০৩:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
কৃষি উদ্যোক্তা মামুনের সাফল্য 

ফটিকছড়িতে গাছ ভর্তি দার্জেলিং কমলা

পাহাড়ের ঢালুতে দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে রীতিমত চমক দেখিয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মামুন৷ করোনাকালে বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে কিছু করার চেষ্টা থেকে কমলা সহ মিশ্র ফলের বাগান করে সফল হন তিনি। কাজী এগ্রো এন্ড ফ্রুটস্ এর মালিক কাজী মোহাম্মদ মামুন নামের এ কৃষি উদ্যোক্তা তাঁর বাগানে দার্জেলিং ও ম্যান্ডারিন জাতের কমলা চাষ করেছেন। কিন্তু ম্যান্ডারিন জাতের কমলা গাছ যথাসময়ে পরিপক্ব না হওয়ায় কেটে দার্জেলিং জাতের কমলা চাষে নজর দেন তিনি। এতে এক বছরেই সফল হয়েছেন তরুণ এই কৃষি উদ্যোক্তা। কাজী মোহাম্মদ মামুন ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইন্দং এলাকার বাসিন্দা কাজী লোকমানের পুত্র। পার্শ্ববর্তী ভূজপুর ইউনিয়নের কৈয়াছড়া চা বাগান ঘেঁষে গড়ে তুলেছেন তাঁর মিশ্র ফলের বাগান। সে বাগানে বিভিন্ন জাতের আম, বড়ই, মাল্টা, কলা, লেবু, কমলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চাষ করেছেন। এছাড়া গবাদি পশুর শেইড, মৎস্য ঘের রয়েছে তার ফার্মে।
সরজমিনে দেখা যায়, সবুজ পাতার আড়ালে প্রতিটি গাছে ঝুলছে রসালো সবুজ ও হলুদ রঙের কমলা। পরিকল্পিত এ বাগানে কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। চা বাগানের পাশে টিলার ঢালুতে দার্জেলিং জাতের কমলা গাছে থোকায় থোকায় ঝুঁলছে রসালো কমলা। পাতার ফাঁকে উঁকি দেওয়া কমলা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়, খেলে রসালো হওয়ায় পরাণও জুড়ায়। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ এই ফলটির জন্য চট্টগ্রামের আবহাওয়া ও জলবায়ু অনুকূল রয়েছে। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হলুদ রঙের দার্জেলিং কমলার চাষ।
বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত মালি সরোয়ার উদ্দিন সবুজ বাংলাকে জানান, প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ কেজি কমলা বিক্রি করতে পারছেন তাঁরা। বাগানের কমলা খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় বাগান থেকে ১০০ টাকা দরে কমলা বিক্রি  হচ্ছে।
কাজী এগ্রো এন্ড ফ্রুটসের বাগান দেখতে আসা সালাউদ্দিন জিকু সবুজ বাংলাকে জানান, কমলার বাম্পার ফলন দেখে তারা অবাক হয়েছি। এ বাগান দেখে এখন বাড়ির আঙ্গিনায় খালি জমিতে ফল বাগান করার আগ্রহ করবেন যে কেউ।
কৃষি উদ্যোক্তা কাজী মোহাম্মদ মামুন সবুজ বাংলাকে বলেন, চার বছর আগে করোনার অবসর সময়ে শখের বসে খাগড়াছড়ি থেকে চারা এনে টিলার ঢালুতে কমলার চাষ শুরু করি। ৩১ একর জমি থেকে ৩ একর জমিতে প্রায় ৩০০ কমলা চারা রোপন করি। এই গাছগুলো থেকে এবার ভালো ফলন পেয়েছি। বাগানের কমলা সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় চাহিদা রয়েছে বেশি। স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ২শ‍‍` থেকে ৩শ‍‍` টাকায় বিক্রি করা হয় এই কমলা। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করা এই কমলা বাগান নিজেকে যেমন স্বাবলম্বী করেছে তেমনি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
পাহাড়ের লাল মাটিতে কমলা চাষ বেশ উপযোগী। ফলে দিনদিন কমলার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. হাসানুজ্জামান সবুজ বাংলাকে বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেছে। এবার কমলার ভালো ফলন হয়েছে। আশা করছি, সামনের বছর আরও ফলন বাড়বে। কেউ যদি কমলাসহ অন্যান্য ফল বাগান করতে আগ্রহী হয় তাদেরকেও কৃষি বিভাগ থেকে সবধরণের সহযোগিতা করা হবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

কৃষি উদ্যোক্তা মামুনের সাফল্য 

ফটিকছড়িতে গাছ ভর্তি দার্জেলিং কমলা

আপডেট সময় : ০৬:৫৩:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
পাহাড়ের ঢালুতে দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে রীতিমত চমক দেখিয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা মামুন৷ করোনাকালে বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে কিছু করার চেষ্টা থেকে কমলা সহ মিশ্র ফলের বাগান করে সফল হন তিনি। কাজী এগ্রো এন্ড ফ্রুটস্ এর মালিক কাজী মোহাম্মদ মামুন নামের এ কৃষি উদ্যোক্তা তাঁর বাগানে দার্জেলিং ও ম্যান্ডারিন জাতের কমলা চাষ করেছেন। কিন্তু ম্যান্ডারিন জাতের কমলা গাছ যথাসময়ে পরিপক্ব না হওয়ায় কেটে দার্জেলিং জাতের কমলা চাষে নজর দেন তিনি। এতে এক বছরেই সফল হয়েছেন তরুণ এই কৃষি উদ্যোক্তা। কাজী মোহাম্মদ মামুন ফটিকছড়ি উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইন্দং এলাকার বাসিন্দা কাজী লোকমানের পুত্র। পার্শ্ববর্তী ভূজপুর ইউনিয়নের কৈয়াছড়া চা বাগান ঘেঁষে গড়ে তুলেছেন তাঁর মিশ্র ফলের বাগান। সে বাগানে বিভিন্ন জাতের আম, বড়ই, মাল্টা, কলা, লেবু, কমলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চাষ করেছেন। এছাড়া গবাদি পশুর শেইড, মৎস্য ঘের রয়েছে তার ফার্মে।
সরজমিনে দেখা যায়, সবুজ পাতার আড়ালে প্রতিটি গাছে ঝুলছে রসালো সবুজ ও হলুদ রঙের কমলা। পরিকল্পিত এ বাগানে কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। চা বাগানের পাশে টিলার ঢালুতে দার্জেলিং জাতের কমলা গাছে থোকায় থোকায় ঝুঁলছে রসালো কমলা। পাতার ফাঁকে উঁকি দেওয়া কমলা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়, খেলে রসালো হওয়ায় পরাণও জুড়ায়। ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ এই ফলটির জন্য চট্টগ্রামের আবহাওয়া ও জলবায়ু অনুকূল রয়েছে। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হলুদ রঙের দার্জেলিং কমলার চাষ।
বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত মালি সরোয়ার উদ্দিন সবুজ বাংলাকে জানান, প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ কেজি কমলা বিক্রি করতে পারছেন তাঁরা। বাগানের কমলা খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় বাগান থেকে ১০০ টাকা দরে কমলা বিক্রি  হচ্ছে।
কাজী এগ্রো এন্ড ফ্রুটসের বাগান দেখতে আসা সালাউদ্দিন জিকু সবুজ বাংলাকে জানান, কমলার বাম্পার ফলন দেখে তারা অবাক হয়েছি। এ বাগান দেখে এখন বাড়ির আঙ্গিনায় খালি জমিতে ফল বাগান করার আগ্রহ করবেন যে কেউ।
কৃষি উদ্যোক্তা কাজী মোহাম্মদ মামুন সবুজ বাংলাকে বলেন, চার বছর আগে করোনার অবসর সময়ে শখের বসে খাগড়াছড়ি থেকে চারা এনে টিলার ঢালুতে কমলার চাষ শুরু করি। ৩১ একর জমি থেকে ৩ একর জমিতে প্রায় ৩০০ কমলা চারা রোপন করি। এই গাছগুলো থেকে এবার ভালো ফলন পেয়েছি। বাগানের কমলা সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় চাহিদা রয়েছে বেশি। স্থানীয় বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ২শ‍‍` থেকে ৩শ‍‍` টাকায় বিক্রি করা হয় এই কমলা। ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি করা এই কমলা বাগান নিজেকে যেমন স্বাবলম্বী করেছে তেমনি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
পাহাড়ের লাল মাটিতে কমলা চাষ বেশ উপযোগী। ফলে দিনদিন কমলার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে ফটিকছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. হাসানুজ্জামান সবুজ বাংলাকে বলেন, উপজেলা কৃষি বিভাগ পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করেছে। এবার কমলার ভালো ফলন হয়েছে। আশা করছি, সামনের বছর আরও ফলন বাড়বে। কেউ যদি কমলাসহ অন্যান্য ফল বাগান করতে আগ্রহী হয় তাদেরকেও কৃষি বিভাগ থেকে সবধরণের সহযোগিতা করা হবে।