০২:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংকট

দ্রুত কূটনৈতিক দূরত্ব কেটে যাওয়ার প্রত্যাশা বিশেষজ্ঞদের

 

“ভারত সমতা এবং ন্যায্যতার নীতিতে আসলে এই সংকট কেটে যাবে”
-মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর, চেয়ারম্যান রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

“ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ, সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে ”
-ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। সংখ্যালঘু ইস্যুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিবৃতি এবং অবস্থানে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ছাত্র-জনতার ভারতের আধিপত্যবাদবিরোধী অবস্থানেও সেটি স্পষ্ট। তবে এই কূটনৈতিক দূরত্ব বেশিদিন থাকবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতের দিক থেকে দুই দেশের সম্পর্কে সমতা ও ন্যায্যতার নীতিতে আসলে এবং পিপল টু পিপল সম্পর্ক তৈরির উদ্যোগ আসলে এই কূটনৈতিক দূরত্ব কেটে যাবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের সাথে ভারতের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তাতে হাসিনার পতনের পর ছেদ পড়েছে। ভারতের আধিপত্যবাদী আচরণ ও পিপল টু পিপল সম্পর্ক তৈরির নীতিতে ঘাটতি থাকাই এর মূল কারণ। সেই সাথে দুই দেশের মধ্যে সমতা ও ন্যায্যতার নীতি অনুপস্থিত থাকায় এ দেশের মানুষ ভারতকে ভালোভাবে নিতে পারছে না। তবে ভারত তাদের পররাষ্ট্র নীতি পরিবর্তন করলে দ্রুতই এই কূটনৈতিক দূরত্ব কেটে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
তারা বলছেন, ভারত এবং বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হওয়ায় অনেক বিষয়েই একে অপরের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতে উভয় দেশকেই একে অপরের প্রতি পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। উভয় দেশই একে অপরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সময়ের সাথে সাথে এই সংকট কেটে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের অবস্থান। ফলে ভারত এটিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। কারণ তাদের পররাষ্ট্রনীতি বাংলাদেশে ফেইল করেছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য ভারতকে তার পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ পিপল টু পিপল সম্পর্ক তৈরির নীতিতে ভারতকে আসতে হবে। ভারত সমতা এবং ন্যায্যতার নীতিতে আসলে এই সংকট কেটে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, যখন একটা সরকার পরিবর্তন হয় তখন দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে একটা টানাপড়েন তৈরি হয়। দুই দেশের আলাদা আলাদা ফরেন পলিসি থাকে। যেহেতু সেখানে পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবস্থান করছে, সেহেতু তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিবৃতি, লবিং থাকাটা স্বাভাবিক বিষয়। তারা সেটাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। আর সংখ্যালঘু ইস্যুতে মিডিয়ার মিস ইনফরমেশনের কারণেও একটা টানাপড়েন তৈরি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এটাএ বেশিদিন থাকবে না বলেই মনে করছি। কারণ দুইটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ভালো সম্পর্ক রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ একে অপরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে বলে আমি মনে করছি। সে পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। সময়ের সাথে সাথে এর গতিপথ কিছুটা পরিবর্তিত হওয়াটাও স্বাভাবিক বিষয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংকট

দ্রুত কূটনৈতিক দূরত্ব কেটে যাওয়ার প্রত্যাশা বিশেষজ্ঞদের

আপডেট সময় : ০৭:২৩:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

 

“ভারত সমতা এবং ন্যায্যতার নীতিতে আসলে এই সংকট কেটে যাবে”
-মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর, চেয়ারম্যান রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

“ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ, সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে ”
-ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস, অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। সংখ্যালঘু ইস্যুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিবৃতি এবং অবস্থানে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ছাত্র-জনতার ভারতের আধিপত্যবাদবিরোধী অবস্থানেও সেটি স্পষ্ট। তবে এই কূটনৈতিক দূরত্ব বেশিদিন থাকবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতের দিক থেকে দুই দেশের সম্পর্কে সমতা ও ন্যায্যতার নীতিতে আসলে এবং পিপল টু পিপল সম্পর্ক তৈরির উদ্যোগ আসলে এই কূটনৈতিক দূরত্ব কেটে যাবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের সাথে ভারতের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তাতে হাসিনার পতনের পর ছেদ পড়েছে। ভারতের আধিপত্যবাদী আচরণ ও পিপল টু পিপল সম্পর্ক তৈরির নীতিতে ঘাটতি থাকাই এর মূল কারণ। সেই সাথে দুই দেশের মধ্যে সমতা ও ন্যায্যতার নীতি অনুপস্থিত থাকায় এ দেশের মানুষ ভারতকে ভালোভাবে নিতে পারছে না। তবে ভারত তাদের পররাষ্ট্র নীতি পরিবর্তন করলে দ্রুতই এই কূটনৈতিক দূরত্ব কেটে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
তারা বলছেন, ভারত এবং বাংলাদেশ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হওয়ায় অনেক বিষয়েই একে অপরের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতে উভয় দেশকেই একে অপরের প্রতি পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। উভয় দেশই একে অপরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সময়ের সাথে সাথে এই সংকট কেটে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের অবস্থান। ফলে ভারত এটিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছে না। কারণ তাদের পররাষ্ট্রনীতি বাংলাদেশে ফেইল করেছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য ভারতকে তার পররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ পিপল টু পিপল সম্পর্ক তৈরির নীতিতে ভারতকে আসতে হবে। ভারত সমতা এবং ন্যায্যতার নীতিতে আসলে এই সংকট কেটে যাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, যখন একটা সরকার পরিবর্তন হয় তখন দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে একটা টানাপড়েন তৈরি হয়। দুই দেশের আলাদা আলাদা ফরেন পলিসি থাকে। যেহেতু সেখানে পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবস্থান করছে, সেহেতু তাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিবৃতি, লবিং থাকাটা স্বাভাবিক বিষয়। তারা সেটাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। আর সংখ্যালঘু ইস্যুতে মিডিয়ার মিস ইনফরমেশনের কারণেও একটা টানাপড়েন তৈরি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এটাএ বেশিদিন থাকবে না বলেই মনে করছি। কারণ দুইটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ভালো সম্পর্ক রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ একে অপরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটবে বলে আমি মনে করছি। সে পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। সময়ের সাথে সাথে এর গতিপথ কিছুটা পরিবর্তিত হওয়াটাও স্বাভাবিক বিষয়।