০৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিকদেরও একটা রাজনীতি আছে : মাহমুদা চৌধুরী

স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবাদিকতায় যেসব নারী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম মাহমুদা চৌধুরী। তিনি চল্লিশ বছর ধরে এই পেশায় থেকে পেশাকে সমৃদ্ধ করেছেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতা ক্যারিয়ারে পেরিয়েছেন নানা চড়াই-উৎরাই। তিনি একান্ত আলাপচারিতায় বলেছেন, তার জীবনের না বলা অনেক কথা। তার সাক্ষাতকার নিয়েছেন দৈনিক সবুজ বাংলা’র রিপোর্টার তাসকিনা ইয়াসমিন। আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার সাক্ষাতকার ছাপা হচ্ছে।

পর্ব – ৫

আমার দূর্ভাগ্য যে, শাহাদাত চৌধুরী আমাকে কোনদিন স্টাফ করে নাই

আরেকজন ছিল সেও খুব জেলাস থাকত। আমার দূর্ভাগ্য যে, শাহাদাত চৌধুরী আমাকে কোনদিন স্টাফ করেনাই। পরবর্তীতে বিচিত্রা যেন বন্ধ হয়ে গেল তখন কিন্তু আমি অলরেডি দৈনিক দিনকালের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার হয়ে গেছি। তখন আমাকে ডাকল তার সাপ্তাহিকে জয়েন করার জন্য। তখন আমি দৈনিক রেখে সাপ্তাহিকে কেন যাব? আমি যাইনি। তখন শাহাদাত ভাই একটু মনোক্ষুন্ন হয়েছিল। তিনি তার পাশের মানুষদের বলেছেন, (এক্ষেত্রে মেয়েদের বিরুদ্ধে পলিটিক্সটা কি দেখ!) মাহমুদার ওখানে অনেক বন্ধু হয়ে গেছে। তাই সে আমার এই কাগজে আসল না। আসলে তো তা না। ডেইলি ছেড়ে আমি সাপ্তাহিকে  কেন যাব? আমাকে এত বছর ধরে খাটিয়েছে আমার মূল্যায়ন নাই। সেখানে আমার নিজেরওতো একটা কষ্ট থাকতে পারে। একটা ছেলেকেতো এই অবমূল্যায়ন করা হয়নি, কিন্তু আমি মেয়ে বলে, আমাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। কোন মেয়েকে সে বিচিত্রার স্টাফ রিপোর্টার পদ দেয়নি। কখ্খোনা দেয়নি। আরও কিছু ঘটনা আছে যেগুলি আমার কাছে শকিং মনে হয়েছে।

সাংবাদিক সমাজের মধ্যে যে পলিটিক্সটা কাজ করছে এটা আমাদের জন্য বেশি ক্ষতিকর:

সাংবাদিক সমাজের মধ্যে যে পলিটিক্সটা কাজ করছে এটা আমাদের জন্য বেশি ক্ষতিকর। না হলে, আমরা সাংবাদিকরা বিশেষ করে মেয়েরা আরও অনেকদূর এগিয়ে যেতাম। দিল্লীতে শুধু মেয়ে সাংবাদিকদের আলাদা একটা প্রেসক্লাব আছে। পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে কিনা আমার জানা নেই। আবার দেখ মেয়েদের জন্য কত সমস্যা? তুমি একজন রিপোর্টার, আমি একজন রিপোর্টার, তুমি যখন একটা সংগঠনে থাক, মহিলা সম্পাদক বলে একটা পদ সৃষ্টি করা হয়। তখন দেখ মেয়েরা এই পদের জন্য লড়াই করে। একটা মেয়ে অন্য মেয়ের পদের বিপরীতে এই পোস্টে কেন দাঁড়াব? এখানে তো একটি মেয়েই কনটেস্ট করবে। কোন ছেলে করবে না!
এটা আমার কাছে পোস্ট ডিস্ক্রিমিনেশন মনে হয়। আমি তো প্রেসিডেন্ট ইলেকশন করেছি। ৪৭ ভোটে আমি হেরে গেছি।

এতবড় কমিউনিটি। আমি তো সবার কাছে পৌঁছাতে পারিনি। তাছাড়া হয় কি, আমি একটা মেয়ে কাজ শেষে ঘরে ফিরে আসি। একটা ছেলে কিন্তু ঘরে ফিরে আসেনা। সে আড্ডা মারে। সঙ্গে সঙ্গে কোথায় কি হচ্ছে আলোচনা করে। সবকিছু সে জানতে পারে। মেয়েটা কিন্তু পায়না। এজন্য আমার মনে হয়, মেয়েদের জন্য আলাদা প্রেসক্লাব দরকার। এই পলিটিক্সের মধ্যে আমরা মেয়ে সাংবাদিকরা যে আছি এটা বোঝা যায়।

 আগামীকাল ষষ্ঠ পর্ব প্রকাশিত হবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

সুন্দরগঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে জামায়াত প্রার্থীর মতবিনিময়

সাংবাদিকদেরও একটা রাজনীতি আছে : মাহমুদা চৌধুরী

আপডেট সময় : ০৭:৪০:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবাদিকতায় যেসব নারী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম মাহমুদা চৌধুরী। তিনি চল্লিশ বছর ধরে এই পেশায় থেকে পেশাকে সমৃদ্ধ করেছেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতা ক্যারিয়ারে পেরিয়েছেন নানা চড়াই-উৎরাই। তিনি একান্ত আলাপচারিতায় বলেছেন, তার জীবনের না বলা অনেক কথা। তার সাক্ষাতকার নিয়েছেন দৈনিক সবুজ বাংলা’র রিপোর্টার তাসকিনা ইয়াসমিন। আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার সাক্ষাতকার ছাপা হচ্ছে।

পর্ব – ৫

আমার দূর্ভাগ্য যে, শাহাদাত চৌধুরী আমাকে কোনদিন স্টাফ করে নাই

আরেকজন ছিল সেও খুব জেলাস থাকত। আমার দূর্ভাগ্য যে, শাহাদাত চৌধুরী আমাকে কোনদিন স্টাফ করেনাই। পরবর্তীতে বিচিত্রা যেন বন্ধ হয়ে গেল তখন কিন্তু আমি অলরেডি দৈনিক দিনকালের সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার হয়ে গেছি। তখন আমাকে ডাকল তার সাপ্তাহিকে জয়েন করার জন্য। তখন আমি দৈনিক রেখে সাপ্তাহিকে কেন যাব? আমি যাইনি। তখন শাহাদাত ভাই একটু মনোক্ষুন্ন হয়েছিল। তিনি তার পাশের মানুষদের বলেছেন, (এক্ষেত্রে মেয়েদের বিরুদ্ধে পলিটিক্সটা কি দেখ!) মাহমুদার ওখানে অনেক বন্ধু হয়ে গেছে। তাই সে আমার এই কাগজে আসল না। আসলে তো তা না। ডেইলি ছেড়ে আমি সাপ্তাহিকে  কেন যাব? আমাকে এত বছর ধরে খাটিয়েছে আমার মূল্যায়ন নাই। সেখানে আমার নিজেরওতো একটা কষ্ট থাকতে পারে। একটা ছেলেকেতো এই অবমূল্যায়ন করা হয়নি, কিন্তু আমি মেয়ে বলে, আমাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। কোন মেয়েকে সে বিচিত্রার স্টাফ রিপোর্টার পদ দেয়নি। কখ্খোনা দেয়নি। আরও কিছু ঘটনা আছে যেগুলি আমার কাছে শকিং মনে হয়েছে।

সাংবাদিক সমাজের মধ্যে যে পলিটিক্সটা কাজ করছে এটা আমাদের জন্য বেশি ক্ষতিকর:

সাংবাদিক সমাজের মধ্যে যে পলিটিক্সটা কাজ করছে এটা আমাদের জন্য বেশি ক্ষতিকর। না হলে, আমরা সাংবাদিকরা বিশেষ করে মেয়েরা আরও অনেকদূর এগিয়ে যেতাম। দিল্লীতে শুধু মেয়ে সাংবাদিকদের আলাদা একটা প্রেসক্লাব আছে। পৃথিবীর আর কোন দেশে আছে কিনা আমার জানা নেই। আবার দেখ মেয়েদের জন্য কত সমস্যা? তুমি একজন রিপোর্টার, আমি একজন রিপোর্টার, তুমি যখন একটা সংগঠনে থাক, মহিলা সম্পাদক বলে একটা পদ সৃষ্টি করা হয়। তখন দেখ মেয়েরা এই পদের জন্য লড়াই করে। একটা মেয়ে অন্য মেয়ের পদের বিপরীতে এই পোস্টে কেন দাঁড়াব? এখানে তো একটি মেয়েই কনটেস্ট করবে। কোন ছেলে করবে না!
এটা আমার কাছে পোস্ট ডিস্ক্রিমিনেশন মনে হয়। আমি তো প্রেসিডেন্ট ইলেকশন করেছি। ৪৭ ভোটে আমি হেরে গেছি।

এতবড় কমিউনিটি। আমি তো সবার কাছে পৌঁছাতে পারিনি। তাছাড়া হয় কি, আমি একটা মেয়ে কাজ শেষে ঘরে ফিরে আসি। একটা ছেলে কিন্তু ঘরে ফিরে আসেনা। সে আড্ডা মারে। সঙ্গে সঙ্গে কোথায় কি হচ্ছে আলোচনা করে। সবকিছু সে জানতে পারে। মেয়েটা কিন্তু পায়না। এজন্য আমার মনে হয়, মেয়েদের জন্য আলাদা প্রেসক্লাব দরকার। এই পলিটিক্সের মধ্যে আমরা মেয়ে সাংবাদিকরা যে আছি এটা বোঝা যায়।

 আগামীকাল ষষ্ঠ পর্ব প্রকাশিত হবে।