওই দামে লিচু বিক্রি করতে পারতেন তাহলে অনেক লাভবান হতেন তারা। ফরমালিন দেয়া ফলের চেয়ে কৃষকদের কাছ থেকে লিচু কিনলে ভালো ফল পাবে ক্রেতারাও।

বিক্রেতারা আনু মিয়া আরও জানান, তারা কোনো ফরমালিন দেয় না লিচুতে। যেটুকু গাছ থেকে ভাঙা হয়, সেগুলো দিনেই বিক্রি করে দেন তিনি। এদিকে লিচু চাষির সংখ্যা ও ফলন সম্পর্কে জানতে ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামানের কাছে গেলে তিনি জানান, উপজেলায় লিচু চাষির সংখ্যা তিনি জানেন না। ফলন ও চাষির সংখ্যা জানতে পরে আসার পরামর্শ দেন এ প্রতিবেদককে।

জনপ্রিয় সংবাদ

অনলাইনে লিচু বিক্রির বিজ্ঞাপন, বাজারের দাম পাচ্ছেন বাড়ি থেকেই

আপডেট সময় : ০৪:৪৭:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

অনলাইনে লিচু বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বর্তা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে বাবলু মিয়া এখন বাজারের দাম পাচ্ছেন বাড়ি থেকেই। খুচরায় বেড়েছে লিচু বিক্রি। প্রতিবেশি ছাড়াও প্রতিদিনই আসছেন বহু দূর দুরান্ত থেকে ক্রেতারা।

জানা যায়, দাদার লাগানো গাছ থেকে প্রতি বছর লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেন তিনি। গত দশ বছরে লিচু বিক্রি করে ১০ লাখেরও বেশি টাকা আয় করেছেন বাবলু। জীবিত অবস্থায় বাবলুর দাদা বাড়ির পাশে কয়েকটি লিচু গাছ লাগিয়ে যান। সেই গাছের লিচু বিক্রি করে লাভ পাওয়ার পর আরও ৩০ থেকে ৩৫টি লিচুর চারা রোপন করেন তিনি। ঠিক সময় সার ও কীটনাশকসহ সঠিক পরিচর্যা করায় প্রতি বছরই ফলন হয় প্রচুর। গত দশ বছরে বাবলু তার ওই বাগান থেকে ১০ লাখের বেশি টাকা আয় করেছেন।

চাষি বাবলু মিয়া জানা, এক বছর আগে পাইকাররা তার গাছ থেকে লিচু নিয়ে যেতো ৮শ টাকা, ৯শ টাকা হাজার। ওই লিচুই বাজারে গিয়ে তিনি দেখতেন পাইকাররা খুচরায় বিক্রি করছে ৩শ টাকা থেকে সাড়ে ৩শ টাকায়। তিনি তখন চিন্তা করতেন তার লিচু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ, আর তিনি পাচ্ছেন ৯০ থেকে ১০০ টাকা। ক্রেতাদের হাতে সরাসরি লিচু তুলে দিতে পরে তিনি অনলাইনের মাধ্যমে লিচু বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। ইতোমধ্যে তিনি ১০ হাজার লিচু সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রতি শ লিচু বিক্রি করেছেন ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়।

আমিনুল নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি ২শ টাকায় ৫০ পিস লিচু কিনেছেন। দাম একটু চড়া বলে জানান তিনি। বিক্রেতা আনু মিয়া জানান, লিচু গাছে থাকে ৫ হাজার, ঝরে পইড়া হয়ে যায় ২ হাজার। এই জন্য বেড়ে যায়। যেটি ২শ টাকা বিক্রি হতো, সেটি তখন সাড়ে ৩শ টাকায় বিক্রি হয়। এই ক্ষতিটা সাধারণ ক্রেতারা বুঝেনা।

বিল্লাল হোসেন নামে এক ক্রেতা জানান, বাজারে একশো লিচু কিনলে বাড়িতে এসে গুণে দেখা যায় সেখানে রয়েছে ৮০ পিস। একদিকে যেমনি চড়া দাম নিচ্ছে পাইকাররা, অন্য দিকে সংখ্যায় কম নিচ্ছে। এতে মধ্যস্বত্বভোগী যারা তারাই লাভবান হচ্ছেন। যদি কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি লিচু কেনা যায় তাহলে কৃষকও লাভবান হবে, ক্রেতারাও ন্যায্য মূল্যে ভাল মানের ফ্রেস লিচু হবে।

আরেক চাষী নুর ইসলাম জানান, বাজারে যে দামে লিচু বিক্রি করে, কৃষকরা যদি ওই দামে লিচু বিক্রি করতে পারতেন তাহলে অনেক লাভবান হতেন তারা। ফরমালিন দেয়া ফলের চেয়ে কৃষকদের কাছ থেকে লিচু কিনলে ভালো ফল পাবে ক্রেতারাও।

বিক্রেতারা আনু মিয়া আরও জানান, তারা কোনো ফরমালিন দেয় না লিচুতে। যেটুকু গাছ থেকে ভাঙা হয়, সেগুলো দিনেই বিক্রি করে দেন তিনি। এদিকে লিচু চাষির সংখ্যা ও ফলন সম্পর্কে জানতে ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামানের কাছে গেলে তিনি জানান, উপজেলায় লিচু চাষির সংখ্যা তিনি জানেন না। ফলন ও চাষির সংখ্যা জানতে পরে আসার পরামর্শ দেন এ প্রতিবেদককে।