চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তিন ক্যাম্পাস সাংবাদিককে ‘জানোয়ার’ বলে সম্বোধন করেছেন শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির। তার অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশে ‘বামপন্থী শিক্ষার্থী’ বা ‘বামপন্থীরা’ উল্লেখ করে তাদের আন্দোলনকে বিতর্কিত করা হচ্ছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে একটি অনলাইন পোর্টালের নিউজ শেয়ার করে তিনি রাইজিংবিডি ডটকমের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, প্রথম আলোর হাসান আবরার তানভীর ও যমুনা টিভির এক সাংবাদিককে উদ্দেশ করে এ মন্তব্য করেন।
ওই পোস্টে জশদ জাকির লেখেন, জানোয়ারদের মতো হলুদ সাংবাদিকতা যেন গিলে না খায় ঢাকা ডায়েরিকে। একইসঙ্গে এক সাংবাদিককে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সত্যের পথে লড়াই চলমান থাকুক।
মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির বলেন, আমি ওইটা লেখেছি এই যায়গায় থেকে যে, প্রতিনিয়ত যারা একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে কিংবা সেটাকে নানাভাবে অপপ্রচার করছে। আমি মূলত রাগ-ক্ষোভের জায়গায় থেকে তাদেরকে এ কথা বলেছি। আপনি তো জানেন–চবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। তো এখানে জামায়াত-শিবির সমর্থিত কিছু অনলাইন পোর্টাল আছে। তার মধ্যে রাইজিংবিডি ডটকম–এমন আরও দুই-তিনটা আছে। এমনকি যমুনা টিভি পর্যন্ত তারা প্রচার করছে, ‘চবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাচ্ছে বামপন্থী শিক্ষার্থীরা’।
তিনি বলেন, এখানে চলমান আন্দোলনের ব্যানার হচ্ছে ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ কিন্তু আমার রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে, সেটাকে যখন বাদ দিয়ে সার্বজনীন সার্থে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আন্দোলন করছি, তখন এগুলো (রাজনৈতিক পরিচয়) কেন সামনে আসবে? এগুলোতো নিছক তাদের অসচেতনতা না? তারা যখন জিজ্ঞেস করছে, ‘এটা কাদের প্রোগ্রাম, কিসের প্রোগ্রাম’? তখন আমরা খুবই স্পষ্ট ভাষায় তাদেরকে বলতেছি। কিন্তু তারপরও তারা ইচ্ছে করে সচেতন করে করতেছে। এটাইকে বোধ হয় বলে হলুদ সাংবাদিকতা।
তিনি আরও বলেন, একজন মানুষের রাজনৈতিক, মতাদর্শিক, সাধারণ-অসাধারণ সব ধরনের পরিচয় থাকতে পারে। কিন্তু যখন সে যেই মুহূর্তে যে পরিচয়ে পরিচিতি করে বা প্রকাশ করে তখন সেই পরিচয় তো জরুরি হয়ে উঠার কথা। আপনি বর্তমান ব্যানারকে অস্বীকার করে কিভাবে অন্য বা অতীত ব্যানার টেনে এনে প্রধান করে ফেলেন।
রাজনৈতিক ব্যানার ব্যবহার না করার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, রাজনৈতিক ব্যানারে সংকট হচ্ছে এখানে একাধিক সংগঠন রয়েছে, তাদের সাথে মত-বিরোধের জায়গা তৈরি হয়। আর আমাদের এখানে যে সংঘর্ষ হয়েছে এটা কোন রাজনৈতিক সংঘর্ষ না। এখানে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে। ওই দুইদিন যেমন রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার না করে রাস্তায় ছিলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে, তেমনি এখন কোন রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পক্ষে লড়াইটা করতে চাই। এটা তো আমার অপিনিয়ন কোন ব্যানারে কিভাবে করতে চাই। কিন্তু আমার কাছে না শুনে অন্য পরিচয় ব্যবহার করা বেআইনি না? এটা আপনাদের আইসিটি সেলের আওতাভুক্ত না যে, একজন মানুষ বলতেছে আমি কোন পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই কিন্তু সেটা অস্বীকার করা হচ্ছে তার মতের বিরুদ্ধে যাওয়া কি গণতন্ত্রের বিরোধী না?
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে দিয়ে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছেন বামপন্থি কয়েকজন শিক্ষার্থী। ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এই ঘটনার সংবাদ প্রকাশের জেরে মূলত তিনি এ মন্তব্য করেন।


























