স্মার্ট বাংলাদেশ হলো বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিশ্রুতি ও স্লোগান। যা ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের পরিকল্পনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম এই প্রতিশ্রুতি ও স্লোগান দেন। ২০২২ সালের ১২ই ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) অনুষ্ঠানে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার কথা বলেন তিনি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতিকে বুকে ধারণ করে স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট এয়ারলাইন্স গড়ার প্রত্যয় নিয়ে আসছে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স। এভিয়েশন জগতে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স এক যুগান্তকারী মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে বিশ্বাস করেন এয়ারলাইন্সের সঙ্গে জড়িত সব স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, যিনি দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে জীবনের মায়াকে তুচ্ছ করে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন দেশকে হানাদারমুক্ত করতে, পরবর্তীতে জীবনের বড় একটি অংশ ব্যয় করেছেন দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বকে রক্ষার কাজে, সেই লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর (পিএইচডি, এনডিসি, পিএসসি) নেতৃত্বে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্সের কাজ। এ প্রসঙ্গে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে বিশ্বের একটি অন্যতম প্রধান এভিয়েশনহাব করার যে লক্ষ্য স্থির করেছেন, সেই লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিকে সমৃদ্ধ করার জন্য নিরলস কাজ করে যাবে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স। সাধারণ মানুষের পাশে থেকেই এবং সাধারণ মানুষের জন্য একটি স্মার্ট এয়ারলাইন্স গড়তে চাই আমরা। শুধু আভ্যন্তরীণ বাজার নয়, বিশ্ব বাজারেও শক্ত ভীত গড়তে চায় ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এশিয়ার একটি জায়ান্ট এয়ায়রলাইন্সের সঙ্গে এরই মধ্যে সমঝোতার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন । ‘Connecting Dreams, Uniting Destinations’-এই স্বপ্নকে সামনে রেখে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্সের কর্মীরা।

সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ ভ্রমণের বিষয়টিকে গুরত্ব দিয়ে এরই মধ্যে এয়ার ক্রাফট নিশ্চিতকরণসহ এওসি সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এয়ারলাইন্সটি। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের আকাশে ডানা মেলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে খুব দ্রুত লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়াসম্পন্ন করবে এই এয়ারলাইন্স। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স ২০২১ সালের ৪ঠা মে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্ম সমূহের পরিদপ্তরে নিবন্ধিত হয়। পরবর্তীতে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স তার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে ১লা জুলাই-২০২১। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের মার্চ মাসে এয়ারলাইন্সটি বেবিচক থেকে অনাপত্তিপত্র গ্রহণ করে। বর্তমানে ফ্লাইঢাকা এয়ারলাইন্স এওসি প্রক্রিয়া চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম ও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এটিআর ৭২-৬০০ মডেলের এয়ার ক্রাফট দিয়ে আভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে এয়ারলাইন্সটির। যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পাইলটদের ট্রেনিংপরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে ফ্লাই ঢাকা। ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের প্রধান হিসেবে ক্যাপ্টেন আবদুল্লার নেতৃত্বে একদল চৌকস পাইলট বিষয়টি নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। পাইলটদের নিয়ে ফ্লাই ঢাকার পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন আবদুল্লাহ বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে খুব শীঘ্রই পাইলটদের প্রশিক্ষণ শুরু করা হবে। প্রশিক্ষণের প্রতিটি ধাপে পাইলটদের দক্ষতা নিরুপণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গৃহীত হবে। যাত্রীদের নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে নারাজ। যাত্রীদের ভ্রমণ নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

এবার আশা যাক যারা ফ্লাইট চলাকালীন যাত্রীদের সেবা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সেই এয়ার হোস্টেজ বা কেবিন ক্রুদের প্রসঙ্গে। এয়ার হোস্টেজ বা কেবিন ক্রু বিমানের অন্যতম প্রয়োজনীয় কর্মীবাহিনী। ক্রুদের মূল কাজই হচ্ছে বিমানে বহনকারী যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ সেবা নিশ্চিত করা। এছাড়া পরিচ্ছন্নতা, আবহাওয়াসংক্রান্ত তথ্য, খাবার-দাবারের সরঞ্জাম পৌঁছানো, জরুরি ইকুইপমেন্ট, ফার্স্ট এইড প্রভৃতি ঠিকঠাক আছে কিনা এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হয়। এসব বিষয়কে মাথায় রেখে ফ্লাই ঢাকা এয়ারলাইন্স এক ঝাঁক তরুণ ও অভিজ্ঞ কেবিন ক্রুদের ট্রেনিং এরই মধ্যে শুরু করে দিয়েছে। হেড অফ কেবিন সেফটি এবং সার্ভিস মো. খালেদুর রহমান বলেন, কেবিন সেফটি এবং সার্ভিসের যেকোনো এয়ারলাইন্সের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ডিপার্টমেন্ট। সেই বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ‘ফ্লাই ঢাকা’ এয়ারলাইন্স এক ঝাঁক তরুণ এবং অভিজ্ঞ কেবিন ক্রুদের নিয়োগ এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছে। প্রত্যেকেই বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে দক্ষতার সাথে কাজ করে আসছে।

অনেকে মনে করে কেবিনক্রুদের দায়িত্ব শুধু খাবার পরিবেশন করা। কিন্তু এটাই শুধু কেবিনক্রুদের কাজ নয়। কেবিনক্রুদের মূল এবং প্রধান কাজই হচ্ছে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দে ভ্রমণ সেবা নিশ্চিত করা। কেবিনক্রুদের ডিউটির পুরোটা সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয় । যেকোনো সময় যেকোনো ইমারজেন্সি হতে পারে । সেই লক্ষে কেবিনক্রুদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলা হয়। কেবিনক্রুরা যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কেবিনক্রুদের দায়িত্ব একজন যোদ্ধার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তাই কেবিনক্রুদের একটি এয়ারলাইন্সের অন্তরাত্মা বলা যেতে পারে। ফ্লাইঢাকা এয়ারলাইন্স যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়, সেই লক্ষ্যে খুব শীঘ্রই কেবিনক্রুদের বিভাগীয় প্রশিক্ষণ শুরু করতে যাচ্ছে। বর্তমানে আভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে এয়ারলাইন্সটির। পরবর্তীতে বহির্বিশ্বে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বহরেএয়ারবাস/বোয়িংএয়ার ক্রাফট ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে ফ্লাই ঢাকা। এয়ারলাইন্সটি চালু হলে দেশে পরিচালিত বেসরকারি এয়ারলাইন্সের সংখ্যা দাঁড়াবে চারটি।


























