ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা থেকে শীতকালীন অধিবেশনের জন্য ৩৩ এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়। গত সপ্তাহেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করায় ১৩ বিরোধী সংসদ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের’ অভিযোগে গতকাল সোমবার ওই এমপিদের লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন থেকে বহিষ্কার করেন স্পিকার ওম বিড়লা।
গত সপ্তাহে লোকসভার নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে দুজন ব্যক্তি হলুদ রংয়ের ‘রং বোমা’ ছুড়ে ‘তানাশাহি নেহি চলেগি’ (স্বৈরতন্ত্র চলবে না) স্লোগানে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তৃতার মাঝেই নতুন সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সরব হন বিরোধী এমপিরা। তুমুল চিৎকার শুরু হয় সংসদ কক্ষে। প্রথমে ভারতীয় সময় দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট, পরে তিনটা পর্যন্ত সভার কাজ মুলতুবি করে দেন স্পিকার। তার পরেও পরিস্থিতি উত্তেজিত থাকায় ৩৩ এমপিকে বরখাস্ত করেন স্পিকার।
বহিষ্কার হওয়া অন্য এমপিদের মধ্যে রয়েছেন- মমতা ব্যানার্জি নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডল, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল, অসিত মাল ও শতাব্দী রায়। এছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন ডিএমকের তিন সংসদ সদস্য টিআর বালু, এ রাজা এবং দয়ানিধি মারান।
গত সপ্তাহে ১৩ জন বিরোধী এমপিকে বরখাস্ত করার পর ফের নতুন করে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া বিশেষাধিকার কমিটির প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আরও তিন সংসদ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মানে হলো, মোট ৪৬ জন এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৩ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে শুধু নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য চাওয়ার কারণে।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশন শুরু হয়। ১৩ ডিসেম্বর অধিবেশন শুরু হওয়ার পরপরই নিরাপত্তা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে দুই বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং আইনপ্রণেতাদের টেবিলের ওপর উঠে ক্যানিস্টার স্প্রে করে। এসময় তারা ‘তানশাহি নেহি চালেগা’ অর্থ, ‘স্বৈরতন্ত্র চলবে না’ স্লোগান দেয়। পরে তাদের আটক করে পুলিশ।
আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে শীতকালীন অধিবেশন। বহিষ্কার হওয়া এমপিরা শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন না।
লোকসভা থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর অধীর চৌধুরী বলেন, বিজেপির সংখ্যাধিক্য রয়েছে। তাই দিয়ে সংসদে পেশিশক্তি দেখাচ্ছে। সংসদকে বিজেপি ও আরএসএসের কার্যালয়ে পরিণত করতে চাইছে।
এ কংগ্রেস নেতা আরও বলেন, সংসদের নিরাপত্তা যেভাবে ভেঙে পড়েছে তাই নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হয়েছিল। তারা বাইরে অনেক কথা বললেও সংসদে কিছু বলছেন না। সেই প্রশ্ন তুললেই বিরোধীদের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে।


























