ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিচার দাবিতে ফের উত্তাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
সোমবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা।
মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনিদের ফাঁসি চাই’; ‘তুমি কে আমি কে, সাজিদ সাজিদ’; ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’; ‘রশি লাগলে রশি নে, খুনিদের ফাঁসি দে’; ‘আমার ভাই কবরে, প্রশাসন কী করে’; ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’; উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস জাস্টিস’; ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সাজিদ হত্যার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে প্রতিটা শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অবিলম্বে সাজিদ হত্যার খুনিদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে, প্রয়োজনে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে হবে। পিবিআই কে তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে খুনিদের গ্রেফতার করতে হবে। আগামী কয় ঘণ্টার ভেতরে প্রশাসন দোষীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে সেই তথ্য আমাদের প্রশাসনকে দিতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, সাজিদ আবদুল্লাহকে হত্যার বিচার চাই। আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে যেই দাবি উঠেছে সেটাকে ষড়যন্ত্র করে কেউ যেন অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে না পারে। আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি প্রশাসন সাজিদের হত্যার তদন্তের প্রক্রিয়া পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করবে। এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া যেন দীর্ঘমেয়াদী না হয়, কোন কালক্ষেপ না করে আজকের মধ্যেই এই তদন্তভার পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করতে হবে এবং পিবিআই যে রোডম্যাপ ফলো করে তদন্ত করবে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর সামনে উত্থাপন করতে হবে।
সাজিদ হত্যার মাধ্যমে আতঙ্কিত বোধ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাজিদ জুলাই আন্দোলনের সম্মুখ সারি থেকে আন্দোলন করেছিলেন। যারা কথিত স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের জীবন আশঙ্কায় পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে প্রশাসনকে জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শুধুমাত্র ক্যাম্পাসেই নয় ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী এলাকাতে যেসব শিক্ষার্থী এবং জুলাই অভ্যুত্থানে সহযোদ্ধারা আছেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে, রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কাছে সাজিদ হত্যার ভিসেরা প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন পুলিশ সদস্যরা।
ফরেনসিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সাজিদ আবদুল্লাহকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপরে তার মৃতদেহ পানিতে ফেলা হয়েছে। সাজিদের মৃত্যু ময়নাতদন্তের ৩০ ঘণ্টা আগে হয়েছে বলেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন সাজিদ আবদুল্লাহ। গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হলের (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল) পুকুর থেকে সাজিদের লাশ ভাসতে দেখা গেলে পরে উদ্ধার করেন একদল শিক্ষার্থী।
এমআর/সবা


























