বাঙালির প্রাণের বর্ষবরণ উৎসব ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩২’ উদযাপন উপলক্ষে ‘পহেলা বৈশাখে হোক অঙ্গীকার আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের অধিকার’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আলোচনা পর্বের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।
আয়োজনে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বুঝিয়ে নেওয়ার উৎসব। সামাজিক ক্লাব আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান একই দেখা যায়। আমরা আগামী বর্ষবরণ উৎসবে একাডেমিক ফ্লেভার যুক্ত করার চেষ্টা করবো। পুরাতন সিলেবাস বাতিল করে নতুন সিলেবাস চালু করা এটাই আমাদের বর্ষবরণ। বর্ষবরণ উপলক্ষে বাংলাদেশের গীতিকারদের তেমন কোন গান নেই। বাংলা বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক, গীতিকাররা বর্ষবরণ উপলক্ষে গান লিখবেন।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশাখী মঞ্চ, জারুলতলায় এই আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাধারণ জনতা অংশ নেয়।
আলোচনা সভায় শাহাদাত হোসেন ও উম্মে সালমা নিঝুমের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন চবি উপ-উপাচার্য ( প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, বিশেষ অতিথি উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রভোস্ট ও শিক্ষকবৃন্দ।
আলোচনা সভায় চবি উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, সংস্কৃতি মানে নিজস্ব কৃষ্টি কালচার উদযাপন করা। বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষে জনগণ ও প্রশাসন মদ খেয়ে রাস্তায় পড়ে থাকে এটা আমাদের সংস্কৃতি নয়। নববর্ষ মানে গতবছরে যে পাপাচার, দুর্নীতি করেছি তা থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা। আমাদের আলাদা চিন্তা, দর্শন ও ভাষা রয়েছে, ভিন্ন সংস্কৃতি লালন করা যাবে না। শোভাযাত্রায় হুতুমপেঁচা, বানর, গাধা বানিয়ে রাস্তায় বের হওয়া সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে না। আমরা সুস্থ সংস্কৃতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারববাজি, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ চাই।
সভাপতির বক্তব্যে চবি উপ-উপাচার্য ( প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লবের ফলে আজ আমরা এত চমৎকারভাবে বর্ষবরণ করতে পাচ্ছি। চায়নারা তাদের নববর্ষ উপলক্ষে ১৫ দিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখে। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি কে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা নিজেদের সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে ব্রিটিশ, আমেরিকান হয়ে যাচ্ছি। অপসংস্কৃতি দূর করে নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চাই হোক বাংলা নববর্ষের অঙ্গিকার।
এরআগে সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ চত্বর থেকে শুরু হয়ে জারুলতলায় এসে শোভাযাত্রা শেষ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সাধারণ জনতা অংশ নেয়।


























