০৬:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দিচ্ছে বেলজিয়াম

➢আইফেল টাওয়ারের কাছে ৫ কফিন, রাশিয়াকে সন্দেহ ফ্রান্সের

রাশিয়ার টুঁটি চেপে ধরতে সাহস কুলায়নি বেলজিয়ামের। তবে নেদারল্যান্ডস সেই পথে না হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে শাংগ্রি-লা ডায়ালগে পলিটিকোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাজসা ওলোনগ্রেন জানিয়েছে, ইউক্রেনকে ২৪টি এফ-১৬ ফাইটার জেট দেবে নেদারল্যান্ড। তবে তার দেশ বেলজিয়ামের পথ অনুসরণ করবে না।

 

বেলজিয়াম জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ঠিকই দেবে, তবে সেগুলো রাশিয়ার আকাশসীমায় ওড়ানো যাবে না। রাশিয়ায় ঢুকে হামলার জন্য ডাচ ফাইটার জেট ব্যবহার করার অনুমতি দিলেও আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের সনদ মেনে চলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ওলোনগ্রেন। সিঙ্গাপুরে এই নিরাপত্তা সম্মেলনের ওলোনগ্রেন ছাড়াও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনসহ অন্য সিনিয়র কর্মকর্তারা মিলিত হন। রোববারের এই সম্মেলনে যোগ দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। ইউক্রেনকে সহায়তা ইস্যুতে ওলোনগ্রেন বড় বড় আশ্বাস দিলেও তার সময় ফুরিয়ে এসেছে। দেশটিতে নতুন ডানপন্থি সরকার শপথ নিলেই তাকে পদত্যাগ করতে হবে। এখন নতুন সরকার যেন ন্যাটো ও ইউক্রেন সহায়তা অব্যাহত রাখে সেটাই চাইছেন ওলোনগ্রেন।

 

এদিকে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের কাছে পাঁচটি কফিন রাখার ঘটনায় রাশিয়ার হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন ফ্রান্সের গোয়েন্দারা। কফিনগুলো ফ্রান্সের পতাকা দিয়ে মোড়ানো ছিল। কফিনে লেখা ছিল, ‘ইউক্রেনের ফরাসি সেনারা’। গত শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে একটি ভ্যানে করে কয়েকজন ব্যক্তিকে কফিনগুলো রেখে যেতে দেখা যায়। তবে কফিনের ভেতরে প্লাস্টিকের বস্তা ছাড়া কিছু পাওয়া যায়নি।

 

ঘটনার পরপরই ভ্যানচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চালক পুলিশকে জানান, এতে তার কোনো দায় নেই। কফিনগুলো বহনের জন্য তাকে ৪০ ইউরো দিয়েছিলেন দুই ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, এ ঘটনার এক দিন আগে ওই চালক বুলগেরিয়া থেকে প্যারিসে আসেন। চালকের পর প্যারিসের কেন্দ্রস্থলের একটি বাসস্ট্যান্ড থেকে আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা সেখান থেকে বাসে চড়ে জার্মানির বার্লিনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই দুজন পুলিশকে জানান, আইফেল টাওয়ারের কাছে কফিন রাখার জন্য তাদের চারশ’ ইউরো দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ভ্যানচালক বুলগেরিয়ার নাগরিক। অপর দুজনের মধ্যে একজন ইউক্রেনের ও অন্যজন জার্মানির নাগরিক।

 

ফ্রান্সের কৌঁসুলির কার্যালয় জানিয়েছে, গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তিকে রোববার আদালতে হাজির করা হয়। ‘নাশকতার পরিকল্পনার’ অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে। ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, এ ঘটনার পেছনে দেশের বাইরের কোনো শক্তির ইন্ধন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক দুটি ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন ফরাসি কর্মকর্তারা। সেই দুই ঘটনায় রাশিয়ার গুপ্তচরেরা জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা ফরাসি পুলিশের।

 

 

ঘটনা দুটির একটি গত বছরের অক্টোবরে। ওই মাসে ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসকগোষ্ঠী হামাস। এর কিছুদিন পর প্যারিসের বেশ কিছু দেয়ালে ইসরায়েলের পতাকার ছাপ দেখা যায়। ওই ঘটনায় মলদোভার এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফরাসি পুলিশের ধারণা, এ কাজের জন্য রাশিয়ার গুপ্তচরেরা ওই দম্পতিকে অর্থ দিয়েছিলেন। এরপর গত মাসে প্যারিসের একটি হলোকাস্ট স্মৃতিস্তম্ভে (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি নিধনের স্মৃতিস্তম্ভ) রক্তাক্ত হাতের ছাপ দেওয়া হয়। পুলিশের ধারণা, যারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুরে বাসের ধাক্কায় ইজিবাইক চালক নিহত, বাসচালক আটক

ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান দিচ্ছে বেলজিয়াম

আপডেট সময় : ০৮:৫৬:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুন ২০২৪

➢আইফেল টাওয়ারের কাছে ৫ কফিন, রাশিয়াকে সন্দেহ ফ্রান্সের

রাশিয়ার টুঁটি চেপে ধরতে সাহস কুলায়নি বেলজিয়ামের। তবে নেদারল্যান্ডস সেই পথে না হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে। সিঙ্গাপুরে শাংগ্রি-লা ডায়ালগে পলিটিকোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাজসা ওলোনগ্রেন জানিয়েছে, ইউক্রেনকে ২৪টি এফ-১৬ ফাইটার জেট দেবে নেদারল্যান্ড। তবে তার দেশ বেলজিয়ামের পথ অনুসরণ করবে না।

 

বেলজিয়াম জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ঠিকই দেবে, তবে সেগুলো রাশিয়ার আকাশসীমায় ওড়ানো যাবে না। রাশিয়ায় ঢুকে হামলার জন্য ডাচ ফাইটার জেট ব্যবহার করার অনুমতি দিলেও আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের সনদ মেনে চলার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ওলোনগ্রেন। সিঙ্গাপুরে এই নিরাপত্তা সম্মেলনের ওলোনগ্রেন ছাড়াও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনসহ অন্য সিনিয়র কর্মকর্তারা মিলিত হন। রোববারের এই সম্মেলনে যোগ দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও। ইউক্রেনকে সহায়তা ইস্যুতে ওলোনগ্রেন বড় বড় আশ্বাস দিলেও তার সময় ফুরিয়ে এসেছে। দেশটিতে নতুন ডানপন্থি সরকার শপথ নিলেই তাকে পদত্যাগ করতে হবে। এখন নতুন সরকার যেন ন্যাটো ও ইউক্রেন সহায়তা অব্যাহত রাখে সেটাই চাইছেন ওলোনগ্রেন।

 

এদিকে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের কাছে পাঁচটি কফিন রাখার ঘটনায় রাশিয়ার হাত রয়েছে বলে ধারণা করছেন ফ্রান্সের গোয়েন্দারা। কফিনগুলো ফ্রান্সের পতাকা দিয়ে মোড়ানো ছিল। কফিনে লেখা ছিল, ‘ইউক্রেনের ফরাসি সেনারা’। গত শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে একটি ভ্যানে করে কয়েকজন ব্যক্তিকে কফিনগুলো রেখে যেতে দেখা যায়। তবে কফিনের ভেতরে প্লাস্টিকের বস্তা ছাড়া কিছু পাওয়া যায়নি।

 

ঘটনার পরপরই ভ্যানচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। চালক পুলিশকে জানান, এতে তার কোনো দায় নেই। কফিনগুলো বহনের জন্য তাকে ৪০ ইউরো দিয়েছিলেন দুই ব্যক্তি। পুলিশ জানায়, এ ঘটনার এক দিন আগে ওই চালক বুলগেরিয়া থেকে প্যারিসে আসেন। চালকের পর প্যারিসের কেন্দ্রস্থলের একটি বাসস্ট্যান্ড থেকে আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা সেখান থেকে বাসে চড়ে জার্মানির বার্লিনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই দুজন পুলিশকে জানান, আইফেল টাওয়ারের কাছে কফিন রাখার জন্য তাদের চারশ’ ইউরো দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ভ্যানচালক বুলগেরিয়ার নাগরিক। অপর দুজনের মধ্যে একজন ইউক্রেনের ও অন্যজন জার্মানির নাগরিক।

 

ফ্রান্সের কৌঁসুলির কার্যালয় জানিয়েছে, গ্রেপ্তার তিন ব্যক্তিকে রোববার আদালতে হাজির করা হয়। ‘নাশকতার পরিকল্পনার’ অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে। ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, এ ঘটনার পেছনে দেশের বাইরের কোনো শক্তির ইন্ধন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর সঙ্গে সাম্প্রতিক দুটি ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছেন ফরাসি কর্মকর্তারা। সেই দুই ঘটনায় রাশিয়ার গুপ্তচরেরা জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা ফরাসি পুলিশের।

 

 

ঘটনা দুটির একটি গত বছরের অক্টোবরে। ওই মাসে ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার শাসকগোষ্ঠী হামাস। এর কিছুদিন পর প্যারিসের বেশ কিছু দেয়ালে ইসরায়েলের পতাকার ছাপ দেখা যায়। ওই ঘটনায় মলদোভার এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফরাসি পুলিশের ধারণা, এ কাজের জন্য রাশিয়ার গুপ্তচরেরা ওই দম্পতিকে অর্থ দিয়েছিলেন। এরপর গত মাসে প্যারিসের একটি হলোকাস্ট স্মৃতিস্তম্ভে (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি নিধনের স্মৃতিস্তম্ভ) রক্তাক্ত হাতের ছাপ দেওয়া হয়। পুলিশের ধারণা, যারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তারা বিদেশে পালিয়ে গেছেন।