“এই রাষ্ট্র ভেঙে ফ্যালো” ছিল আমাদের বাম ছাত্ররাজনীতিময় বেলার স্লোগান। নেতাদের তালে তালে আমরা এই স্লোগান ঝাড়তাম। জীবনের পরের সময়ে একে মূর্খতা মনে হয়েছে। কারণ, ক্ষুদ্র একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সক্ষমতাও আমাদের নাই। সেখানে সাম্রাজ্যবাদ, রাষ্ট্র, রাজা, উজির অনেক দূর কা বাত।
সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের সুধীজনদের অনেকেরই ছাত্রত্ব শেষ হয় না কোনোদিন। তারা ভেঙে ফ্যালো, গুঁড়ো করে দাও – এর বাইরে কিছু জানেন না। সারাজীবন উনারা অপোজিশনের পলিটিক্স করতে চান। জনগণের উত্থানের গণআন্দোলনে ক্ষমতা যখন খুব কাছে, তখনও উনারা আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াতকে খোঁজেন। তাদের দ্বিচারিতা বারবারের মতো ৯০ হয়ে এই ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানেও দৃশ্যমান।
ভাঙতে হলে গড়া জানতে হয় আগে। বাংলাদেশের সুধীজনদের রাজনৈতিক দল বা এনজিওগুলো টুকরো টুকরোভাবে বিভক্ত। ১ দল, ১ নেতা বিষয়টা উনারা রীতিমতো প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন।
জনগণের ক্ষমতায়ন ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে বিদ্যমান ব্যবস্থা নিয়ে সঠিক মূল্যায়ন থাকতে হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের উপযোগী পলিসি তৈরি করতে হয়। এর জন্য লাগে তুখোড় সব এক্সপার্টিজ ও রিসোর্স। কালকে আমাদের দেশ চালাতে হলে, আজকে দরকার আমাদের শ্যাডো কেবিনেট। এমন কিছু করার সক্ষমতা আছে, তেমন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ একটিও নেই।
সুধীজনরা জনগণের স্বপ্নভুক হয়ে জনগণের কাতারে থাকতে চান। কিন্তু তাদের ছদ্মবেশ মানুষ ধরে ফেলেছে। দিনে দিনে তাদের জনসমর্থন কমে যাওয়ার এটাই কারণ। এখন তারা বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেওয়া নিরাপত্তার মধ্যে থেকে ঘোরেন, ফেরেন, বিবৃতি দেন, দাবি দাবিদাওয়া তোলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ এসবে ভাবিত নয়। এক্টিভিজমের “এ” না জানাদের জন্য পড়ে থাকে শুধুই করুণা।

























