১০:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নুসরাত ফারিয়ার পর কে?

রবিবার বিকালে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শোবিজ সেলিব্রেটি নুসরাত ফারিয়াকে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। সোমবার দুপুর নাগাদ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে বিভিন্ন ঘটনায় আইন অঙ্গনে যেসব শোবিজ সেলিব্রেটিকে দেখা গেছে এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাহানা সাবা, মেহের আফরোজ শাওন ও জ্যোতিকা জ্যোতি।
আইনজ্ঞরা বলছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের থানাগুলোয় ঢালাও মামলা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। শুধু এপ্রিল মাসে দেশে অজ্ঞাত আসামি হাজার জন এমন ধরনের মামলা দায়ের হয়েছে প্রায় দেড় হাজার। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলার সংখ্যা প্রায় ৬০০ টি। অন্য যেসব অপরাধে মামলা হয়েছে তার আসামি সংখ্যাও কম নয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আটকের পর জানা যাচ্ছে তিনি মামলার আসামি। এমন ভৌতিক মামলা কখনোই ন্যায়ভিত্তিক বিচার ব্যবস্থার পরিচায়ক নয়।
দীর্ঘ ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট রেজিমের সুফলভোগী বহুজন। শোবিজ তারকা নুসরাত ফারিয়া তাদের মধ্যে একজন। প্রমাণিত বা দণ্ডিত না হওয়ায় এখন পর্যন্ত বলা সম্ভব না কি ধরনের অপরাধে তিনি সম্পৃক্ত। তবে জনমনে এমন কৌতূহল আছে যে, নুসরাত ফারিয়ার পর কোন সাড়া ফেলা তারকা গ্রেফতার হতে যাচ্ছেন? এটা সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান বিগত সময়ের মূল প্রভাবশালী ও বড় অপরাধী বিবেচিতরা এখন অবস্থান করছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাত্র কয়েকদিন আগেই ইমিগ্রেশন পুলিশের নাকের ডগায় বিমানবন্দর থেকে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। যে রেজিমকে গণহত্যাকারী বলা হচ্ছে রাতদিন এর রাষ্ট্রপতির বেলাই দেখা গেল আইনের হাতের খর্বতা। তিনি একমাত্র উদাহরণ নন। এর আগেও দেশ ছেড়েছেন নানা অপরাধের হোতা হাজারের অধিক বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা। প্রশ্ন জেগেছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জালে কি শুধু চুনোপুঁটিই ধরা পড়ে তবে রাঘববোয়ালরা উৎরায় কোন নিকাশে?
এমনিতেই বাংলাদেশের বিচার বিভাগে অভিশাপ হয়ে আছে মামলাজট। এর মধ্যে নতুন দায়ের করা মামলাগুলোর কার্যক্রম কবে নাগাদ সম্পন্ন হবে এর উত্তর পাওয়া কঠিন।
আইনজ্ঞরা মনে করেন, একটি উৎসাহী মহল ভালো সাজার মুখোশে মুখচেনা ব্যক্তিদের নামে এমনভাবে ঢালাও মামলা করে চলেছে। এর সঙ্গে জড়িত পুলিশ বাহিনী কিছু অসাধু সদস্য ও দুর্বৃত্ত আইনজীবীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। মামলাবাণিজ্যে এরাই লাভবান হচ্ছেন।
একজন নুসরাত ফারিয়া যতটা মিডিয়া আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকেন, ঢালাও মামলায় আক্রান্ত শত শত আসামি ততটা মনোযোগ পাবেন না স্বাভাবিকভাবেই। ফ্যাসিবাদের হোতা ও সব ধরনের অনুচরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবশ্যই কাম্য। কিন্তু বিচারের বাণী যেন নিভৃতে না কাঁদে কারও ক্ষেত্রে সেটাও আমাদের দেখতে হবে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ হোক সুবিচারের এক দেশ।
এমআর/সব

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

নুসরাত ফারিয়ার পর কে?

আপডেট সময় : ০৯:৪৮:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

রবিবার বিকালে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে শোবিজ সেলিব্রেটি নুসরাত ফারিয়াকে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। সোমবার দুপুর নাগাদ তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে বিভিন্ন ঘটনায় আইন অঙ্গনে যেসব শোবিজ সেলিব্রেটিকে দেখা গেছে এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাহানা সাবা, মেহের আফরোজ শাওন ও জ্যোতিকা জ্যোতি।
আইনজ্ঞরা বলছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের থানাগুলোয় ঢালাও মামলা রেকর্ড ছাড়িয়েছে। শুধু এপ্রিল মাসে দেশে অজ্ঞাত আসামি হাজার জন এমন ধরনের মামলা দায়ের হয়েছে প্রায় দেড় হাজার। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলার সংখ্যা প্রায় ৬০০ টি। অন্য যেসব অপরাধে মামলা হয়েছে তার আসামি সংখ্যাও কম নয়।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে আটকের পর জানা যাচ্ছে তিনি মামলার আসামি। এমন ভৌতিক মামলা কখনোই ন্যায়ভিত্তিক বিচার ব্যবস্থার পরিচায়ক নয়।
দীর্ঘ ১৭ বছরের ফ্যাসিস্ট রেজিমের সুফলভোগী বহুজন। শোবিজ তারকা নুসরাত ফারিয়া তাদের মধ্যে একজন। প্রমাণিত বা দণ্ডিত না হওয়ায় এখন পর্যন্ত বলা সম্ভব না কি ধরনের অপরাধে তিনি সম্পৃক্ত। তবে জনমনে এমন কৌতূহল আছে যে, নুসরাত ফারিয়ার পর কোন সাড়া ফেলা তারকা গ্রেফতার হতে যাচ্ছেন? এটা সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান বিগত সময়ের মূল প্রভাবশালী ও বড় অপরাধী বিবেচিতরা এখন অবস্থান করছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। মাত্র কয়েকদিন আগেই ইমিগ্রেশন পুলিশের নাকের ডগায় বিমানবন্দর থেকে দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। যে রেজিমকে গণহত্যাকারী বলা হচ্ছে রাতদিন এর রাষ্ট্রপতির বেলাই দেখা গেল আইনের হাতের খর্বতা। তিনি একমাত্র উদাহরণ নন। এর আগেও দেশ ছেড়েছেন নানা অপরাধের হোতা হাজারের অধিক বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা। প্রশ্ন জেগেছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জালে কি শুধু চুনোপুঁটিই ধরা পড়ে তবে রাঘববোয়ালরা উৎরায় কোন নিকাশে?
এমনিতেই বাংলাদেশের বিচার বিভাগে অভিশাপ হয়ে আছে মামলাজট। এর মধ্যে নতুন দায়ের করা মামলাগুলোর কার্যক্রম কবে নাগাদ সম্পন্ন হবে এর উত্তর পাওয়া কঠিন।
আইনজ্ঞরা মনে করেন, একটি উৎসাহী মহল ভালো সাজার মুখোশে মুখচেনা ব্যক্তিদের নামে এমনভাবে ঢালাও মামলা করে চলেছে। এর সঙ্গে জড়িত পুলিশ বাহিনী কিছু অসাধু সদস্য ও দুর্বৃত্ত আইনজীবীদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। মামলাবাণিজ্যে এরাই লাভবান হচ্ছেন।
একজন নুসরাত ফারিয়া যতটা মিডিয়া আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকেন, ঢালাও মামলায় আক্রান্ত শত শত আসামি ততটা মনোযোগ পাবেন না স্বাভাবিকভাবেই। ফ্যাসিবাদের হোতা ও সব ধরনের অনুচরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি অবশ্যই কাম্য। কিন্তু বিচারের বাণী যেন নিভৃতে না কাঁদে কারও ক্ষেত্রে সেটাও আমাদের দেখতে হবে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ হোক সুবিচারের এক দেশ।
এমআর/সব