০৯:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিরিয়ার সর্বোচ্চ পর্বত ইসরায়েলি দখলে

  •  ইসরাইলি হামলা নিয়ে মুখ খুললেন জোলানি
  • ১২ বছর পর দামেস্কে কাজ শুরু করল তুরস্কের দূতাবাস

সিরিয়ার মিলিটারি স্থাপনায় লাগাতার বোমাবর্ষণ শুরু করে করে ইসরায়েল। দেশটির যুক্তি, গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলো যাতে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে না চলে যায় তাই এই পদক্ষেপ। তেল আবিবের দাবি, তারা সিরিয়ায় প্রায় ৫০০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে সক্ষম হয়েছে। একইসাথে সিরিয়ার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মাউন্ট হারমন দখল করে নিয়েছে ইসরায়েল। যদিও তেল আবিবের দাবি, তারা সাময়িক সময়ের জন্য এটি দখল করেছে। জেরুজালেম ইন্সটিটিউট ফর স্ট্রাটেজির (জেআইএসএস) ডিরেক্টর এফ্রাইম ইনবার বলেন, লেবানন, সিরিয়া, ইসরায়েলের দিক থেকে এটি বেশ উঁচু স্থান। কৌশলগত বিবেচনায় এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে পাহাড়ের বিকল্প নেই।
মাউন্ট হারমন পর্বতটি সিরিয়া ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যকার বাফার জোনে অবস্থিত। গত ৫০ বছর ধরে এক চুক্তির আওতায় এটি থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে রেখেছিল দুই দেশ। তবে গত সপ্তাহে আসাদ রেজিমের পতনের পর চুক্তি থেকে সরে এসে তা দখল করে তেল আবিব। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ গত শুক্রবার বলেন, সিরিয়ায় পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে হারমন পর্বতে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা নিরাপত্তার দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শুধু পর্বত নয়, বরং ইসরায়েল সেনারা আরও অগ্রসর হয়ে বেকাসেম পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা কি-না সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে। যদিও সিএনএন-এর পক্ষ থেকে এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, তারা দামেস্ক অভিমুখে কোনো অভিযান পরিচালনা করছে না। তবে গোলান মালভূমির বাফার অঞ্চল দখলের কথা তারা স্বীকার করেছে।
গত কয়েক দশক ধরে হারমন পর্বতের নিম্নাঞ্চলের দিকে ইসরায়েলের কিছু কার্যক্রম ছিল। তবে সবচেয়ে উঁচু স্থানটি সিরিয়ার অধীনেই ছিল। আসাদের পতনের পর বোমাবর্ষণের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। তবে নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আমরা অবশ্যই সবকিছু করতে প্রস্তুত।
এদিকে, সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলা নিয়ে জবাব দিয়েছেন বাশার আল-আসাদ সরকারকে উৎখাতের নেতৃত্ব দেওয়া ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। গত শনিবার ক্ষমতাগ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ইসরাইল সম্পর্কে কথা বলেছেন তিনি । সিরিয়ার টিভি নিউজ চ্যানেলের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে, তিনি বলেন, সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানোর জন্য ইসরাইলের আর কোন অজুহাত নেই এবং সাম্প্রতিক আইডিএফ সিরিয়ার মাটিতে হামলা লাল রেখা অতিক্রম করেছে এবং এই অঞ্চলে একটি অযৌক্তিক উত্তেজনা বৃদ্ধির হুমকি দিয়েছে। গত শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল। চলতি সপ্তাহের শুরুতে, ইসরাইল সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর কৌশলগত সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করার জন্য একটি বড় অভিযান শুরু করে। যার মধ্যে সিরিয়ান সেনাবাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্রের সাইট, ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা, বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর লক্ষ্যবস্তু করে।
সিরিয়া সীমান্তে বাফার জোনে ইসরাইলের দখল, সামরিক হামলার পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিন্দা করেছে। এইচটিএসের নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরাইলও গোলান মালভূমিতে জাতিসংঘের টহলযুক্ত বাফার জোনে প্রবেশ করে। ইসরাইল বলেছে, তারা সিরিয়ার সংঘাতে জড়িত হবে না এবং ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাফার জোন দখল একটি প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ এবং একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ যতক্ষণ না এটি সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
বিদ্রোহী নেতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এড়াতে এবং সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের সম্মান নিশ্চিত করার জন্য তার দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান। ইসরাইলের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে, তিনি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হিসেবে কূটনৈতিক সমাধান এবং অপরাধমূলক সামরিক পদক্ষেপের বিকল্পের উপর জোর দেন।
এদিকে, দীর্ঘ ১২ বছর পর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে আবারও কার্যক্রম শুরু করেছে তুরস্কের দূতাবাস। গত শনিবার দামেস্কে অবস্থিত এই দূতাবাসে তুর্কি পতাকাও উত্তোলন করা হয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে তুরস্কের এই দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল। গত শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হিসাবে মৌরিতানিয়ায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বুরহান কোরোগলুকে নিয়োগ দেওয়ার পর দামেস্কের তুর্কি দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় চালু হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আনুষ্ঠানিকভাবে কোরোগলুকে নতুন পদে দায়িত্ব দেন। আনাদোলু বলছে, দামেস্ক শহরের রাওদা স্কোয়ারের কাছে এমন একটি এলাকায় এই দূতাবাস রয়েছে যেখানে অন্যান্য অনেক দেশের কূটনৈতিক মিশনও অবস্থিত। ২০১১ সালে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর আসাদ সরকারের সহিংস দমন-পীড়নের পরে তুর্কি দূতাবাস কিছু সময়ের জন্য তাদের পরিষেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছিল। তবে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ থেকে এই দূতাবাসটি তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম স্থগিত করে। এই সিদ্ধান্তের পর দূতাবাসের কর্মীরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা তুরস্কে ফিরে গিয়েছিল।
এদিকে, এই মাসের শুরুতে বাশার আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সিরিয়ার কনস্যুলেট জেনারেল নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট সেভদেত ইলমাজ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেছেন, আমাদের ভালোবাসার পতাকা উত্থাপনের মাধ্যমে ১২ বছর পর দামেস্কে আমাদের দূতাবাসে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করতে দেখে আমরা আনন্দিত। দূতাবাস পুনরায় চালু করা সিরিয়ার স্থিতিশীলতার পাশাপাশি এই অঞ্চলে শান্তি ও সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের সবচেয়ে দৃঢ় পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি ইলমাজ আরও আশা প্রকাশ করেছেন, সিরিয়ার সাথে তুরস্কের কূটনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ভ্রাতৃপ্রতিম সিরিয়ার জনগণের জীবন স্বাভাবিককরণে অবদান রাখবে এবং সিরিয়ার প্রাতিষ্ঠানিক, অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত অবস্থার পুনর্গঠনে সহায়তা করবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঈদগাঁওয়ে ৪৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই বিতরণের প্রস্তুতি ও কার্যক্রম শুরু

সিরিয়ার সর্বোচ্চ পর্বত ইসরায়েলি দখলে

আপডেট সময় : ০৮:৪৬:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

  •  ইসরাইলি হামলা নিয়ে মুখ খুললেন জোলানি
  • ১২ বছর পর দামেস্কে কাজ শুরু করল তুরস্কের দূতাবাস

সিরিয়ার মিলিটারি স্থাপনায় লাগাতার বোমাবর্ষণ শুরু করে করে ইসরায়েল। দেশটির যুক্তি, গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলো যাতে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে না চলে যায় তাই এই পদক্ষেপ। তেল আবিবের দাবি, তারা সিরিয়ায় প্রায় ৫০০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করতে সক্ষম হয়েছে। একইসাথে সিরিয়ার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় মাউন্ট হারমন দখল করে নিয়েছে ইসরায়েল। যদিও তেল আবিবের দাবি, তারা সাময়িক সময়ের জন্য এটি দখল করেছে। জেরুজালেম ইন্সটিটিউট ফর স্ট্রাটেজির (জেআইএসএস) ডিরেক্টর এফ্রাইম ইনবার বলেন, লেবানন, সিরিয়া, ইসরায়েলের দিক থেকে এটি বেশ উঁচু স্থান। কৌশলগত বিবেচনায় এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে পাহাড়ের বিকল্প নেই।
মাউন্ট হারমন পর্বতটি সিরিয়া ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যকার বাফার জোনে অবস্থিত। গত ৫০ বছর ধরে এক চুক্তির আওতায় এটি থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে রেখেছিল দুই দেশ। তবে গত সপ্তাহে আসাদ রেজিমের পতনের পর চুক্তি থেকে সরে এসে তা দখল করে তেল আবিব। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ গত শুক্রবার বলেন, সিরিয়ায় পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে হারমন পর্বতে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা নিরাপত্তার দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শুধু পর্বত নয়, বরং ইসরায়েল সেনারা আরও অগ্রসর হয়ে বেকাসেম পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা কি-না সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে। যদিও সিএনএন-এর পক্ষ থেকে এর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, তারা দামেস্ক অভিমুখে কোনো অভিযান পরিচালনা করছে না। তবে গোলান মালভূমির বাফার অঞ্চল দখলের কথা তারা স্বীকার করেছে।
গত কয়েক দশক ধরে হারমন পর্বতের নিম্নাঞ্চলের দিকে ইসরায়েলের কিছু কার্যক্রম ছিল। তবে সবচেয়ে উঁচু স্থানটি সিরিয়ার অধীনেই ছিল। আসাদের পতনের পর বোমাবর্ষণের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার আমাদের কোনো আগ্রহ নেই। তবে নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষার জন্য আমরা অবশ্যই সবকিছু করতে প্রস্তুত।
এদিকে, সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলা নিয়ে জবাব দিয়েছেন বাশার আল-আসাদ সরকারকে উৎখাতের নেতৃত্ব দেওয়া ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। গত শনিবার ক্ষমতাগ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ইসরাইল সম্পর্কে কথা বলেছেন তিনি । সিরিয়ার টিভি নিউজ চ্যানেলের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে, তিনি বলেন, সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানোর জন্য ইসরাইলের আর কোন অজুহাত নেই এবং সাম্প্রতিক আইডিএফ সিরিয়ার মাটিতে হামলা লাল রেখা অতিক্রম করেছে এবং এই অঞ্চলে একটি অযৌক্তিক উত্তেজনা বৃদ্ধির হুমকি দিয়েছে। গত শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল। চলতি সপ্তাহের শুরুতে, ইসরাইল সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর কৌশলগত সামরিক সক্ষমতা ধ্বংস করার জন্য একটি বড় অভিযান শুরু করে। যার মধ্যে সিরিয়ান সেনাবাহিনীর রাসায়নিক অস্ত্রের সাইট, ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা, বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর লক্ষ্যবস্তু করে।
সিরিয়া সীমান্তে বাফার জোনে ইসরাইলের দখল, সামরিক হামলার পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিন্দা করেছে। এইচটিএসের নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা দামেস্ক দখল করার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরাইলও গোলান মালভূমিতে জাতিসংঘের টহলযুক্ত বাফার জোনে প্রবেশ করে। ইসরাইল বলেছে, তারা সিরিয়ার সংঘাতে জড়িত হবে না এবং ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বাফার জোন দখল একটি প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ এবং একটি অস্থায়ী পদক্ষেপ যতক্ষণ না এটি সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
বিদ্রোহী নেতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতি এড়াতে এবং সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের সম্মান নিশ্চিত করার জন্য তার দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানান। ইসরাইলের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে, তিনি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একমাত্র উপায় হিসেবে কূটনৈতিক সমাধান এবং অপরাধমূলক সামরিক পদক্ষেপের বিকল্পের উপর জোর দেন।
এদিকে, দীর্ঘ ১২ বছর পর সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে আবারও কার্যক্রম শুরু করেছে তুরস্কের দূতাবাস। গত শনিবার দামেস্কে অবস্থিত এই দূতাবাসে তুর্কি পতাকাও উত্তোলন করা হয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে তুরস্কের এই দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছিল। গত শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারপ্রাপ্ত চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স হিসাবে মৌরিতানিয়ায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বুরহান কোরোগলুকে নিয়োগ দেওয়ার পর দামেস্কের তুর্কি দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় চালু হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান আনুষ্ঠানিকভাবে কোরোগলুকে নতুন পদে দায়িত্ব দেন। আনাদোলু বলছে, দামেস্ক শহরের রাওদা স্কোয়ারের কাছে এমন একটি এলাকায় এই দূতাবাস রয়েছে যেখানে অন্যান্য অনেক দেশের কূটনৈতিক মিশনও অবস্থিত। ২০১১ সালে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর আসাদ সরকারের সহিংস দমন-পীড়নের পরে তুর্কি দূতাবাস কিছু সময়ের জন্য তাদের পরিষেবা প্রদান অব্যাহত রেখেছিল। তবে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ থেকে এই দূতাবাসটি তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম স্থগিত করে। এই সিদ্ধান্তের পর দূতাবাসের কর্মীরা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা তুরস্কে ফিরে গিয়েছিল।
এদিকে, এই মাসের শুরুতে বাশার আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সিরিয়ার কনস্যুলেট জেনারেল নিরবচ্ছিন্নভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট সেভদেত ইলমাজ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেছেন, আমাদের ভালোবাসার পতাকা উত্থাপনের মাধ্যমে ১২ বছর পর দামেস্কে আমাদের দূতাবাসে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করতে দেখে আমরা আনন্দিত। দূতাবাস পুনরায় চালু করা সিরিয়ার স্থিতিশীলতার পাশাপাশি এই অঞ্চলে শান্তি ও সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের সবচেয়ে দৃঢ় পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি ইলমাজ আরও আশা প্রকাশ করেছেন, সিরিয়ার সাথে তুরস্কের কূটনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ভ্রাতৃপ্রতিম সিরিয়ার জনগণের জীবন স্বাভাবিককরণে অবদান রাখবে এবং সিরিয়ার প্রাতিষ্ঠানিক, অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত অবস্থার পুনর্গঠনে সহায়তা করবে।