০৮:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছে শিক্ষার্থী

নওগাঁর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বয়:সন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীদের যৌন জ্ঞান ও প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে তেমন একটা সচেতন নয়। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই অসচেতনতার হার বেশি। ফলে বেশির ভাগ কিশোর-কিশোরী তাদের বয়:সন্ধিকালে শরীর ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। তাই সারা বছরই নানা রকমের রোগ-ব্যাধিতে ভোগে। আমরা মনে করছি আমাদের সন্তানরা হয়তো যৌন সম্পর্কে জড়াচ্ছে না, আমরা তাদের এই চর্চা থেকে সরিয়ে রাখতে পারছি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বয়:সন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের মনো-দৈহিক ও মনো-সামাজিক, আবেগীয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তন ঘটে। বয়:সন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের নিজের দেহ ও মন নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকে। আর এই প্রশ্নের সঠিক জবাব না পেলে বিভ্রান্তি থেকে নানারকম ক্ষতি হতে পারে। একজন শিশু যখন বয়:সন্ধিকালে পৌঁছে, তখন সেই শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আর এই সব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ব্র্যাকের “অধিকার এখানে” প্রকল্পের আওতায় ৬টি গ্রুপে ২৫জন করে ইয়ুথ সদস্যরা কাজ করছে।
এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশে অধিকার এখানে, এখনই (রাইট হিয়ার রাইট নাও-আরএইচআরএন-২) প্রকল্পের যাত্রা শুরু। বর্তমানে ব্র্যাকের নেতৃত্বে প্রকল্পটি কাজ করছে যা চলবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। এই প্রকল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে আছে তরুণরা। প্রকল্পের ইয়ুথগণ যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার প্রাপ্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমন্বিত যৌনতা শিক্ষা পাঠদান ফলোআপ কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ভিজিট ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে।
ইয়ুথদের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বয়:সন্ধিকালীন কিশোর-কিশোরীদের মনোদৈহিক ও মনোসামাজিক, আবেগীয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তন সম্পর্কিত আলোচনা ও শাহানা কার্টুন প্রর্দশন অব্যাহত রয়েছে। কমিউনিটির জনগোষ্ঠিীর মধ্যে উঠান বৈঠক করার ফলে বয়:সন্ধিকালীন পরিবর্তন, মাসিককালীন সময়ে স্যানিটারী প্যাড ব্যবহার, স্বপ্নস্খলনের সময়ে করনীয় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উঠান বৈঠকে কুইজের মাধ্যমে স্যানিটারী প্যাড বিতরণ করায় পরিবারে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ।
ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি কর্মসূচির আওতায় অধিকার এখানে এখনই প্রকল্পটি যুব ও তরুণ জনগোষ্ঠী (১৫-২৪বছর), শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, এসএমসি সদস্য, অভিভাবক, ধর্মীয় নেতা, কমিউনিটি লিডার, জেন্ডার বৈচিত্র্য জনগোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রশাসন (মন্ত্রণালয়/জেলা/উপজেলা প্রশাসন/ মহিলা বিষয়ক/ সমাজসেবা / যুব উন্নয়ন/ শিক্ষা/পরিবার পরিকল্পনাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ), জনপ্রতিনিধি (স্থানীয় সরকার), স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানকারী সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা, মিডিয়ার সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন নাগরিক সমাজ ও সিভিল সোসাইটির সদস্যবৃন্দ প্রমূখদের সাথে এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলায় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে, জনমত গড়ে তুলবে, আইন ও নীতিমালায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে এবং সুশীল সমাজের প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করতে ভুমিকা রাখবে বলে মনে করছে নওগাঁর সচেতন মহল।
নওগাঁ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য ইসরাফিল আলম জানায় ব্র্যাকের সহায়তায় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও সামাজিক কুপ্রথা ও অপপ্রচার নিয়ে আমরা কাজ করছি। আর সকল কিশোর কিশোরীদের আওতায় আনতে পারলে এর সুফল মিলবে দ্রুতই। এমন জনগুরুত্বপূর্ন বিষয়ে কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
নওগাঁর অতিরিক্ত সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আলী আকন্দ জানান সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কাজ করছে। আমরা তাদেরকে পরামর্শ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি।
জনপ্রিয় সংবাদ

জামায়াতের ৩ জানুয়ারি মহাসমাবেশ স্থগিত

নওগাঁয় কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছে শিক্ষার্থী

আপডেট সময় : ০৩:০০:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩
নওগাঁর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বয়:সন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীদের যৌন জ্ঞান ও প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে তেমন একটা সচেতন নয়। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই অসচেতনতার হার বেশি। ফলে বেশির ভাগ কিশোর-কিশোরী তাদের বয়:সন্ধিকালে শরীর ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে। তাই সারা বছরই নানা রকমের রোগ-ব্যাধিতে ভোগে। আমরা মনে করছি আমাদের সন্তানরা হয়তো যৌন সম্পর্কে জড়াচ্ছে না, আমরা তাদের এই চর্চা থেকে সরিয়ে রাখতে পারছি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। বয়:সন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের মনো-দৈহিক ও মনো-সামাজিক, আবেগীয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তন ঘটে। বয়:সন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের নিজের দেহ ও মন নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকে। আর এই প্রশ্নের সঠিক জবাব না পেলে বিভ্রান্তি থেকে নানারকম ক্ষতি হতে পারে। একজন শিশু যখন বয়:সন্ধিকালে পৌঁছে, তখন সেই শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আর এই সব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ব্র্যাকের “অধিকার এখানে” প্রকল্পের আওতায় ৬টি গ্রুপে ২৫জন করে ইয়ুথ সদস্যরা কাজ করছে।
এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশে অধিকার এখানে, এখনই (রাইট হিয়ার রাইট নাও-আরএইচআরএন-২) প্রকল্পের যাত্রা শুরু। বর্তমানে ব্র্যাকের নেতৃত্বে প্রকল্পটি কাজ করছে যা চলবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। এই প্রকল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে আছে তরুণরা। প্রকল্পের ইয়ুথগণ যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার প্রাপ্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমন্বিত যৌনতা শিক্ষা পাঠদান ফলোআপ কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ভিজিট ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে।
ইয়ুথদের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বয়:সন্ধিকালীন কিশোর-কিশোরীদের মনোদৈহিক ও মনোসামাজিক, আবেগীয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তন সম্পর্কিত আলোচনা ও শাহানা কার্টুন প্রর্দশন অব্যাহত রয়েছে। কমিউনিটির জনগোষ্ঠিীর মধ্যে উঠান বৈঠক করার ফলে বয়:সন্ধিকালীন পরিবর্তন, মাসিককালীন সময়ে স্যানিটারী প্যাড ব্যবহার, স্বপ্নস্খলনের সময়ে করনীয় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উঠান বৈঠকে কুইজের মাধ্যমে স্যানিটারী প্যাড বিতরণ করায় পরিবারে বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ।
ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি কর্মসূচির আওতায় অধিকার এখানে এখনই প্রকল্পটি যুব ও তরুণ জনগোষ্ঠী (১৫-২৪বছর), শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, এসএমসি সদস্য, অভিভাবক, ধর্মীয় নেতা, কমিউনিটি লিডার, জেন্ডার বৈচিত্র্য জনগোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রশাসন (মন্ত্রণালয়/জেলা/উপজেলা প্রশাসন/ মহিলা বিষয়ক/ সমাজসেবা / যুব উন্নয়ন/ শিক্ষা/পরিবার পরিকল্পনাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ), জনপ্রতিনিধি (স্থানীয় সরকার), স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানকারী সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন সংস্থা, মিডিয়ার সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন নাগরিক সমাজ ও সিভিল সোসাইটির সদস্যবৃন্দ প্রমূখদের সাথে এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে নওগাঁ জেলায় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করবে, জনমত গড়ে তুলবে, আইন ও নীতিমালায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে এবং সুশীল সমাজের প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করতে ভুমিকা রাখবে বলে মনে করছে নওগাঁর সচেতন মহল।
নওগাঁ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ইয়ুথ গ্রুপের সদস্য ইসরাফিল আলম জানায় ব্র্যাকের সহায়তায় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও সামাজিক কুপ্রথা ও অপপ্রচার নিয়ে আমরা কাজ করছি। আর সকল কিশোর কিশোরীদের আওতায় আনতে পারলে এর সুফল মিলবে দ্রুতই। এমন জনগুরুত্বপূর্ন বিষয়ে কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
নওগাঁর অতিরিক্ত সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আলী আকন্দ জানান সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে কাজ করছে। আমরা তাদেরকে পরামর্শ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা করে আসছি।