১১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিরীয়ার সংঘাতে রাশিয়া-তুরস্ক মুখোমুখির শঙ্কা

  • ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দামেস্ক সফর
  •  সিরীয় সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
  •  সিরিয়ার অপারেশন জেনারেল ইনচার্জকে সরাল রাশিয়া
  •  রুশ বিমান হামলা অব্যাহত
  • সিরিয়া সংকটে মুসলিম দেশগুলোকে পেজেশকিয়ান

সিরিয়ার সামরিক বাহিনী গত রোববার দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহীদের থামানোর জন্য বাড়তি সৈন্য মোতায়েন এবং বিমান হামলা পরিচালনা করে। একই সময় বিদ্রোহীদের অপ্রত্যাশিত অভিযান প্রতিহত করতে ইরান সিরিয়ার সরকারকে সমর্থন করার অঙ্গীকার করেছে। সিরিয়ার দীর্ঘ-স্থায়ী গৃহযুদ্ধে ইরান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং সামরিক সমর্থন দিয়ে আসছে। কিন্তু গত বুধবার শুরু হওয়া এই সর্বশেষ লড়াই-এ তেহরান দামেস্ককে কী ধরনের সমর্থন দিতে পারবে, তা পরিষ্কার নয়। কথিত জিহাদি সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম-এর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা আলেপ্পো এবং সংলগ্ন ইদলিব প্রদেশের মফস্বল অঞ্চলে হামলা চালায়। এরপর তারা হামা প্রদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ার ফলে মধ্যেপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার আরেকটি জানালা খুলে যাবার সম্ভাবনার সৃষ্টি হলো, যখন ইসরাইল গাজায় হামাস এবং লেবাননেন হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াই করছে। এর ফলে রাশিয়া এবং তুরস্ক একে ওপরের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ সিরিয়াতে তাদের দুজনের নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে।
এদিকে আসাদের দফতর থেকে আসা বিবৃতি অনুযায়ী, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগাহচি দামেস্ক সফরে এসে সিরিয়ার নেতাকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, তেহরান সিরিয়া সরকারের পাল্টা-অভিযানে সমর্থন দিতে প্রস্তুত। জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মেদ বিন যায়েদ আল নাহিয়ানসহ আরব নেতারা আসাদকে ফোন করে সংহতি প্রকাশ করেছেন। বিদ্রোহীরা গত শনিবার আলেপ্পোর বেশির ভাগ এলাকা দখল করে নেয় এবং আশেপাশের মফস্বল অঞ্চলে অগ্রসর হয়। তারা শহরের মুল পানি উত্তোলনের পাম্পিং স্টেশন দখল করে। তবে সিরিয়ার পানি সম্পদমন্ত্রী মোয়াতাজ কাতান সরকারপন্থি শাম এফএম রেডিও স্টেশনকে বলেন যে পাম্পিং স্টেশন এখন আর কাজ করছে না।
এদিকে সরকার সমর্থক আল মায়াদীন টেলিভিশন অনুযায়ী, বিদ্রোহীরা উত্তরের তেল রিফাত শহরেও প্রবেশ করে, যে শহরের নিয়ন্ত্রণ এখন পর্যন্ত সিরিয়া ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স বা এসডিএফ নামের যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর হাতে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সিএনএন-এর স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন অনুষ্ঠানে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৯০০ আমেরিকান সৈন্য আছে, যাদের মুল কাজ হচ্ছে উগ্রপন্থী ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর পুনরুত্থান আটকানো। তবে তারা বর্তমান লড়াই থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। তিনি বলেন, যেসব বিদ্রোহী গোষ্ঠী অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে। ওই সংগঠনের লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা নিয়ে ওয়াশিংটনের গভীর উদ্বেগ রয়েছে।
এই অবস্থায় সিরিয়ার অপারেশন জেনারেল ইনচার্জ সের্গেই কিসেলকে বরখাস্ত করেছে রাশিয়া। গত রোববার এমনটি জানিয়েছে রাশিয়ান যুদ্ধ ব্লগার ও টেলিগ্রাম চ্যানেল ভয়েনি ওসভেডোমিটেল ও রাইবার। তবে বিদ্রোহীদের আলেপ্পো দখল করায় ৫৩ বছর বয়সি কিসেল বরখাস্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক কিছু জানায়নি রাশিয়া। অসমর্থিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিসেলের জায়গায় জেনারেল আলেকজান্ডার চাইকো স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন। মিলিটারি ব্লগগুলোর তথ্য মতে, কিসেলের কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল আগে থেকেই। কেননা, তিনি যখন পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে ১ম গার্ডস ট্যাঙ্ক আর্মিতে কামান্ড করেছিলেন তখনও ইউক্রেন সৈন্যদের হামলার শিকার হতে হয়েছিল রাশিয়াকে। পরে সেখান থেকে তাকে সরিয়ে সিরিয়ায় আনা হয়। যেখানে মনে করা হচ্ছিল তিনি তার লুকানো প্রতিভা প্রকাশ করবেন। সাফল্য বইয়ে আনবেন। কিন্তু এবারও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এছাড়াও যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) বলছে, সিরিয়ায় বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখলের পর আরও অগ্রসর হয়েছে এবং এর মধ্যেই গত রোববার তাদের লক্ষ্য করে অব্যাহত বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলায় আলেপ্পোর একটি হাসপাতালে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইদলিবের উত্তর পশ্চিমে এক হামলায় আরও আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এসওএইচআর। ইদলিবের গ্রামীণ এলাকা ছাড়াও হামা প্রদেশের যেসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীরা নিয়েছে সেখানেও যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা করা হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর এবারই প্রথম সিরিয়ার সরকার আলেপ্পোর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারালো। বিদ্রোহীদের এই বিস্ময়কর নতুন অভিযান শুরু হয়েছে বুধবার থেকে।
এক বিবৃতিতে দেশটির মন্ত্রণালয় বলছে, রাশিয়া ও সিরিয়ার যৌথ যুদ্ধবিমান বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট হামলা করছে এবং কয়েক ডজন আহত ও নিহত হয়েছে। তারা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ থেকে কিছু শহর পুনর্দখল ও বিদ্রোহীদের বাধা দেওয়ার দাবি করেছে। সিরিয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত জেইর ও পেডারসন সতর্ক করে বলেছেন বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে।
এদিকে দেশটিতে তাকফিরি সন্ত্রাসীদের পুনরুত্থানের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল যেন এই পরিস্থিতিতে কোনো সুযোগ নিতে না পারে এবং তাদের শোষণের প্রচেষ্টা প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। গত রোববার ইরানের পার্লামেন্টের একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় মাসুদ পেজেশকিয়ান সিরিয়ার সাম্প্রতিক উন্নয়ন এবং আলেপ্পো ও ইদলিবসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী ও বিদেশি সমর্থিত তাকফিরি সন্ত্রাসীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের বিষয়ে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, মুসলিম দেশগুলো এতে হস্তক্ষেপ করবে এবং এই দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আমেরিকা ও ইসরাইলকে সুযোগ নিতে দেব না

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

সিরীয়ার সংঘাতে রাশিয়া-তুরস্ক মুখোমুখির শঙ্কা

আপডেট সময় : ০৮:১৭:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দামেস্ক সফর
  •  সিরীয় সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
  •  সিরিয়ার অপারেশন জেনারেল ইনচার্জকে সরাল রাশিয়া
  •  রুশ বিমান হামলা অব্যাহত
  • সিরিয়া সংকটে মুসলিম দেশগুলোকে পেজেশকিয়ান

সিরিয়ার সামরিক বাহিনী গত রোববার দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহীদের থামানোর জন্য বাড়তি সৈন্য মোতায়েন এবং বিমান হামলা পরিচালনা করে। একই সময় বিদ্রোহীদের অপ্রত্যাশিত অভিযান প্রতিহত করতে ইরান সিরিয়ার সরকারকে সমর্থন করার অঙ্গীকার করেছে। সিরিয়ার দীর্ঘ-স্থায়ী গৃহযুদ্ধে ইরান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং সামরিক সমর্থন দিয়ে আসছে। কিন্তু গত বুধবার শুরু হওয়া এই সর্বশেষ লড়াই-এ তেহরান দামেস্ককে কী ধরনের সমর্থন দিতে পারবে, তা পরিষ্কার নয়। কথিত জিহাদি সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম-এর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা আলেপ্পো এবং সংলগ্ন ইদলিব প্রদেশের মফস্বল অঞ্চলে হামলা চালায়। এরপর তারা হামা প্রদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ার ফলে মধ্যেপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার আরেকটি জানালা খুলে যাবার সম্ভাবনার সৃষ্টি হলো, যখন ইসরাইল গাজায় হামাস এবং লেবাননেন হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াই করছে। এর ফলে রাশিয়া এবং তুরস্ক একে ওপরের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ সিরিয়াতে তাদের দুজনের নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে।
এদিকে আসাদের দফতর থেকে আসা বিবৃতি অনুযায়ী, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগাহচি দামেস্ক সফরে এসে সিরিয়ার নেতাকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, তেহরান সিরিয়া সরকারের পাল্টা-অভিযানে সমর্থন দিতে প্রস্তুত। জর্ডানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মেদ বিন যায়েদ আল নাহিয়ানসহ আরব নেতারা আসাদকে ফোন করে সংহতি প্রকাশ করেছেন। বিদ্রোহীরা গত শনিবার আলেপ্পোর বেশির ভাগ এলাকা দখল করে নেয় এবং আশেপাশের মফস্বল অঞ্চলে অগ্রসর হয়। তারা শহরের মুল পানি উত্তোলনের পাম্পিং স্টেশন দখল করে। তবে সিরিয়ার পানি সম্পদমন্ত্রী মোয়াতাজ কাতান সরকারপন্থি শাম এফএম রেডিও স্টেশনকে বলেন যে পাম্পিং স্টেশন এখন আর কাজ করছে না।
এদিকে সরকার সমর্থক আল মায়াদীন টেলিভিশন অনুযায়ী, বিদ্রোহীরা উত্তরের তেল রিফাত শহরেও প্রবেশ করে, যে শহরের নিয়ন্ত্রণ এখন পর্যন্ত সিরিয়া ডেমোক্র্যাটিক ফোর্স বা এসডিএফ নামের যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর হাতে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সিএনএন-এর স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন অনুষ্ঠানে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৯০০ আমেরিকান সৈন্য আছে, যাদের মুল কাজ হচ্ছে উগ্রপন্থী ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর পুনরুত্থান আটকানো। তবে তারা বর্তমান লড়াই থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। তিনি বলেন, যেসব বিদ্রোহী গোষ্ঠী অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করে। ওই সংগঠনের লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা নিয়ে ওয়াশিংটনের গভীর উদ্বেগ রয়েছে।
এই অবস্থায় সিরিয়ার অপারেশন জেনারেল ইনচার্জ সের্গেই কিসেলকে বরখাস্ত করেছে রাশিয়া। গত রোববার এমনটি জানিয়েছে রাশিয়ান যুদ্ধ ব্লগার ও টেলিগ্রাম চ্যানেল ভয়েনি ওসভেডোমিটেল ও রাইবার। তবে বিদ্রোহীদের আলেপ্পো দখল করায় ৫৩ বছর বয়সি কিসেল বরখাস্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক কিছু জানায়নি রাশিয়া। অসমর্থিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিসেলের জায়গায় জেনারেল আলেকজান্ডার চাইকো স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন। মিলিটারি ব্লগগুলোর তথ্য মতে, কিসেলের কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল আগে থেকেই। কেননা, তিনি যখন পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে ১ম গার্ডস ট্যাঙ্ক আর্মিতে কামান্ড করেছিলেন তখনও ইউক্রেন সৈন্যদের হামলার শিকার হতে হয়েছিল রাশিয়াকে। পরে সেখান থেকে তাকে সরিয়ে সিরিয়ায় আনা হয়। যেখানে মনে করা হচ্ছিল তিনি তার লুকানো প্রতিভা প্রকাশ করবেন। সাফল্য বইয়ে আনবেন। কিন্তু এবারও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এছাড়াও যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) বলছে, সিরিয়ায় বিদ্রোহীরা আলেপ্পো দখলের পর আরও অগ্রসর হয়েছে এবং এর মধ্যেই গত রোববার তাদের লক্ষ্য করে অব্যাহত বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এই হামলায় আলেপ্পোর একটি হাসপাতালে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইদলিবের উত্তর পশ্চিমে এক হামলায় আরও আটজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এসওএইচআর। ইদলিবের গ্রামীণ এলাকা ছাড়াও হামা প্রদেশের যেসব এলাকার নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীরা নিয়েছে সেখানেও যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা করা হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর এবারই প্রথম সিরিয়ার সরকার আলেপ্পোর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারালো। বিদ্রোহীদের এই বিস্ময়কর নতুন অভিযান শুরু হয়েছে বুধবার থেকে।
এক বিবৃতিতে দেশটির মন্ত্রণালয় বলছে, রাশিয়া ও সিরিয়ার যৌথ যুদ্ধবিমান বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট হামলা করছে এবং কয়েক ডজন আহত ও নিহত হয়েছে। তারা বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ থেকে কিছু শহর পুনর্দখল ও বিদ্রোহীদের বাধা দেওয়ার দাবি করেছে। সিরিয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত জেইর ও পেডারসন সতর্ক করে বলেছেন বেসামরিক নাগরিকদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে।
এদিকে দেশটিতে তাকফিরি সন্ত্রাসীদের পুনরুত্থানের পর তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল যেন এই পরিস্থিতিতে কোনো সুযোগ নিতে না পারে এবং তাদের শোষণের প্রচেষ্টা প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। গত রোববার ইরানের পার্লামেন্টের একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় মাসুদ পেজেশকিয়ান সিরিয়ার সাম্প্রতিক উন্নয়ন এবং আলেপ্পো ও ইদলিবসহ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী ও বিদেশি সমর্থিত তাকফিরি সন্ত্রাসীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের বিষয়ে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, মুসলিম দেশগুলো এতে হস্তক্ষেপ করবে এবং এই দেশের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আমেরিকা ও ইসরাইলকে সুযোগ নিতে দেব না