ওমানের দুকুম এলাকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রামের ৭ প্রবাসী নিহত হয়েছেন। নিহত সবাই সীতাকুণ্ড উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের বাসিন্দা। এরমধ্যে চার জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছেন স্থানীয় প্রবাসীরা। নিহতদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া চার জন হলেন- উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের আলী কব্বর সেরাংয়ে ছেলে আমিন সওদাগর, শহিদুল্লাহর ছেলে আরজু, ইব্রাহীম মিস্ত্রীর ছেলে রকি, আবুল মনসুরের ছেলে সাহেদ।
স্থানীয় প্রবাসী আমিনুল ইসলাম ও কামাল উদ্দিনের বরাত দিয়ে গতকাল বুধবার রাত ৮টায় নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময়ে রাত ১১টায় ওমানের দুকুম এলাকায় একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে ঘটনাস্থলেই কয়েকজন মারা যান। নিহতরা সবাই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সারিকাইত ইউনিয়নের বাসিন্দা। ওমানের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন তারা। কাজ শেষে ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মরদেহ দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ওমানপ্রবাসীরা। সারিকাইত ইউপি সদস্য আবু জাফর বলেন, সীতাকুণ্ডের সারিকাইত ইউনিয়নে এ খবর পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। একসঙ্গে এতজন প্রবাসীর মৃত্যু এলাকার জন্য এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। এদের অনেকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্য ছিলেন। এমন খবর সহ্য করা কঠিন। স্বজনদের হৃদয়বিদারী কান্নায় এলাকার মানুষ মুহ্যমান হয়ে পড়েছে। এর আগে, মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় পাম বাগানে কর্মরত দুই বাংলাদেশি শ্রমিক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। দেশটির সংবাদমাধ্যম হারিয়ান মেট্রো এ তথ্য জানায়। বাগানের কাজ শেষে পাহাং রাজ্যের কুয়ালা লিপিস জেলার সুঙ্গাই কোয়ান শহরে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। পাহাড়ি উঁচু-নিচু মেঠোপথ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের বহনকারী হাইলাক্স গাড়িটি গভীর খাদে পড়ে যায়। নিহতরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর সদর উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের শুকুরুদ্দিন কালুর ছেলে তুহিন আলী (২৫) এবং একই ইউনিয়নের নসিবন্দি নগর গ্রামের মো. কাবিলের ছেলে মো. শামিম রেজা (২৩)। তুহিনের মামা শফিকুল ইসলাম জানান, রবিবার মালয়েশিয়ায় সরকারি ছুটির দিন ছিল। এদিন ওভারটাইম কাজে যান তুহিন-শামীমসহ গোমস্তাপুরের পাঁচজন বাসিন্দা। কাজ শেষে একটি পিকআপে করে ঘরে ফিরছিলেন তারা। সুঙ্গাই কোয়ান এলাকায় পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলকে বাঁচাতে গিয়ে পিকআপটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সময় তিনজন লাফ দিয়ে রক্ষা পেলেও তুহিন ও শামীম গাড়ির নিচে চাপা পড়ে নিহত হন। লিপিস জেলা পুলিশ প্রধান সুপারিনটেনডেন্ট ইসমাইল মান জানান, গাহাই অ্যাগ্রোপলিটন ফার্ম থেকে শ্রমিকরা বাসায় যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগীদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুয়ালা লিপিস হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং ১৯৮৭ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ৪১(১) ধারার অধীনে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে মারাত্মক দুর্ঘটনার অভিযোগে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। অপরদিকে, মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের সুঙ্গাই বুলোহ এলাকায় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০ বছর বয়সি একজন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। সুঙ্গাই বুলোহ জেলা পুলিশ প্রধান সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ হাফিজ মুহাম্মদ নূর জানান, সুঙ্গাই বুলোর জালান পেরসিয়ারান বিআরপি ১-এর ট্র্যাফিক লাইট মোড়ে চার গাড়ির সংঘর্ষে বাংলাদেশের এক নাগরিক নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার শিকার হয় দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি, একটি মোটরসাইকেল এবং নিহত বাংলাদেশির সাইকেল। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, ৪০ বছর বয়সি ওই বাংলাদেশি ব্যক্তি তার সাইকেলে করে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। প্রথম ধাক্কায় তিনি রাস্তার ওপর ছিটকে পড়েন। এরপর আরও একটি মোটরসাইকেল এবং অন্য একটি এমপিভি তাকে ধাক্কা দেয়। ফলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশ আরও জানায়, নিহতের মরদেহ সুঙ্গাই বুলোহ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ১৯৭৬ সালের সড়ক পরিবহন আইনের ৪১ (১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।


























