০৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা

  • জুয়েলারি দোকানে চুরি-ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা
  • একমাসে ২০টি স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনা
  • সাত মাসে দেড় হাজারের বেশি চুরি-ডাকাতির মামলা
  • স্বর্ণের দোকানের নিরাপত্তায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জুয়েলারি সমিতিা

আতঙ্কে রয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। কারণ চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে ১৫৬৪টি চুরি-ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বর্ণের দোকানের নিরাপত্তায় পুলিশকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জুয়েলারি সমিতি। গত বুধবার রাতে রাজধানীর মৌচাকের ফরচুন শপিংমল থেকে চুরি হয় ৫০০ ভরি স্বর্ণ। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই চুরির ঘটনা। দেখা যায় দুজন মুখ ঢেকে আর কালো বোরকা পরে দোকানটি থেকে চুরি করছে স্বর্ণালঙ্কার। এর আগে, ৫ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর একটি জুয়েলারি দোকান থেকে প্রায় ১২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ পৌনে তিন লাখ টাকা চুরি করে দুর্বৃত্তরা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, ডিএমপি এলাকার ৫০টি থানায় বছরের প্রথম সাত মাসেই ডাকাতির মামলা হয়েছে ৭৮টি। আর চুরির মামলা হয়েছে ৩৩৪০টি। বাংলাদেশ জুয়েলারি উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি জুয়েলারি দোকানে চুরি আর ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি যেসব মার্কেটে জুয়েলারি দোকান আছে, সেসব মার্কেটের নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। ডিএমপি ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত ৭ মাসে দেড় হাজারের বেশি চুরি-ডাকাতির মামলা হয়েছে। এর ফলে আতঙ্কিত স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। শুধু ঢাকাতেই নয়, গত এক মাসে সারা দেশে অন্তত ২০টি স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র নাকি মার্কেটের ভেতরের কেউই এসব চুরি বা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির চতুর্থ তলায় দুটি স্বর্ণের দোকানে ভয়াবহ চুরি হয়। এর একটির স্বত্বাধিকারী ছিলেন বেস্ট অ্যান্ড বেস্ট গোল্ড ক্রিয়েশন জুয়েল অ্যাভিনিউয়ের বিপ্লব রায়। ভুক্তভোগী এ ব্যবসায়ীর মতে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে এবং ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে দোকান ভাড়া দিলে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব। ডাকাতি হওয়া স্বর্ণের দোকানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডাকাতি বা চুরি হওয়া স্বর্ণ খুব কম ক্ষেত্রেই উদ্ধার হয়। মামলা হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই এমনটা হয় বলে মনে করছেন তারা। স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি বা চুরির পর ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে পরে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয় না। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ঘটনা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন করে তোলার পাশাপাশি স্বর্ণের দাম বাড়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজেরাই ভোক্তার বন্দকি স্বর্ণ আত্মসাতের জন্য ‘ডাকাতির নাটক’ সাজাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাতে একদল চোর শম্পা জুয়েলার্সের শাটারের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। দোকান মালিকের দাবি অনুযায়ী, প্রায় ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে। আমরা এখন এ দাবির সত্যতা যাচাই করছি। দোকানে বড় ধরনের চুরি হয়েছে, এটি নিশ্চিত। আমরা ইতিমধ্যে মার্কেটের ভেতর ও দোকানের আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহের কাজ করছি। ঘটনাস্থলে সিআইডির টিমও কাজ করছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব। এর অগে গত ৫ অক্টোবর রোববার রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড়সংলগ্ন হাজী রায়হান সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় লিলি গোল্ড হাউস নামের একটি জুয়েলারি দোকানের ১২৫ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। এ ঘটনায় থানায় দায়ের করা এজাহারে জুয়েলারি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেছেন, ‘গত ৫ অক্টোবর রাতে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাসায় যাই। পরের দিন সকালে এসে দেখি পাশের দোকানের দেয়াল কেটে শোকেসে থাকা প্রায় ১২৫ ভরি স্বর্ণালংকার (বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা) এবং ক্যাশবাক্সে থাকা পৌনে তিন লাখ টাকা নিয়ে গেছে।’ রাজধানীর বাইরেও স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। গত ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ সাহেবেরচর বাজারে দুর্র্ধষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। সশস্ত্র ১০-১৫ জনের ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে পাহারাদারদের জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে রেখে তিনটি স্বর্ণের দোকানসহ ৬টি দোকানে ডাকাতি করে। ডাকাত দল ৬টি দোকানের তালা ও সিন্দুক ভেঙে প্রায় ৫ কোটি টাকার স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় গৌরনদী মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। হোসনাবাদ সাহেবেরচর গ্রামের ব্যবসায়ী ফেন্সি জুয়েলার্সের মালিক সঞ্জয় রায় বলেন, ‘আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। আমাদের দোকানে নিজেদের কেনা ও গ্রাহকদের জমা দেওয়া স্বর্ণ ছিল। ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে তা পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তবে স্বর্ণের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সাজানো ‘ডাকাতি’র ঘটনারও সংবাদ পাওয়া গেছে। গত ৫ অক্টোবর মানিকগঞ্জে নিজের দোকানে গ্রাহকদের রক্ষিত স্বর্ণ আত্মসাৎ করার উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে ‘ডাকাতির নাটক’ সাজানোর অভিযোগে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৯ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন জানান, জেলা শহরের স্বর্ণকারপট্টি এলাকায় শুভ দাশের স্বর্ণের দোকানে স্বর্ণালংকার লুট হয়। শুভ দাশ নিজের দোকানে এ স্বর্ণালংকার লুটের মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি পাঁচ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে বিভিন্ন গ্রাহকের স্বর্ণালংকার আত্মসাতের জন্য ভাড়াটে লোক দিয়ে নিজের দোকানে ডাকাতির নাটক সাজান। স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বাজুসের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মো. মাসুদ বলেন, স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। বিষয়টি নিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা আলোচনা করছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে করণীয় নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমান দেশে ফিরলেই নির্বাচনের সব ধোঁয়াসা কেটে যাবে: সরোয়ার আলমগীর

উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা

আপডেট সময় : ০৭:২৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • জুয়েলারি দোকানে চুরি-ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা
  • একমাসে ২০টি স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনা
  • সাত মাসে দেড় হাজারের বেশি চুরি-ডাকাতির মামলা
  • স্বর্ণের দোকানের নিরাপত্তায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জুয়েলারি সমিতিা

আতঙ্কে রয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। কারণ চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে ১৫৬৪টি চুরি-ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বর্ণের দোকানের নিরাপত্তায় পুলিশকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জুয়েলারি সমিতি। গত বুধবার রাতে রাজধানীর মৌচাকের ফরচুন শপিংমল থেকে চুরি হয় ৫০০ ভরি স্বর্ণ। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই চুরির ঘটনা। দেখা যায় দুজন মুখ ঢেকে আর কালো বোরকা পরে দোকানটি থেকে চুরি করছে স্বর্ণালঙ্কার। এর আগে, ৫ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর একটি জুয়েলারি দোকান থেকে প্রায় ১২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ পৌনে তিন লাখ টাকা চুরি করে দুর্বৃত্তরা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, ডিএমপি এলাকার ৫০টি থানায় বছরের প্রথম সাত মাসেই ডাকাতির মামলা হয়েছে ৭৮টি। আর চুরির মামলা হয়েছে ৩৩৪০টি। বাংলাদেশ জুয়েলারি উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি জুয়েলারি দোকানে চুরি আর ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি যেসব মার্কেটে জুয়েলারি দোকান আছে, সেসব মার্কেটের নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। ডিএমপি ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত ৭ মাসে দেড় হাজারের বেশি চুরি-ডাকাতির মামলা হয়েছে। এর ফলে আতঙ্কিত স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। শুধু ঢাকাতেই নয়, গত এক মাসে সারা দেশে অন্তত ২০টি স্বর্ণের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র নাকি মার্কেটের ভেতরের কেউই এসব চুরি বা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির চতুর্থ তলায় দুটি স্বর্ণের দোকানে ভয়াবহ চুরি হয়। এর একটির স্বত্বাধিকারী ছিলেন বেস্ট অ্যান্ড বেস্ট গোল্ড ক্রিয়েশন জুয়েল অ্যাভিনিউয়ের বিপ্লব রায়। ভুক্তভোগী এ ব্যবসায়ীর মতে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিলে এবং ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে দোকান ভাড়া দিলে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব। ডাকাতি হওয়া স্বর্ণের দোকানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডাকাতি বা চুরি হওয়া স্বর্ণ খুব কম ক্ষেত্রেই উদ্ধার হয়। মামলা হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই এমনটা হয় বলে মনে করছেন তারা। স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি বা চুরির পর ওই ব্যবসায়ীর পক্ষে পরে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয় না। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ঘটনা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন করে তোলার পাশাপাশি স্বর্ণের দাম বাড়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিজেরাই ভোক্তার বন্দকি স্বর্ণ আত্মসাতের জন্য ‘ডাকাতির নাটক’ সাজাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রাতে একদল চোর শম্পা জুয়েলার্সের শাটারের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। দোকান মালিকের দাবি অনুযায়ী, প্রায় ৫০০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়েছে। আমরা এখন এ দাবির সত্যতা যাচাই করছি। দোকানে বড় ধরনের চুরি হয়েছে, এটি নিশ্চিত। আমরা ইতিমধ্যে মার্কেটের ভেতর ও দোকানের আশপাশের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহের কাজ করছি। ঘটনাস্থলে সিআইডির টিমও কাজ করছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হব। এর অগে গত ৫ অক্টোবর রোববার রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড়সংলগ্ন হাজী রায়হান সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় লিলি গোল্ড হাউস নামের একটি জুয়েলারি দোকানের ১২৫ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। এ ঘটনায় থানায় দায়ের করা এজাহারে জুয়েলারি ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেছেন, ‘গত ৫ অক্টোবর রাতে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে বাসায় যাই। পরের দিন সকালে এসে দেখি পাশের দোকানের দেয়াল কেটে শোকেসে থাকা প্রায় ১২৫ ভরি স্বর্ণালংকার (বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা) এবং ক্যাশবাক্সে থাকা পৌনে তিন লাখ টাকা নিয়ে গেছে।’ রাজধানীর বাইরেও স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। গত ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ সাহেবেরচর বাজারে দুর্র্ধষ ডাকাতি সংঘটিত হয়। সশস্ত্র ১০-১৫ জনের ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে পাহারাদারদের জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে রেখে তিনটি স্বর্ণের দোকানসহ ৬টি দোকানে ডাকাতি করে। ডাকাত দল ৬টি দোকানের তালা ও সিন্দুক ভেঙে প্রায় ৫ কোটি টাকার স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল লুট করে। এ ঘটনায় গৌরনদী মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে। হোসনাবাদ সাহেবেরচর গ্রামের ব্যবসায়ী ফেন্সি জুয়েলার্সের মালিক সঞ্জয় রায় বলেন, ‘আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। আমাদের দোকানে নিজেদের কেনা ও গ্রাহকদের জমা দেওয়া স্বর্ণ ছিল। ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে তা পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তবে স্বর্ণের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সাজানো ‘ডাকাতি’র ঘটনারও সংবাদ পাওয়া গেছে। গত ৫ অক্টোবর মানিকগঞ্জে নিজের দোকানে গ্রাহকদের রক্ষিত স্বর্ণ আত্মসাৎ করার উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে ‘ডাকাতির নাটক’ সাজানোর অভিযোগে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৯ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন জানান, জেলা শহরের স্বর্ণকারপট্টি এলাকায় শুভ দাশের স্বর্ণের দোকানে স্বর্ণালংকার লুট হয়। শুভ দাশ নিজের দোকানে এ স্বর্ণালংকার লুটের মূল পরিকল্পনাকারী। তিনি পাঁচ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তিতে বিভিন্ন গ্রাহকের স্বর্ণালংকার আত্মসাতের জন্য ভাড়াটে লোক দিয়ে নিজের দোকানে ডাকাতির নাটক সাজান। স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বাজুসের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মো. মাসুদ বলেন, স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। বিষয়টি নিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা আলোচনা করছেন। শিগগিরই এ বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে করণীয় নির্ধারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।