কুবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন গত ১৪ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করেছে। তফসিল অনুযায়ী আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই প্রেক্ষিতে সারাদেশে এখন বইছে নির্বাচনী হাওয়া, তার সাথে রয়েছে নানান উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা। বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো এবং দলের নেতারা। জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও নতুন করে সরকার গঠিত হবে। পরিবর্তন আসবে বিভিন্ন খাতে, মন্ত্রণালয়ের। আসন্ন এই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চাওয়া, প্রত্যাশা এবং ভাবনা রয়েছে। আসন্ন এই নির্বাচন নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন দৈনিক সবুজ বাংলা’র কুবি প্রতিনিধি আবু হানিফ…
‘প্রথম চাওয়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বাভাবিকভাবে হোক’
‘সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের প্রথম চাওয়া নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও স্বাভাবিকভাবে হোক। সাধারণ জনগণ যেন তাদের মৌলিক ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।এই নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে বিগত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মকান্ড বৃদ্ধি করেছে। এতে বেড়েছে জনমানুষের দুর্ভোগ আর সেই প্রভাব পড়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতেও। কোভিডের কারণে এমনিতেই আমরা অনেক পিছিয়ে পড়েছি, আমরা চাই না নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হোক। আমাদের প্রত্যাশা নির্বাচন হোক স্বচ্ছ প্রতিদন্ধিতাপূর্ণ। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ করবে।জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটকেন্দ্র গিয়ে তাদের প্রতিনিধি বাছাই করবে। যে সরকার আসুক না কেন, তারা যেন শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে।’
দীপ চৌধুরী
লোক প্রশাসন বিভাগ
‘নির্বাচন শব্দটির সাথে জড়িত নিরপেক্ষতা’
‘আমার মতে নির্বাচন শব্দটির সাথে জড়িত নিরপেক্ষতা। একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা চাইব আসন্ন নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার সাথে হয়। ভোট চুরি, হতাহত ও সহিংসতার মতো অপরাধমূলক কাজগুলো বন্ধের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের বিশেষ নজর দিতে হবে হবে। যেহেতু একটি জাতীয় নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে দেশিয় ভাবমূর্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়, তাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আমাদের সকলের কাম্য। আমার বিশ্বাস বর্তমান নির্বাচন কমিশনার অবশ্যই এই দিকগুলোর প্রতি নজর রাখবেন এবং নির্বাচনকে ঘিরে যেকোনো জটিলতা নিরসনে কাজ করবে।’
গুলশান পারভীন সুইটি
নৃবিজ্ঞান বিভাগ
‘নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব’
‘নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব। তাই একজন তরুন হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা এবারের নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তি পূর্ণ ভাবে হয়। নির্বাচন নিয়ে আমাদের জনমনে সর্বাদা একটা ভয় কাজ করে। এই ভয় আমাদের অতীত ইতিহাস থেকে সৃষ্টি। কারণ নির্বাচনের কারণে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার জন্য জনগণ বরাবরই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। শান্তি পূর্ণ নির্বাচনের লক্ষে আমাদের সবাই কে এগিয়ে আসা উচিত। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে এক্ষেত্রে মুখ্য ভুমিকা পালন করতে হবে। তাছাড়া নির্বাচনের সময় ধর্মীয় সংখ্যালগু সম্প্রদায় বিভিন্ন ভাবে আক্রমণ ও হুমকির স্বীকার হয়। তারাও এই নির্বাচনের সময়ে নিরাপত্তা হীনতায় ভুগে। তাই রাষ্ট্র তথা জনগনকে ধর্মীয় সংখ্যালগুদের জীবনের ও সম্পত্তির নিরাপত্তার জন্যও সজাগ থাকতে হবে।
ধ্রুব বিশ্বাস
আইন বিভাগ
‘যারাই আসুক তারা ক্ষমতাকেন্দ্রিক না হোক’
‘গণতান্ত্রিক ধারার দেশ হিসেবে নির্বাচন এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি নির্বাচন আসলেই এই দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করে। এর ফলাফল হিসেবে ভোগান্তিতে পড়তে হয় দেশের সাধারণ মানুষদের। নির্বাচনের পরিবেশ হওয়া উচিত উৎসবমুখর কিন্তু গত কয়েক দশকে আমাদের দেশে তা লক্ষ্য করা যায় না। নির্বাচনে একাধিক বিরোধী দল থাকলে জনগণের জন্যও যথাযথ নেতৃত্ব বাছাই করাটা সহজ হয়ে যায়। আমাদের দেশে একাধিক রাজনৈতিক দল থাকলেও বিগত কয়েক দশকের নির্বাচনে তাদের অবস্থান তেমন উল্লেখযোগ্য ভাবে চোখে পড়ার মতো হয়নি। আশা করি এই অবস্থার পরিবর্তন হবে শীঘ্রই, দেশের নেতৃত্বে যে বা যারাই আসুক তারা যেন ব্যক্তিকেন্দ্রিক বা ক্ষমতাকেন্দ্রিক না হয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করবে। সর্বপোরি তারা শিক্ষা বান্ধব ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করবে। তার পাশাপাশি গতানুগতিক শিক্ষা ধারা থেকে বের হয়ে গবেষণা কেন্দ্রিক শিক্ষাব্যাবস্থার প্রসার ঘটাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে গবেষণার মান বৃদ্ধি করবে। পাশাপাশি শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ফাহিমা আক্তার
মার্কেটিং বিভাগ


























