৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ—চাকসু নির্বাচন। ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ, ব্যস্ততা ও প্রতিযোগিতার ভেতরেও এক অভিনব প্রচারণা কৌশল দিয়ে সবার নজর কেড়েছেন নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী মীর সুমাইয়া আহমেদ (লায়লা এল ফাউলি)।
সুমাইয়া তাঁর প্রচারণায় চার ভাষার সংমিশ্রণে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। চাকমা, মারমা, চাটগাইয়া ও বাংলা—এই চার ভাষায় ছাপানো তাঁর প্রচারপত্র এখন ক্যাম্পাসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
প্রচারপত্রের সামনের অংশে রাখা হয়েছে চার ভাষায় শুভেচ্ছা বার্তা, আর পেছনে রয়েছে তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার ও ওয়েবসাইটের QR কোড। শিক্ষার্থীরা এই উদ্যোগকে “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের প্রতীক” হিসেবে দেখছেন।
সুমাইয়া বলেন, “চবিতে নানা ভাষাভাষী শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁদের সবার কাছে সহজভাবে পৌঁছাতে চেয়েছি। এজন্যই চার ভাষায় প্রচারপত্র করেছি। একজন সিনিয়র ভাইয়ের কাছ থেকে আইডিয়াটা পাই, পরে নিজে সেটি পূর্ণ করি।”
ভাষা বাছাইয়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “চবিতে চাকমা, মারমা ও চাটগাইয়া শিক্ষার্থী তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই এই তিন ভাষার সঙ্গে মাতৃভাষা বাংলা যুক্ত করেছি।”
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি হাসিমুখে বলেন, “সবাই ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। কেউ নেতিবাচক কিছু বলেনি। বরং কেউ মজা করে বলেছে, ‘আপু, নোয়াখাইল্যা বা সিলেটি রাখেন নাই কেন?’ আমি বলেছি, পরের চাকসু হলে রাখবো।”
প্রচারপত্রের নকশা তৈরিতেও সুমাইয়ার ছিল সরাসরি সম্পৃক্ততা। তিনি জানান, “ডিজাইনটা আমি হাতে এঁকেছি, পরে আসেম আল ইমতিয়াজ ভাই কম্পিউটারে সেটি কাস্টোমাইজ করেছেন। ছাপাতে তিন দিন লেগেছে, কিন্তু সবার সহযোগিতায় সফল হয়েছি।”
তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ও ক্যাফেটেরিয়া সংস্কার, পরিষ্কার ওয়াশরুম, EDU mail চালু, চক্রাকার বাস ও বাস শিডিউল ব্যবস্থা প্রবর্তন।
যেখানে অধিকাংশ প্রার্থী প্রচারণায় পরিচিত ধারা অনুসরণ করছেন, সেখানে সুমাইয়ার এই চার ভাষার প্রচারণা যেন চবি ক্যাম্পাসে ভাষা ও সংস্কৃতির বন্ধনকে নতুনভাবে উজ্জ্বল করে তুলেছে।
এমআর/সবা


























