চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ নিয়ে একের পর এক বিজ্ঞপ্তি, আবার সেগুলো বাতিল। সবশেষে নিয়োগ প্রক্রিয়াটিই থেমে গেল। যদিও বর্তমানে আলোচনায় রয়েছে, সরকার এই পদে চুক্তিভিত্তিক একজন নারী কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিতে পারেন। আগামী সপ্তাহে আসতে পারে এমন সিদ্ধান্ত। এ কারণে ওয়াসাজুড়ে কৌতুহল বাড়ছে—কে হতে যাচ্ছেন নতুন এমডি? আর কী এমন কারণে এই পদে নিয়োগ নিয়ে চলছে এত টালবাহানা? এদিকে, গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম ওয়াসার বহুল আলোচিত এমডি একেএম ফজলুল্লাহকে অপসারণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি এই পদে ছিলেন। তার জায়গায় ভারপ্রাপ্ত এমডি হন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, যিনি বর্তমানে বদলির অপেক্ষায়।এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ২৩ ও ২৪ মার্চ ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্যও নতুন এমডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। কিন্তু দুই শহরের ওয়াসার জন্য নির্ধারিত যোগ্যতার শর্তে দেখা যায় বিস্তর ফারাক।ওই সময়ে বিজ্ঞপ্তিতে— ঢাকা ওয়াসায় এমডি হতে হলে প্রার্থীকে হতে হবে প্রকৌশলী, বয়স হতে হবে অনূর্ধ্ব ৬০ এবং থাকতে হবে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন খাতে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা। অথচ চট্টগ্রামে বয়সসীমা ধরা হয় ৫৫, সঙ্গে রাখা হয় সাধারণ প্রশাসনের অভিজ্ঞতার পথও। পরবর্তীতে সমালোচনার মুখে দ্বিতীয় দফায় বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করে চট্টগ্রামেও বয়সসীমা করা হয় ৬০ বছর এবং প্রকৌশলীদের জন্যই আবেদন উন্মুক্ত রাখা হয়। বাদ দেওয়া হয় প্রশাসন ক্যাডারদের আবেদনযোগ্যতা। এরপর ২০ এপ্রিল পুরো প্রক্রিয়াটিই বাতিল ঘোষণা করা হয়।স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবার দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসন ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিতে চাওয়া হয়েছিল, যে কারণে কিছু শর্ত শিথিল করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সমালোচনার মুখে বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করা হয়। কিন্তু সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে ওই কর্মকর্তার যোগ্যতা মেলেনি বলে পরে তা বাতিল করা হয়েছে। সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের তালিকায় তিনজনের নাম রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম স্থপতি জেরিনা হোসেন। অন্য দু’জনের নাম প্রকাশ না হলেও জানা গেছে— কয়েকজন প্রভাবশালী প্রকৌশলী মন্ত্রণালয়ে সক্রিয় তদবির করছেন। এ অবস্থায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় চুক্তিভিত্তিক একজনকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম ওয়াসার এক কর্মকর্তা বলেন, এ নিয়োগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসায় বর্তমানে পদটি পূরণে চুক্তিভিত্তিক বিকল্পও ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে। মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করেছে। আলোচনায় উঠে এসেছে একজন নারী প্রকৌশলীর নাম, যিনি ওয়াসা সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে পূর্বেও যুক্ত ছিলেন।’অন্যদিকে, ওয়াসার অভ্যন্তরীণ সূত্র এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্টরা বলছেন— নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে, যাতে উপযুক্ত ব্যক্তি দায়িত্ব পান এবং প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রম গতিশীল হয়।উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম ওয়াসায় ৯ সদস্যের বোর্ড কমিটি গঠন করে দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ওই কমিটিতে পানি ব্যবহারকারীদের প্রতিনিধি হিসেবে রাখা হয় স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসেনকে।


























