নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) শিক্ষা ছুটি নিয়ে বিদেশে গিয়ে অনেক শিক্ষক নির্ধারিত সময়ে যোগদান না করায় অন্তত ১০ জন শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার টাকা।
শিক্ষকদের সংস্থাপন দফতর জানিয়েছে, শিক্ষা ছুটি শেষে নির্ধারিত সময়ে যোগদান না করলে ছুটিকালীন সব অর্থ সুদসহ ফেরত দিতে হয়। এক বছরের মধ্যে তা না দিলে জরিমানা ধার্য হয়। অর্থের মধ্যে বেতন-ভাতা, ভবিষ্যৎ তহবিল, বেনেভোলেন্ট ফান্ড ও সঞ্চিত সুদ অন্তর্ভুক্ত। নীতিমালা অনুযায়ী মাস্টার্স বা এমফিলের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছর এবং পিএইচডির জন্য চার বছর শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর করা হয়, প্রয়োজনে আরও চার বছর বর্ধিত করা যায়, তবে এই সময়কাল চাকরির জন্য গণনা হয় না।

অপসারণ ও অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে আছেন ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রভাষক ইয়াছিন কবির, অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. জাকারুল ইসলাম ও মো. শহিদুল ইসলাম, কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিক, ফার্মেসি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার বাসার, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহকারী অধ্যাপক খাদিজাতুল কুবরা, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. সাইফুর রহমান এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরাফাত রহমান।
তাদের মধ্যে ছয়জন যুক্তরাষ্ট্রে, একজন মালয়েশিয়ায়, একজন দক্ষিণ কোরিয়ায় ও দুইজন অস্ট্রেলিয়ায় চাকরি করছেন। শিক্ষকরা প্রত্যেকের কাছ থেকে ফেরত নেওয়ার অর্থের পরিমাণ বিশদে: শহিদুল ইসলাম ৩৩ লাখ ২০ হাজার, খাদিজাতুল কুবরা ৩২ লাখ ৩৮ হাজার, সাইফুর রহমান ৩১ লাখ ২৩ হাজার, আরাফাত রহমান ২০ লাখ ৩৮ হাজার, আহসান হাবীব ১৫ লাখ ১৪ হাজার, আনোয়ার বাসার ৭ লাখ ৭২ হাজার, আবু বকর সিদ্দিক ২৪ লাখ ১৩ হাজার, ইয়াছিন কবির ২০ লাখ ২ হাজার, জাকারুল ইসলাম ১৫ লাখ ১৪ হাজার এবং হাসানুজ্জামান ২০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তামজিদ হোসেন চৌধুরী জানান, বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও নীতিমালা অনুযায়ী সকল ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, তিনবার শোকজ করার পরও টাকা না দিলে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয় এবং প্রয়োজনে ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়। দেশে ফেরার পর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, যারা দেননি, তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং বিধি অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অপসারিত ও অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষকদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এমআর/সবা


























