১২:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফুলবাড়ীতে আলুক্ষেতে মড়ক: হতাশায় কৃষক

চলমান ঘনকুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সাথে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আলু ক্ষেতে আলুর পাতায় কালো ফোসকা পড়ে
মারা যাচ্ছে গাছ। রোগটির নাম কৃষকরা বলছেন মড়ক। এটি শীত জনিত ছত্রাক
জাতীয় রোগ।
অনেকে আগাম আলু তুলতে পারলেও যাদের আলু এখনো মাঠেই আছে তারা
আলু নিয়ে পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। এ রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়লে
উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে ধারণা করছেন আলু চাষিরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা আলুর ক্ষেতে স্প্রে
করছেন। কাছে যেতেই দেখা যাচ্ছে আলুর ক্ষেতে পাতা মোড়ানো রোগাক্রান্ত
আলু ক্ষেতে মেটারিল, মেটাটাফ ও ফোরাম সমম্বিতভাবে স্প্রে করেছেন। ৭দিন পর
স্প্রে করেছেন রিভাস নামের কীটনাশক।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের অভিমত, টানা মৃদু শৈত্য প্রবাহের সাথে
ঘনকুয়াশার প্রভাবেই কিছু এলাকার আলু ক্ষেতে ওই রোগ ধরেছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার এক হাজার ৭৭০ হেক্টর
জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত লক্ষ্য মাত্রা দাঁড়িয়েছে ১
হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে। ওই সব জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে আলুর গাছগুলো সবুজ রং
ধারণ করে সজীব হয়ে উঠেছে। ঠিক সেই মুহুর্তে গত কয়েক দিন থেকে
ঘনকুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সাথে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় আলু
খেতে পাতার মোড়ক রোগ দেখা দিয়েছে। সে কারণে কালাই পৌরসভা এলাকাসহ
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষক আলু ক্ষেত রক্ষায় দিশেহারা হয়ে
পড়েছেন। তাই কৃষকরা আক্রান্ত ক্ষেতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করেও সুফল পাচ্ছেন না
বলে জানিয়েছেন তারা।
উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর গ্রামের আলু চাষি রফিকুল ইসলাম
ও সাইফুল ইসলাম, পাঠকপাড়া গ্রামের প্রদীপ রায়, লক্ষণডাঙ্গা এলাকার রাম চন্দ্র
রায় ও আলাদিপুর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি এলাকার মহেন্দ্র নাথ রায় বলেন, তারা
প্রত্যেকে প্রতি বছর ২ থেকে ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষাবাদ করে থাকেন। কিন্তু
আলুর বাড়ন্ত মুহূর্তে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মোড়ক রোগে আলুর ফলন নিয়ে
শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গত বছর বিঘাপ্রতি জমিতে আলু আবাদে ৩০ থেকে ৩৩
হাজার টাকা খরচ হলেও এবার সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় বিঘাপ্রতি
অন্তত ১০ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ঠান্ডা
আবহাওয়া আলু চাষের জন্য উপকারী। কিন্তু একটানা ঘনকুয়াশা আর মৃদু
শৈত্যপ্রবাহ এ ফসলের জন্য ক্ষতিকর। ঘনকুয়াশা থাকলে আলু ক্ষেত ছত্রাক দ্বারা
আক্রান্ত হয়। তাই এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক
সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে এতে ফলনে
কোনো বিরুপ প্রভাব পড়বে না।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

ফুলবাড়ীতে আলুক্ষেতে মড়ক: হতাশায় কৃষক

আপডেট সময় : ০২:২৭:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

চলমান ঘনকুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সাথে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আলু ক্ষেতে আলুর পাতায় কালো ফোসকা পড়ে
মারা যাচ্ছে গাছ। রোগটির নাম কৃষকরা বলছেন মড়ক। এটি শীত জনিত ছত্রাক
জাতীয় রোগ।
অনেকে আগাম আলু তুলতে পারলেও যাদের আলু এখনো মাঠেই আছে তারা
আলু নিয়ে পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। এ রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়লে
উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে ধারণা করছেন আলু চাষিরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা আলুর ক্ষেতে স্প্রে
করছেন। কাছে যেতেই দেখা যাচ্ছে আলুর ক্ষেতে পাতা মোড়ানো রোগাক্রান্ত
আলু ক্ষেতে মেটারিল, মেটাটাফ ও ফোরাম সমম্বিতভাবে স্প্রে করেছেন। ৭দিন পর
স্প্রে করেছেন রিভাস নামের কীটনাশক।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের অভিমত, টানা মৃদু শৈত্য প্রবাহের সাথে
ঘনকুয়াশার প্রভাবেই কিছু এলাকার আলু ক্ষেতে ওই রোগ ধরেছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার এক হাজার ৭৭০ হেক্টর
জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত লক্ষ্য মাত্রা দাঁড়িয়েছে ১
হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে। ওই সব জমিতে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ হয়েছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে আলুর গাছগুলো সবুজ রং
ধারণ করে সজীব হয়ে উঠেছে। ঠিক সেই মুহুর্তে গত কয়েক দিন থেকে
ঘনকুয়াশা ও কনকনে তীব্র শীতের সাথে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় আলু
খেতে পাতার মোড়ক রোগ দেখা দিয়েছে। সে কারণে কালাই পৌরসভা এলাকাসহ
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ কৃষক আলু ক্ষেত রক্ষায় দিশেহারা হয়ে
পড়েছেন। তাই কৃষকরা আক্রান্ত ক্ষেতে ছত্রাক নাশক স্প্রে করেও সুফল পাচ্ছেন না
বলে জানিয়েছেন তারা।
উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রামভদ্রপুর গ্রামের আলু চাষি রফিকুল ইসলাম
ও সাইফুল ইসলাম, পাঠকপাড়া গ্রামের প্রদীপ রায়, লক্ষণডাঙ্গা এলাকার রাম চন্দ্র
রায় ও আলাদিপুর ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি এলাকার মহেন্দ্র নাথ রায় বলেন, তারা
প্রত্যেকে প্রতি বছর ২ থেকে ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষাবাদ করে থাকেন। কিন্তু
আলুর বাড়ন্ত মুহূর্তে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মোড়ক রোগে আলুর ফলন নিয়ে
শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। গত বছর বিঘাপ্রতি জমিতে আলু আবাদে ৩০ থেকে ৩৩
হাজার টাকা খরচ হলেও এবার সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় বিঘাপ্রতি
অন্তত ১০ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ঠান্ডা
আবহাওয়া আলু চাষের জন্য উপকারী। কিন্তু একটানা ঘনকুয়াশা আর মৃদু
শৈত্যপ্রবাহ এ ফসলের জন্য ক্ষতিকর। ঘনকুয়াশা থাকলে আলু ক্ষেত ছত্রাক দ্বারা
আক্রান্ত হয়। তাই এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক
সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে এতে ফলনে
কোনো বিরুপ প্রভাব পড়বে না।