২০২১ সালে আর্থিক সমস্যার কারণে বার্সেলোন ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন লিওনেল মেসি। কাতালুনিয়া ছাড়ার সময় আবেগ ধরে রাখতে পারেননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। নিজে অশ্রুসিক্ত হওয়ার পাশাপাশি ভক্ত-সমর্থকদেরও ভাসিয়েছেন আবেগের বন্যায়। এরপর বড় স্বপ্ন নিয়ে উড়াল দিয়েছিলেন প্যারিসে। পিএসজিতে কাটিয়েছেন দুই মৌসুম। সেখানে জুটি বেঁধেছিলেন বার্সার সতীর্থ নেইমার জুনিয়ার এবং ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে।
তবে ক্লাবটিতে থাকাকালীন সময়টা মোটেও উপভোগ করেননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। যা চলতি বছরের শুরুতে এক সাক্ষাৎকারে মেসি নিজেই জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘পিএসজিতে আমি নিজেকে উপভোগ করতে পারিনি। এটি একটি কঠিন সময় ছিল।’
আজ সেই পিএসজির বিপক্ষে মাঠে নামছে মেসি। ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে যোগ্যতা অর্জনে স্বাগতিক ইন্টার মায়ামিকে পেরোতো হবে পিএসজি বাধা। ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১০টায় মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। যদিও প্রথমবারের মতো ক্লাব খেলছে মায়ামি ও পিএসজি। সামর্থ্য ও পারফরম্যান্স সবদিক থেকে স্বাগতিকদের চেয়ে এগিয়ে আছে প্যারিসের দলটি।

এছাড়াও গেল মৌসুমে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ইউরোপিয়ান ট্রেবল জয়ের স্বাদ পেয়েছে লুইস এনরিকের শিষ্যরা। এবার দলটির লক্ষ্য প্রথম বারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তোলা। শিরোপা জয়ের দৌড়ে অন্যতম ফেভারিটও ডেম্বেলে, হাকিমি ও ভিতিনিয়ারা। তবে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে ট্রাম্প কার্ড হিসেবে কাজে লাগাতে চান ইন্টার মায়ামি কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো। অর্থাৎ পিএসজির ওপর মেসির যেই ক্ষোভ আছে, সেটাকে কাজে লাগাতে চান তিনি। পিএসজির বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে সম্প্রতি তিনি বলেছেন, যখন তার (মেসি) মনে কিছু আটকে থাকে, তখন তিনি নিজেকে উজাড় করেন দেন।’
যদিও সম্প্রতি ৩৮-এ পা দিয়েছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তার ক্যারিয়ারের সূর্য এখন গৌধূলিলগ্নে। তবে পুরো ক্যারিয়ারে লিওনেল মেসি কি করে করেছেন, সেই গল্প কারোরই অজানা নয়। মাঠে অসংখ্যবার প্রতিপক্ষকে একটাই গুড়িয়ে দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন এলএম-টেন। মেসি যে এখনো প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ংকর হতে পারে, সেটাও সবার জানা। সেইসঙ্গে মাঠে মেসি থাকা মানে প্রতিপক্ষ থাকে আতঙ্কে, সতীর্থরা পান আত্মবিশ্বাস।
পিএসজির বিপক্ষে লড়াই মেসির সঙ্গে আছেন তার বার্সার সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ, জর্ডি আলবা ও সার্জিও বুসকেটস। সাবেক চার বার্সা তারকা নিজেদের ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে যা করেছেন, তা লিখা রয়েছে ইতিহাসের পাতায়। প্রতিপক্ষ যতই শক্তিশালী হোক না কেন, প্রতিরোধ কিংবা প্রতিশোধ, ফুটবল মাঠে যা কিছু করা সম্ভব, সবই একটা সময় করে এসেছেন তারা। তাদের আছে সেই অদম্য মানসিকতা। সেটাই আজ পিএসজির বিপক্ষে কাজে লাগাতে চাইবেন তারা। যদিও পিএসজির গল্পটা পুরোপুরি ভিন্ন। এই ম্যাচে মেসি যে নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে লড়বেন, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে শেষ পর্যন্ত কারা হাসেন শেষ হাসি, সেটা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে রাত ১২টা পর্যন্ত।
এমআর/সবা


























