০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিরতিতে নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন চায় যুক্তরাষ্ট্র

❖দেশত্যাগের হুমকি ইসরায়েলি চিকিৎসকদের
❖গাজায় যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল : জাতিসংঘ
❖হামাসের হাতে আরো ৪ জিম্মির মৃত্যু : ইসরায়েল

 

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা করা গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অনুমোদনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খসড়ায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে ওই পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, অসংখ্য নেতা ও সরকার, যাদের মধ্যে ওই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) রাষ্ট্রগুলোও রয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছে। এদিকে গতকাল মার্কিন-প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে মালয়েশিয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, গাজার পরিস্থিতি ‘খুবই খারাপ’। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ব্যাপকভাবে যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল।

খসড়া প্রস্তাবের একটি অনুলিপিতে গত ৩১ মে ঘোষণা করা নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে হামাসকে এটি পুরোপুরি মেনে নেওয়ার ও দেরি না করে কোনো শর্ত ছাড়াই তা কার্যকরের আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

গত শুক্রবার বাইডেন প্রশাসন নতুন ওই যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ঘোষণা করে। বাইডেন এ পরিকল্পনার রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইসরায়েল এ পরিকল্পনা ‘মেনে নিয়েছে’। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, গাজায় ‘নিজেদের লক্ষ্য (হামাসকে নির্মূল) অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত’ যুদ্ধ চলবে। বাইডেনের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার বিষয়ে হামাস গত সপ্তাহে বলেছে, তারা এটি ‘ইতিবাচকভাবে’ দেখছে।

 

দেশত্যাগের হুমকি ইসরায়েলি চিকিৎসকদের :
গাজায় হামাসের হাতে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে খোদ ইসরায়েলি নাগরিকরাও। এরই মধ্যে অভিনব এক দাবিতে ইসরায়েল ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির চিকিৎসকরা। বলা হচ্ছে, এ ঘোষণা শুধু অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতাই তৈরি করবে না বরং ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেও হুমকির মুখে ফেলবে।

ইসরায়েলি চিকিৎসকদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার হুমকি মূলত ইহুদি ধর্মের কট্টরপন্থি অংশের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে থাকা একটি আইনকে কেন্দ্র করে। ইসরায়েলের আইন অনুসারে প্রত্যেক নাগরিকের বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা দিতে হলেও এ আইনের আওতায় আসেন না হারেদি ইহুদিরা। তারা মূলত ধর্মপালনেই বেশি আগ্রহী হয়ে থাকে। এমনকি এসব ইহুদিরা ইসরায়েল রাষ্ট্রেরও বিরোধী। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি চিকিৎসকরা মনে করেন, হারেদি ইহুদিরা সেনাবাহিনীতে যোগ না দেওয়ায় সমাজে অসমতা তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে হারেদির জন্য সংরক্ষিত পরিষেবার মেয়াদ বাড়ানোরও বিরোধী চিকিৎসকরা। দেশটির হাজার হাজার চিকিৎসক জানিয়েছেন, যদি হারেদিদের সেনাবাহিনীতে না নেওয়া হয়, তাহলে তারা ইসরায়েল ছেড়ে চিরতরে চলে যাবেন।

 

হামাসের হাতে আরো ৪ জিম্মির মৃত্যু :
গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি থাকা আরো চার ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে দখলদার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সময় এই চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে তাঁদের মরদেহ হামাসের জিম্মায় আছে। নিহত চারজন হলেন- ব্রিটিশ-ইসরায়েলি নাদাভ পোপেলওয়েল (৫১), চেইম পেরি (৭৯), ইয়োরাম মেতজার (৮০) ও আমিরাম কুপার (৮৫)। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই চার ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা গেছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

 

গাজায় অর্ধেকের বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা ধ্বংস :
গত সোমবার জাতিসংঘের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ সংস্থা ইউএনওএসএটি এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজায় প্রায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় সেখানকার ৫৫ শতাংশ বাড়িঘর, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, এক লাখ ৩৭ হাজারের বেশি ভবন হামলার শিকার হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে একেবারে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ৩৬ হাজার ৫৯১টি অবকাঠামো শনাক্ত করা হয়েছে। ১৬ হাজার ৫১৩টি অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হালকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৪৭,৩৬৮টি অবকাঠামোর। এ ছাড়া আরও ৩৬ হাজার ৮২৫টি অবকাঠামো কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এবং গাজার উত্তরাঞ্চল। গত বছরের সেপ্টেম্বর এবং ১৫ অক্টোবর তোলা চিত্রের সঙ্গে তুলনা করে ক্ষয়ক্ষতির এ হিসাব প্রকাশ করা হয়।

 

 

হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় ইসরায়েলজুড়ে দাবানল :
গত সোমবার রাত থেকে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে রকেট ও ড্রোনের সাহায্যে হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলজুড়ে তীব্র দাবানল ছড়িয়েছে। তবে ঠিক কতটি রকেট বা কতগুলো ড্রোনের সাহায্যে এই হামলা চালানো হয়েছে- এ ব্যাপারে কোনো তথ্য না জানালেও ইসরায়েলের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস জানিয়েছে, ৩০টিরও বেশি অগ্নিনির্বাপক ক্রু আগুন নেভানোর কাজ করছে। এতে করে গ্যালিলি এলাকার বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি এলাকা পুড়ে গেছে। তবে দমকল বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে মানুষের জীবন বা বাড়ি-ঘর কোনো ধরনের হুমকির মধ্যে নেই। তবে এই হামলায় ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকা।

 

 

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে সব দেশকে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের আহ্বান :
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ। গত সোমবার ফিলিস্তিনি অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ারসহ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার প্রতি তাদের সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। এটি ফিলিস্তিন ও সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য একটি পূর্বশর্ত, যা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং রাফাতে সামরিক অনুপ্রবেশ বন্ধের মাধ্যমে শুরু হবে। একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল- উভয়ের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার একমাত্র আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত পথ এবং প্রজন্মের সহিংসতা ও অসন্তোষের চক্র থেকে বেরিয়ে আসার পথ। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

যুদ্ধবিরতিতে নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থন চায় যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৮:৪৪:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

❖দেশত্যাগের হুমকি ইসরায়েলি চিকিৎসকদের
❖গাজায় যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল : জাতিসংঘ
❖হামাসের হাতে আরো ৪ জিম্মির মৃত্যু : ইসরায়েল

 

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা করা গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অনুমোদনে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খসড়ায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে ওই পরিকল্পনা মেনে নেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, অসংখ্য নেতা ও সরকার, যাদের মধ্যে ওই অঞ্চলের (মধ্যপ্রাচ্য) রাষ্ট্রগুলোও রয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় সমর্থন দিয়েছে। এদিকে গতকাল মার্কিন-প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে মালয়েশিয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, গাজার পরিস্থিতি ‘খুবই খারাপ’। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ব্যাপকভাবে যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল।

খসড়া প্রস্তাবের একটি অনুলিপিতে গত ৩১ মে ঘোষণা করা নতুন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে হামাসকে এটি পুরোপুরি মেনে নেওয়ার ও দেরি না করে কোনো শর্ত ছাড়াই তা কার্যকরের আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

গত শুক্রবার বাইডেন প্রশাসন নতুন ওই যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ঘোষণা করে। বাইডেন এ পরিকল্পনার রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইসরায়েল এ পরিকল্পনা ‘মেনে নিয়েছে’। যদিও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেছেন, গাজায় ‘নিজেদের লক্ষ্য (হামাসকে নির্মূল) অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত’ যুদ্ধ চলবে। বাইডেনের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার বিষয়ে হামাস গত সপ্তাহে বলেছে, তারা এটি ‘ইতিবাচকভাবে’ দেখছে।

 

দেশত্যাগের হুমকি ইসরায়েলি চিকিৎসকদের :
গাজায় হামাসের হাতে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি এবং যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে খোদ ইসরায়েলি নাগরিকরাও। এরই মধ্যে অভিনব এক দাবিতে ইসরায়েল ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির চিকিৎসকরা। বলা হচ্ছে, এ ঘোষণা শুধু অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতাই তৈরি করবে না বরং ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বকেও হুমকির মুখে ফেলবে।

ইসরায়েলি চিকিৎসকদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার হুমকি মূলত ইহুদি ধর্মের কট্টরপন্থি অংশের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে থাকা একটি আইনকে কেন্দ্র করে। ইসরায়েলের আইন অনুসারে প্রত্যেক নাগরিকের বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা দিতে হলেও এ আইনের আওতায় আসেন না হারেদি ইহুদিরা। তারা মূলত ধর্মপালনেই বেশি আগ্রহী হয়ে থাকে। এমনকি এসব ইহুদিরা ইসরায়েল রাষ্ট্রেরও বিরোধী। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি চিকিৎসকরা মনে করেন, হারেদি ইহুদিরা সেনাবাহিনীতে যোগ না দেওয়ায় সমাজে অসমতা তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে হারেদির জন্য সংরক্ষিত পরিষেবার মেয়াদ বাড়ানোরও বিরোধী চিকিৎসকরা। দেশটির হাজার হাজার চিকিৎসক জানিয়েছেন, যদি হারেদিদের সেনাবাহিনীতে না নেওয়া হয়, তাহলে তারা ইসরায়েল ছেড়ে চিরতরে চলে যাবেন।

 

হামাসের হাতে আরো ৪ জিম্মির মৃত্যু :
গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি থাকা আরো চার ব্যক্তির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে দখলদার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। খান ইউনিসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের সময় এই চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে তাঁদের মরদেহ হামাসের জিম্মায় আছে। নিহত চারজন হলেন- ব্রিটিশ-ইসরায়েলি নাদাভ পোপেলওয়েল (৫১), চেইম পেরি (৭৯), ইয়োরাম মেতজার (৮০) ও আমিরাম কুপার (৮৫)। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দানিয়েল হাগারি বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই চার ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানা গেছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

 

গাজায় অর্ধেকের বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা ধ্বংস :
গত সোমবার জাতিসংঘের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ সংস্থা ইউএনওএসএটি এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজায় প্রায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় সেখানকার ৫৫ শতাংশ বাড়িঘর, দোকানপাট ও বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, এক লাখ ৩৭ হাজারের বেশি ভবন হামলার শিকার হয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে একেবারে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ৩৬ হাজার ৫৯১টি অবকাঠামো শনাক্ত করা হয়েছে। ১৬ হাজার ৫১৩টি অবকাঠামো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হালকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৪৭,৩৬৮টি অবকাঠামোর। এ ছাড়া আরও ৩৬ হাজার ৮২৫টি অবকাঠামো কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এবং গাজার উত্তরাঞ্চল। গত বছরের সেপ্টেম্বর এবং ১৫ অক্টোবর তোলা চিত্রের সঙ্গে তুলনা করে ক্ষয়ক্ষতির এ হিসাব প্রকাশ করা হয়।

 

 

হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় ইসরায়েলজুড়ে দাবানল :
গত সোমবার রাত থেকে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে রকেট ও ড্রোনের সাহায্যে হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলজুড়ে তীব্র দাবানল ছড়িয়েছে। তবে ঠিক কতটি রকেট বা কতগুলো ড্রোনের সাহায্যে এই হামলা চালানো হয়েছে- এ ব্যাপারে কোনো তথ্য না জানালেও ইসরায়েলের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সার্ভিস জানিয়েছে, ৩০টিরও বেশি অগ্নিনির্বাপক ক্রু আগুন নেভানোর কাজ করছে। এতে করে গ্যালিলি এলাকার বেশ কয়েকটি প্রধান সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি এলাকা পুড়ে গেছে। তবে দমকল বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে মানুষের জীবন বা বাড়ি-ঘর কোনো ধরনের হুমকির মধ্যে নেই। তবে এই হামলায় ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকা।

 

 

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে সব দেশকে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের আহ্বান :
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ। গত সোমবার ফিলিস্তিনি অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ারসহ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতা ও স্বাধীনতার প্রতি তাদের সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। এটি ফিলিস্তিন ও সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য একটি পূর্বশর্ত, যা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং রাফাতে সামরিক অনুপ্রবেশ বন্ধের মাধ্যমে শুরু হবে। একটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল- উভয়ের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার একমাত্র আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত পথ এবং প্রজন্মের সহিংসতা ও অসন্তোষের চক্র থেকে বেরিয়ে আসার পথ। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।