০৭:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বশেমুরবিপ্রবিতে ২ শিক্ষক দিয়ে চলছে বিভাগ

দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ মাত্র ২জন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিভাগ! বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও হয়নি কোনো প্রতিকার। বাধ্য হয়ে গতকাল রবিবার(২জুন) উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এতে আশানুরূপ ফল না পেয়ে আজ সোমবার(৩জুন) উপাচার্যের  বাসভবন অবরোধ  করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি) এনিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএসভিএম)  বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নিজেদের বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন।
সোমবার দিনভর ওই বিভাগের দুই শতাধিক  শিক্ষার্থী উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান করে। এসময় শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিভাগের অফিসরুম ও শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ করে  দিনব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করে। এর আগে গত রোববার থেকে তারা উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। এসময়ে  তারা  পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, ল্যাবের পর্যাপ্ত সুবিধা ও সেশনজট থেকে মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদী মিছিল করেছিলেন বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এএসভিএম বিভাগেও পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা পাঠগ্রহণে প্রতিনিয়ত নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন  হচ্ছেন। বিভাগটির ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মোট ছয়টি ব্যাচের পাঠদান চলছে মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে। বর্তমানে এমন শিক্ষক সংকটে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা চরম সমস্যার সম্মুখীন। জানা যায়, বিভাগটিতে পাঁচ বর্ষের সর্বমোট ১০ সেমিস্টারে মোট ২০১টি ক্রেডিটের তত্ত্বীয় ও ল্যাব রয়েছে। বিভাগটিতে পাঁচ বর্ষে দেশি ও বিদেশি তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিভাগটিতে মোট তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হুর-ই-জান্নাত ও ড. মার্জিয়া আফরোজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকলেও আরেক শিক্ষক শরিফুজ্জামান ২০২২ সালের আগস্ট মাসে শিক্ষা ছুটিতে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এছাড়াও বিভাগটির সদ্য সাবেক সভাপতি ড. নাজমুল হক গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি নিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। শিক্ষক সংকটের কারণে বিভাগটির চতুর্থ বর্ষের সব ক্লাস বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অতিথি শিক্ষক অনলাইনে করাচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও তারা কোন শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে না। যেটি তাদের জন্য দুঃখের বিষয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, পর্যাপ্ত শিক্ষক ও যথাযথ ল্যাবের সুযোগ না থাকায় আমরা প্রতিনিয়ত নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এছাড়াও সেশনজটের কারণে আমরা চাকরির প্রতিযোগিতায়ও পিছিয়ে যাচ্ছি। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সমস্যার সমাধান করুক।
শিক্ষক সংকটের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, শিক্ষক সংকট মোকাবিলায় উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এ বিষয়ে আমরা উপাচার্যের সাথে কথা বলব।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুবের সাথে মুঠোফোনে(দপ্তর তালাবদ্ধ) যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে নিজের অপারগতা  প্রকাশ করে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলম বলেন, এ বিষয় উপাচার্যের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। শিক্ষক সংকটের অন্যতম কারণ হচ্ছে তিনি  শিক্ষক অনুপাতে বেশি শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটি দিয়েছেন। তাকে অনুরোধ করছি যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি তিনি না ঘটান।
জনপ্রিয় সংবাদ

মালিকানা বদলের পর ১ কোটি ১০ লাখ টাকা কী পাবেন নাঈম?

বশেমুরবিপ্রবিতে ২ শিক্ষক দিয়ে চলছে বিভাগ

আপডেট সময় : ০৮:০৪:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪
দীর্ঘ ৬ মাস যাবৎ মাত্র ২জন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিভাগ! বারবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও হয়নি কোনো প্রতিকার। বাধ্য হয়ে গতকাল রবিবার(২জুন) উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এতে আশানুরূপ ফল না পেয়ে আজ সোমবার(৩জুন) উপাচার্যের  বাসভবন অবরোধ  করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি) এনিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন (এএসভিএম)  বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নিজেদের বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন।
সোমবার দিনভর ওই বিভাগের দুই শতাধিক  শিক্ষার্থী উপাচার্য ভবনের সামনে অবস্থান করে। এসময় শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিভাগের অফিসরুম ও শ্রেণিকক্ষ তালাবদ্ধ করে  দিনব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করে। এর আগে গত রোববার থেকে তারা উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। এসময়ে  তারা  পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ, ল্যাবের পর্যাপ্ত সুবিধা ও সেশনজট থেকে মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদী মিছিল করেছিলেন বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এএসভিএম বিভাগেও পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা পাঠগ্রহণে প্রতিনিয়ত নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন  হচ্ছেন। বিভাগটির ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মোট ছয়টি ব্যাচের পাঠদান চলছে মাত্র দুজন শিক্ষক দিয়ে। বর্তমানে এমন শিক্ষক সংকটে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা চরম সমস্যার সম্মুখীন। জানা যায়, বিভাগটিতে পাঁচ বর্ষের সর্বমোট ১০ সেমিস্টারে মোট ২০১টি ক্রেডিটের তত্ত্বীয় ও ল্যাব রয়েছে। বিভাগটিতে পাঁচ বর্ষে দেশি ও বিদেশি তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিভাগটিতে মোট তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে সহকারী অধ্যাপক হুর-ই-জান্নাত ও ড. মার্জিয়া আফরোজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকলেও আরেক শিক্ষক শরিফুজ্জামান ২০২২ সালের আগস্ট মাসে শিক্ষা ছুটিতে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এছাড়াও বিভাগটির সদ্য সাবেক সভাপতি ড. নাজমুল হক গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অব্যাহতি নিয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। শিক্ষক সংকটের কারণে বিভাগটির চতুর্থ বর্ষের সব ক্লাস বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অতিথি শিক্ষক অনলাইনে করাচ্ছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও তারা কোন শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে না। যেটি তাদের জন্য দুঃখের বিষয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, পর্যাপ্ত শিক্ষক ও যথাযথ ল্যাবের সুযোগ না থাকায় আমরা প্রতিনিয়ত নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। এছাড়াও সেশনজটের কারণে আমরা চাকরির প্রতিযোগিতায়ও পিছিয়ে যাচ্ছি। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই সমস্যার সমাধান করুক।
শিক্ষক সংকটের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, শিক্ষক সংকট মোকাবিলায় উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এ বিষয়ে আমরা উপাচার্যের সাথে কথা বলব।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুবের সাথে মুঠোফোনে(দপ্তর তালাবদ্ধ) যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে নিজের অপারগতা  প্রকাশ করে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুল আলম বলেন, এ বিষয় উপাচার্যের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। শিক্ষক সংকটের অন্যতম কারণ হচ্ছে তিনি  শিক্ষক অনুপাতে বেশি শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটি দিয়েছেন। তাকে অনুরোধ করছি যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি তিনি না ঘটান।