দিনটা মেঘ গমগমে। পুরনো শহরে বেড়াতে গিয়েছিলাম আমরা। তাঁতিবাজারে এক স্বর্ণকারের নাকফুল পছন্দ হলো তোমার। দাম মিটিয়ে দিলে। তখনই হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি এলো। বিস্মিত হয়ে দেখলাম তুমি ছাতা কিনতে দোকান থেকে বেরিয়ে গেলে। সাধের নোলক ব্যাগে না নিয়েই। আমি তো মুঠোফোনটা প্লাস্টিকে মুড়িয়ে যখন তখন বৃষ্টিতে ভিজি। অথচ তোমার তর সইলো না সেদিন। তোমার আনমনা স্বভাব টের পেলাম। একইসঙ্গে বৃষ্টিতে উজাড়ে ভীতি।
আকাশে মেঘ জমলে তুমুল চাঞ্চল্য ভর করে মানুষের জনপদে। শুধু মানুষ না আকাশের তামাম পাখিকূলও নীড়ে ফেরে। একবার মাঘ মাসের আচানক বৃষ্টিতে রিকশায় ভিজছিলাম। জমে যাচ্ছি প্রায়। বৃদ্ধ রিকশাচালক তখন বলে উঠলেন, “রাইতে বেজায় জার নামিবো।” মনে হয়েছিল তার হাঁপানি আছে।
সমস্ত নেতিবাচকতা সত্ত্বেও আমি বৃষ্টির পক্ষে। এই বেজান শহর ধূলা মুক্ত হয় এর সুবাদে। যে পলিমাটিতে এই দেশ গড়া সে মাটি সুফলা হয়। দূষিত জল প্রবাহের পানি টলটলে হয় পাঁচ মিনিটের এক পশলা ধারাপাতে। শৈশব ফিরে আসে বৃষ্টিতে ফুটবল খেলার স্মৃতি মনে করতেই।
অষ্টপ্রহর অফুরন্ত বৃষ্টি বাসনা আমার। মেঘ জমলেই তাই বলি – এক্ষুনি নেমে এসো তুমি। ভাসিয়ে দাও কদর্যতা। ঢেকে দাও অসুন্দর। সতেজ করে জাগাও লুপ্ত থাকা তাবৎ মানবীয় বৃত্তি।


























