০৯:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তারেক হাসানের কবিতা

  • সবুজ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৪:৫১:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
  • 143

অদৃশ্য মিসাইল

একটি বৃক্ষরোপণ করেছিলাম মনের মাটিতে
বৃক্ষটির নাম ছিল বিশ্বাস,
কিন্তু কিছু দুষ্টু লোকের আনাগোনা ছিল
বাজিমাতের মতো ছিল আশ্বাস।
ভেবেছিলাম আশ্বাসগুলো বিশ্বাসের সাথে
নিঃশ্বাসে অক্সিজেন হিসেবে নিব,
বিনিময় কিছুই না নিঃস্বার্থ বন্ধু হিসেবে নয়
বোকার মতো নাসিকা কেটে দিব।
ইন্দ্রিয় শক্তি থাকার পরও যেন অন্ধ আমি
ভালোবাসার অর্থ এত সহজ নয়,
স্বার্থের রথে উঠে মিসাইল ছুড়ে মন ভূমিতে
বিশ্বাসঘাতক কীভাবে মানুষ হয়।
এই পৃথিবী যে পৃথিবী নয়
মনুষ্যত্বের বিকল যন্ত্রে মনুষ্যত্ব খোঁজা হয়
তবুও আশীর্বাদের ছায়া তাদের মাথায়
ভুল আর শুদ্ধতার যুদ্ধ হয়।

বর্ষাগীতি

আষাঢ়ের ভোরে পৃথিবী জুড়ে
কালো মেঘে ঢেকেছে ঐ নীল আকাশ,
স্বপ্নগুলো এলোমেলো করে
ঝিরঝির বৃষ্টিতে পূবালী বাতাস।
ফুটেছে কদম ফুল, গাছেরও ডালে
কত পাখি উড়ে যায় ডানা মেলে।

নিটোল প্রেম

পরিচয়টা অল্প কথায় স্বল্প সময়ে
অভিন্ন মৌনতার দেয়াল ভেদ করে
আরেকটি কল্প জগতের সন্ধান পাই
পূর্ণিমা রাতে হিমালয়ে চূড়ায় দাঁড়িয়ে।
চাঁদ যেন তার পূর্ণ রূপের মহড়ায়
অতি নিকটে, আমায় আকৃষ্ট করে যায়
যৌবনের সমস্ত রূপ রূপান্তরিত হয়
এক অবিচ্ছেদ্য ভালোবাসার কুন্ডলীতে।
এ যেন সাতপাক নয়, ঘুরপাক খায়
হৃৎপিণ্ডের চারপাশে, স্থায়িত্ব খুঁজে
চোখ বুজে, মনের গহিনের গুহায়
সুখ পেতে চায় দেহমন দুটোই স্পর্শে।
অন্তমিলের ছন্দ খুঁজে পেতে মরিয়া
আহা প্রেম দাও এ মন ভরিয়া,
স্বপ্নের খাতায় নয় বাস্তব দেখতে চাই
আজীবন এক নিটোল প্রেমের গল্প।

সৃষ্টিতে বিশ্বাস

আমি বাঁচিব কত দিন, কতক্ষণ
কে বলিতে পারে?
যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন ভালোবেসে
চিনিয়াছি কি তারে?
অন্ন দিয়াছে যেথায় সেথায়
অঙ্গ দিয়াছে শোভায়,
জীবন দিয়াছে চলার জন্য
মজিয়াছি কোন দাবায়?
জমিন দিয়াছে ফসল ফলাতে
অন্ন জোগানে তিনিই ফসল ফলায়,
মানুষের চাহিদায় দিয়াছে জলধারা
ঝরনা, সাগর, নদী নালায়।
গাছ দিয়েছে মানুষের কাজে
সেথায় দিয়েছে বাঁচার নিঃশ্বাস,
কে দিয়েছে কিভাবে বাঁচি
তার প্রতি কতটুকু আছে বিশ্বাস।
সূর্য দিয়েছে দিনের নামে
রাতের আঁধার কাটাতে চাঁদ,
ভালো কর্মের জন্য দয়ায়
দিয়েছে সুন্দর দুটি হাত।
চোখ দিয়েছে দেখার জন্য
কান দিয়েছে শুনতে,
মুখ দিয়েছে খাওয়ার জন্য
আবার কথা বলতে।
নাক দিয়েছে ঘ্রাণ নিতে
বাঁচার মন্ত্র নিঃশ্বাসে,
পা দিয়েছে চলার জন্য
হৃৎপিণ্ডের কাজ বিশ্বাসে।
একি রক্ত দিয়েছে গায়ে
তবে ভিন্ন কেন জাত,
জাতির ভেদাভেদে বিবেক দিয়েছে
সত্য মিথ্যা যাচাই বাছাইয়ে
দিয়েছে কিছুদিন হায়াত।
মৃত্যু দিয়েছে ভীতির জন্য
যেন করি তার ইবাদত,
মহাপুরুষ পাঠিয়েছে যুগে যুগে
ধর্মগ্রন্থে দেখিয়েছে সঠিক পথ।
যৌবন দিয়েছে সবার মাঝেই
সৃষ্টি করিয়াছে নর-নারী,
আরামে আয়েশে, দুঃখে কষ্টে
যেন তার শুকরিয়া আদায় করি।
জন্ম মৃত্যু দিয়েছে যেন
ভয়ে তাকে সিজদা করি,
পাপ পুণ্যের বিচারে যেন
ইহকাল পরকাল বিশ্বাস করি।
বিবেকের বিচারে যেন
শয়তানের পথ ছাড়ি,
ঈমান পরীক্ষার মাঠে যেন
অদৃশ্য এক ঈশ্বরের পূজা করি।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

তারেক হাসানের কবিতা

আপডেট সময় : ০৪:৫১:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

অদৃশ্য মিসাইল

একটি বৃক্ষরোপণ করেছিলাম মনের মাটিতে
বৃক্ষটির নাম ছিল বিশ্বাস,
কিন্তু কিছু দুষ্টু লোকের আনাগোনা ছিল
বাজিমাতের মতো ছিল আশ্বাস।
ভেবেছিলাম আশ্বাসগুলো বিশ্বাসের সাথে
নিঃশ্বাসে অক্সিজেন হিসেবে নিব,
বিনিময় কিছুই না নিঃস্বার্থ বন্ধু হিসেবে নয়
বোকার মতো নাসিকা কেটে দিব।
ইন্দ্রিয় শক্তি থাকার পরও যেন অন্ধ আমি
ভালোবাসার অর্থ এত সহজ নয়,
স্বার্থের রথে উঠে মিসাইল ছুড়ে মন ভূমিতে
বিশ্বাসঘাতক কীভাবে মানুষ হয়।
এই পৃথিবী যে পৃথিবী নয়
মনুষ্যত্বের বিকল যন্ত্রে মনুষ্যত্ব খোঁজা হয়
তবুও আশীর্বাদের ছায়া তাদের মাথায়
ভুল আর শুদ্ধতার যুদ্ধ হয়।

বর্ষাগীতি

আষাঢ়ের ভোরে পৃথিবী জুড়ে
কালো মেঘে ঢেকেছে ঐ নীল আকাশ,
স্বপ্নগুলো এলোমেলো করে
ঝিরঝির বৃষ্টিতে পূবালী বাতাস।
ফুটেছে কদম ফুল, গাছেরও ডালে
কত পাখি উড়ে যায় ডানা মেলে।

নিটোল প্রেম

পরিচয়টা অল্প কথায় স্বল্প সময়ে
অভিন্ন মৌনতার দেয়াল ভেদ করে
আরেকটি কল্প জগতের সন্ধান পাই
পূর্ণিমা রাতে হিমালয়ে চূড়ায় দাঁড়িয়ে।
চাঁদ যেন তার পূর্ণ রূপের মহড়ায়
অতি নিকটে, আমায় আকৃষ্ট করে যায়
যৌবনের সমস্ত রূপ রূপান্তরিত হয়
এক অবিচ্ছেদ্য ভালোবাসার কুন্ডলীতে।
এ যেন সাতপাক নয়, ঘুরপাক খায়
হৃৎপিণ্ডের চারপাশে, স্থায়িত্ব খুঁজে
চোখ বুজে, মনের গহিনের গুহায়
সুখ পেতে চায় দেহমন দুটোই স্পর্শে।
অন্তমিলের ছন্দ খুঁজে পেতে মরিয়া
আহা প্রেম দাও এ মন ভরিয়া,
স্বপ্নের খাতায় নয় বাস্তব দেখতে চাই
আজীবন এক নিটোল প্রেমের গল্প।

সৃষ্টিতে বিশ্বাস

আমি বাঁচিব কত দিন, কতক্ষণ
কে বলিতে পারে?
যিনি সৃষ্টি করিয়াছেন ভালোবেসে
চিনিয়াছি কি তারে?
অন্ন দিয়াছে যেথায় সেথায়
অঙ্গ দিয়াছে শোভায়,
জীবন দিয়াছে চলার জন্য
মজিয়াছি কোন দাবায়?
জমিন দিয়াছে ফসল ফলাতে
অন্ন জোগানে তিনিই ফসল ফলায়,
মানুষের চাহিদায় দিয়াছে জলধারা
ঝরনা, সাগর, নদী নালায়।
গাছ দিয়েছে মানুষের কাজে
সেথায় দিয়েছে বাঁচার নিঃশ্বাস,
কে দিয়েছে কিভাবে বাঁচি
তার প্রতি কতটুকু আছে বিশ্বাস।
সূর্য দিয়েছে দিনের নামে
রাতের আঁধার কাটাতে চাঁদ,
ভালো কর্মের জন্য দয়ায়
দিয়েছে সুন্দর দুটি হাত।
চোখ দিয়েছে দেখার জন্য
কান দিয়েছে শুনতে,
মুখ দিয়েছে খাওয়ার জন্য
আবার কথা বলতে।
নাক দিয়েছে ঘ্রাণ নিতে
বাঁচার মন্ত্র নিঃশ্বাসে,
পা দিয়েছে চলার জন্য
হৃৎপিণ্ডের কাজ বিশ্বাসে।
একি রক্ত দিয়েছে গায়ে
তবে ভিন্ন কেন জাত,
জাতির ভেদাভেদে বিবেক দিয়েছে
সত্য মিথ্যা যাচাই বাছাইয়ে
দিয়েছে কিছুদিন হায়াত।
মৃত্যু দিয়েছে ভীতির জন্য
যেন করি তার ইবাদত,
মহাপুরুষ পাঠিয়েছে যুগে যুগে
ধর্মগ্রন্থে দেখিয়েছে সঠিক পথ।
যৌবন দিয়েছে সবার মাঝেই
সৃষ্টি করিয়াছে নর-নারী,
আরামে আয়েশে, দুঃখে কষ্টে
যেন তার শুকরিয়া আদায় করি।
জন্ম মৃত্যু দিয়েছে যেন
ভয়ে তাকে সিজদা করি,
পাপ পুণ্যের বিচারে যেন
ইহকাল পরকাল বিশ্বাস করি।
বিবেকের বিচারে যেন
শয়তানের পথ ছাড়ি,
ঈমান পরীক্ষার মাঠে যেন
অদৃশ্য এক ঈশ্বরের পূজা করি।