০৮:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীমান্তে বিজিবি’র অভিযান চার কোটি টাকার ভারতীয় চোরাচালানী পণ্য জব্দ

চুরির সাড়ে ২৩ লাখ টাকাসহ চালকের সহযোগী গ্রেপ্তার

দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও ফেনীর সীমান্ত এলাকা থেকে চার কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ চোরাচালানী পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এছাড়া এক রিয়েল স্টেটেট ব্যবসায়ী চুরি করা ২৪ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে ২৩ লাখ টাকাসহ ব্যবসায়ীর গাড়িচালকের সহযোগী মো. মাসুদ হাওলাদার ওরফে মাসুমকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে দৈনিক সবুজ বাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম ও ডিএমপি’র মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

বিজিবি জানায়, গতকাল সকালে গোপন সংবাদে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর অধীনস্থ শ্রীপুর, তামাবিল, সংগ্রাম, সোনারহাট, প্রতাপপুর, পান্থুমাই, উৎমা, মিনাটিলা, কালাইরাগ, কালাসাদেক এবং বাংলাবাজার বিওপির টহলদল সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালায়। এ সময় ১ কোটি ৬৫ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন প্রসাধণী পণ্যসহ অন্যান্য মালামাল জব্দ করা হয়। এর আগে গত ২১ ও ২২ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালায় বিজিবির সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়নের পৃথক দল। এ সময় ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য ১ কোটি ২১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭০ টাকা। এ ব্যাপারে সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধনিায়ক লে. কর্ণেল মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। জব্দকৃত চোরচালানীর বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে গত ২২ নভেম্বর গোপন সংবাদে ফেনীর ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার রাজেষপুর, দেবপুর, ছাগলনাইয়া, চম্পকনগর ও মধুগ্রাম বিওপির সীমান্তবর্তী এলাকায় পৃথক অভিযান চালায় বিবিজির ফেনী ৪ ব্যাটালিয়নের পৃথক দল। এ সময় বিপুল সংখ্যক ভারতীয় লেহেঙ্গা, শাড়ি, কাশ্মিরী শাল, থ্রীপিস, চশমা এবং ভারতীয় ২০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে বিজিবির ফেনী ৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, জব্দকৃত মালামাল কাস্টমস্ এবং গাঁজা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে অপরাধ ও চোরাচালানী বন্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অপরদিকে ডিএমপি’র মিডিয়া সেলের ডিসি তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীর শাহবাগ থানা এলাকা থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী স্বপন সাহার ২৪ লাখ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায় তার গাড়ি চালক ও চালকের সহযোগী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি শাহবাগ থানায় একটি চুরির মামলা রুজু করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, শান্তা কনস্ট্রাকশনের মালিক স্বপন সাহা একজন রিয়েল এস্ট্রেট ব্যবসায়ী। গত ২১ নভেম্বর স্বপন সাহা সকাল ১০টার দিকে ড্রাইভারকে নিয়ে তার গাড়িযোগে প্রথমে মতিঝিলের একটি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ ও পরে গুলশানের একটি ব্যাংক থেকে ৫ লাখসহ মোট ২৫ লাখ টাকা তুলে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। পথে স্বপন সাহা তার পরিচিত এক ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা প্রদান করেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় বাসার নিচে গ্যারেজে গাড়ির ভিতরে একটি ব্যাগের মধ্যে বাকী ২৪ লাখ টাকা রেখে ড্রাইভারকে খাবার খেয়ে আসতে বলে ব্যবসায়ী তার ফ্ল্যাটের বাসায় যান। বিকেল সোয়া ৪টায় গ্যারেজে এসে দেখেন চালক নেই। গাড়ির ভেতরে সিটে রাখা টাকার ব্যাগও নেই। এ সময় বাসার নিরাপত্তা কর্মীর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, ড্রাইভার গাড়ি থেকে একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে বাইরে চলে যান। এরপর তিনি ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। পরে তার ভাড়া বাসায় এবং গ্রামের বাড়িতে শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ডিসি তালেবুর রহমান আরও জানান, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে ড্রাইভারের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গত ২২ নভেম্বর দিবাগত রাত পৌনে ৩টায় চট্টগ্রাম ডিবি পুলিশের সহায়তায় চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী স্বপন সাহার চুরি হওয়া ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। গ্রেপ্তার করা হয় ড্রাইভারের সহাযোগী মাসুদকে। পলাতক ড্রাইভারকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার মাসুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

অপরাধমুক্ত স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে আনসার-ভিডিপিকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান

সীমান্তে বিজিবি’র অভিযান চার কোটি টাকার ভারতীয় চোরাচালানী পণ্য জব্দ

আপডেট সময় : ০৭:১৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও ফেনীর সীমান্ত এলাকা থেকে চার কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ চোরাচালানী পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এছাড়া এক রিয়েল স্টেটেট ব্যবসায়ী চুরি করা ২৪ লাখ টাকার মধ্যে সাড়ে ২৩ লাখ টাকাসহ ব্যবসায়ীর গাড়িচালকের সহযোগী মো. মাসুদ হাওলাদার ওরফে মাসুমকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেলে দৈনিক সবুজ বাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম ও ডিএমপি’র মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

বিজিবি জানায়, গতকাল সকালে গোপন সংবাদে সিলেট ব্যাটালিয়ন (৪৮ বিজিবি) এর অধীনস্থ শ্রীপুর, তামাবিল, সংগ্রাম, সোনারহাট, প্রতাপপুর, পান্থুমাই, উৎমা, মিনাটিলা, কালাইরাগ, কালাসাদেক এবং বাংলাবাজার বিওপির টহলদল সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় চোরাচালান বিরোধী অভিযান চালায়। এ সময় ১ কোটি ৬৫ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন প্রসাধণী পণ্যসহ অন্যান্য মালামাল জব্দ করা হয়। এর আগে গত ২১ ও ২২ নভেম্বর সকাল পর্যন্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় পৃথক অভিযান চালায় বিজিবির সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়নের পৃথক দল। এ সময় ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য ১ কোটি ২১ লাখ ৬৩ হাজার ৭৭০ টাকা। এ ব্যাপারে সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধনিায়ক লে. কর্ণেল মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। জব্দকৃত চোরচালানীর বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে গত ২২ নভেম্বর গোপন সংবাদে ফেনীর ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার রাজেষপুর, দেবপুর, ছাগলনাইয়া, চম্পকনগর ও মধুগ্রাম বিওপির সীমান্তবর্তী এলাকায় পৃথক অভিযান চালায় বিবিজির ফেনী ৪ ব্যাটালিয়নের পৃথক দল। এ সময় বিপুল সংখ্যক ভারতীয় লেহেঙ্গা, শাড়ি, কাশ্মিরী শাল, থ্রীপিস, চশমা এবং ভারতীয় ২০ কেজি গাঁজা জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে বিজিবির ফেনী ৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, জব্দকৃত মালামাল কাস্টমস্ এবং গাঁজা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে অপরাধ ও চোরাচালানী বন্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অপরদিকে ডিএমপি’র মিডিয়া সেলের ডিসি তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীর শাহবাগ থানা এলাকা থেকে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী স্বপন সাহার ২৪ লাখ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায় তার গাড়ি চালক ও চালকের সহযোগী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি শাহবাগ থানায় একটি চুরির মামলা রুজু করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, শান্তা কনস্ট্রাকশনের মালিক স্বপন সাহা একজন রিয়েল এস্ট্রেট ব্যবসায়ী। গত ২১ নভেম্বর স্বপন সাহা সকাল ১০টার দিকে ড্রাইভারকে নিয়ে তার গাড়িযোগে প্রথমে মতিঝিলের একটি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ ও পরে গুলশানের একটি ব্যাংক থেকে ৫ লাখসহ মোট ২৫ লাখ টাকা তুলে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। পথে স্বপন সাহা তার পরিচিত এক ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা প্রদান করেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় বাসার নিচে গ্যারেজে গাড়ির ভিতরে একটি ব্যাগের মধ্যে বাকী ২৪ লাখ টাকা রেখে ড্রাইভারকে খাবার খেয়ে আসতে বলে ব্যবসায়ী তার ফ্ল্যাটের বাসায় যান। বিকেল সোয়া ৪টায় গ্যারেজে এসে দেখেন চালক নেই। গাড়ির ভেতরে সিটে রাখা টাকার ব্যাগও নেই। এ সময় বাসার নিরাপত্তা কর্মীর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি জানান, ড্রাইভার গাড়ি থেকে একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে বাইরে চলে যান। এরপর তিনি ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। পরে তার ভাড়া বাসায় এবং গ্রামের বাড়িতে শাহবাগ থানার তদন্ত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ডিসি তালেবুর রহমান আরও জানান, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তকালে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে ড্রাইভারের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর গত ২২ নভেম্বর দিবাগত রাত পৌনে ৩টায় চট্টগ্রাম ডিবি পুলিশের সহায়তায় চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী স্বপন সাহার চুরি হওয়া ২৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। গ্রেপ্তার করা হয় ড্রাইভারের সহাযোগী মাসুদকে। পলাতক ড্রাইভারকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার মাসুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।