০৫:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আজ আমি অনার্স ফেল

ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ঠিক সে সময়ে উঠে এল আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অবন্তিকার মতো শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানি ও কুপ্রস্তাবের শিকার হন ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের ১৩তম আবর্তন ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

মিম জানান, দুই বছর আগে যৌন হয়রানি ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলে এখনো বিচার পাননি তিনি। উল্টো তাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ফেল করানো হয়েছে। এমনকি তার মা-বাবাকে অভিযোগ প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে ওই ছাত্রী বলেন, ‘কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে অন্যায় করেছি বলে আমার মনে হয়। কারণ, আজকে আমি ফেল। আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে। কোনো মহিলা টিচারের অনুপস্থিতিতে আমাকে দরজা আটকে জোর জবরদস্তি করা করা হয়। আমি হয়ত তার মতো সাহসী হতে পারি নাই। তার জন্য হয়ত আমি মারা যাই নাই। কে জানে এর পর আমি বেঁচে থাকব কি না। আমাকে একঘরে করে দিয়েছে শিক্ষকেরা। আমাকে অনার্সের ভাইভায় ফেল করানো হয়েছে। প্রতিবাদের ফলাফলস্বরূপ আজকে আমি অনার্স ফেল। একজন শিক্ষক আমাকে ৪০ মার্কের ইনকোর্স পরীক্ষায় ডাবল শূন্য দিয়েছে। এটা তো খুন। এভাবে সমাজে একের পর এক মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে খুন করে ফেলা হচ্ছে।’

‘আমি যখন অভিযোগ দায়ের করি, তখন কোনো সেল ছিল। কোনো সেল না থাকায় আমাকে সরাসরি উপাচার্য স্যার বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে হয়েছিল। উপাচার্য স্যার বরাবর অভিযোগ দায়ের করায় আমার ওপর অনেক ধরনের প্রেশার আসে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি তারা আমার গ্রামের বাড়িতে পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। আমার বাবা-মা অসুস্থ, তাদের ওপর প্রেশার করেছে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য। অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় আমাকে বিভাগের রুমে কোনো মহিলা টিচারের অনুপস্থিতিতে দরজা আটকে জোর জবরদস্তি করা করা হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সাংবাদিক সমিতি আছে সেখানে ওই টিচার ক্ষমতাবলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেছে আমার প্রসঙ্গে যেন কোনো নিউজ না আসে।’

ওই ছাত্রী আরও বলেন, ‘আমি যে এত স্বাভাবিকভাবে কথা বলার চেষ্টা করছি- আমি ভেতর থেকে এতটা স্বাভাবিক না। আমার একটা অভিযোগ দায়ের করার কারণে ওইটা যেন অপরাধ হয়ে উঠেছে।আমার ক্লাসমেটরা আমার সঙ্গে মিশতে ভয় পায়। আমি দুই বছর যাবৎ কারও সঙ্গে মিশতে পারি না। আমাকে একা করে ফেলা হয়েছে। ওই শিক্ষক ডিপার্টমেন্ট বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াই। উনাকে কোনো লিভে পাঠানো হয় নাই। আমাকে এইট সেমিস্টারে ফেল করানো হয়েছে। আমার এসাইমেন্ট টিচাররা নিতে চাই না। আমাকে সেভেন সেমিস্টারে ফেল করানো হয়েছে। আমাকে অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ভাইভায় ফেল করানো হয়েছে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

ইয়েমেনের দক্ষিণে সৌদি বিমান হামলার অভিযোগ, নতুন করে উত্তেজনার আশঙ্কা

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আজ আমি অনার্স ফেল

আপডেট সময় : ১০:৫১:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ঠিক সে সময়ে উঠে এল আরেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অবন্তিকার মতো শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানি ও কুপ্রস্তাবের শিকার হন ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের ১৩তম আবর্তন ব্যাচের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

মিম জানান, দুই বছর আগে যৌন হয়রানি ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলে এখনো বিচার পাননি তিনি। উল্টো তাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ফেল করানো হয়েছে। এমনকি তার মা-বাবাকে অভিযোগ প্রত্যাহারের চাপ দেওয়া হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে ওই ছাত্রী বলেন, ‘কুপ্রস্তাবে রাজি না হয়ে অন্যায় করেছি বলে আমার মনে হয়। কারণ, আজকে আমি ফেল। আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলে। কোনো মহিলা টিচারের অনুপস্থিতিতে আমাকে দরজা আটকে জোর জবরদস্তি করা করা হয়। আমি হয়ত তার মতো সাহসী হতে পারি নাই। তার জন্য হয়ত আমি মারা যাই নাই। কে জানে এর পর আমি বেঁচে থাকব কি না। আমাকে একঘরে করে দিয়েছে শিক্ষকেরা। আমাকে অনার্সের ভাইভায় ফেল করানো হয়েছে। প্রতিবাদের ফলাফলস্বরূপ আজকে আমি অনার্স ফেল। একজন শিক্ষক আমাকে ৪০ মার্কের ইনকোর্স পরীক্ষায় ডাবল শূন্য দিয়েছে। এটা তো খুন। এভাবে সমাজে একের পর এক মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে খুন করে ফেলা হচ্ছে।’

‘আমি যখন অভিযোগ দায়ের করি, তখন কোনো সেল ছিল। কোনো সেল না থাকায় আমাকে সরাসরি উপাচার্য স্যার বরাবর অভিযোগ দায়ের করতে হয়েছিল। উপাচার্য স্যার বরাবর অভিযোগ দায়ের করায় আমার ওপর অনেক ধরনের প্রেশার আসে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি তারা আমার গ্রামের বাড়িতে পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। আমার বাবা-মা অসুস্থ, তাদের ওপর প্রেশার করেছে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য। অভিযোগ প্রত্যাহার না করায় আমাকে বিভাগের রুমে কোনো মহিলা টিচারের অনুপস্থিতিতে দরজা আটকে জোর জবরদস্তি করা করা হয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সাংবাদিক সমিতি আছে সেখানে ওই টিচার ক্ষমতাবলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেছে আমার প্রসঙ্গে যেন কোনো নিউজ না আসে।’

ওই ছাত্রী আরও বলেন, ‘আমি যে এত স্বাভাবিকভাবে কথা বলার চেষ্টা করছি- আমি ভেতর থেকে এতটা স্বাভাবিক না। আমার একটা অভিযোগ দায়ের করার কারণে ওইটা যেন অপরাধ হয়ে উঠেছে।আমার ক্লাসমেটরা আমার সঙ্গে মিশতে ভয় পায়। আমি দুই বছর যাবৎ কারও সঙ্গে মিশতে পারি না। আমাকে একা করে ফেলা হয়েছে। ওই শিক্ষক ডিপার্টমেন্ট বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াই। উনাকে কোনো লিভে পাঠানো হয় নাই। আমাকে এইট সেমিস্টারে ফেল করানো হয়েছে। আমার এসাইমেন্ট টিচাররা নিতে চাই না। আমাকে সেভেন সেমিস্টারে ফেল করানো হয়েছে। আমাকে অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ভাইভায় ফেল করানো হয়েছে।’