০২:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বুশরা বিবিকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ

❖বিরোধীদলীয় নেতা হলেন ওমর আইয়ুব

 

 

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বলেছেন, কারাগারে থাকা তার স্ত্রী বুশরা বিবির শরীরে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। সাব- জেলে বুশরাকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। বুশরা বিবির ত্বক ও জিহ্বায় বিষপ্রয়োগের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। আর আমি জানি, এর পেছনে কার হাত রয়েছে। গত মঙ্গলবার ইমরান আদিয়ালা কারাগারে বসা আদালতের শুনানির সময় তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছেন পিটিআই সাধারণ সম্পাদক ওমর আইয়ুব।

 

 

ইমরান নিজে এখন রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন। অন্যদিকে বুশরা বিবি এখন রাজধানী ইসলামাবাদে ইমরান খানের বানি গালার বাড়িতে বন্দি আছেন। ওই বাড়িকেই সাব- জেল ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের প্রশাসন। এ সময় আদালতের কাছে তার কারাবন্দি স্ত্রীকে বিষপ্রয়োগের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার দাবি জানান। সেই সঙ্গে বুশরার প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ চান। তবে ইমরানের এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কোনো নির্দেশ জারি করেননি। বুশরার স্বাস্থ্য পরীক্ষার আর্জির নিয়ে ইমরানকে লিখিত আবেদন জমা দিতে বলেছেন।

 

 

কারাবন্দি বুশরার জীবন ও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে গভীর উদ্বেগ জানায় পিটিআই। দলের নারী শাখার প্রেসিডেন্ট কানওয়াল শাউজাব জানান, বুশরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। কেননা কারাগারে তাকে সন্দেহজনক ও ক্ষতিকারক খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। ওই সময় পিটিআইয়ের আইনজীবী নাঈম হায়দার বলেছিলেন, কারাবন্দি বুশরা খুবই অসুস্থ। তাকে ‘খুব মসলাযুক্ত’ খাবার খাওয়ানো হয়েছে। এতে তার মুখের ভেতর আলসার হয়ে গেছে।

 

 

এর আগে আদালতে হাজিরা দেওয়ার ফাঁকে সাংবাদিকদের কাছে একই অভিযোগ করেছিলেন বুশরা নিজেও। তিনি বলেছিলেন, শবে মেরাজের সময় কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া খাবার ও পানি খুবই ‘তেতো স্বাদের’ ছিল। তখন তার খাবারে ‘তিন ফোঁটা টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো হয়েছিল। ২০১৮ সালে ইমরান খানের সঙ্গে বুশরার বিয়ে হয়। বিয়ের আয়োজন ছিল বেশ সাদাসিধে, ঘরোয়া। গুঞ্জন রয়েছে, তেরো শতকে নির্মিত একটি সুফি দরগায় ইমরানের সঙ্গে পাঁচ সন্তানের জননী বুশরার প্রথম সাক্ষাৎ হয়। তখন বুশরা প্রথম স্বামীর সংসার করছিলেন। বুশরার বয়স এখন ৪০-এর কোঠায়। তিনি সব সময় নিজেকে নেকাবে ঢেকে রাখেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার জাতীয় পরিষদ সচিবালয়ের এক বিবৃতি অনুযায়ী, পিটিআই নেতা গহর খান, আমির দোগার ও আইয়ুব নিজে স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়।বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে আইয়ুবের নাম ঘোষণা করেন স্পিকার।

 

 

বিরোধীদলীয় নেতার পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ছিল গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এ সময়ে অন্য কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল না করায় একক প্রার্থী হিসেবে আইয়ুবকে বিরোধীদলীয় নেতা ঘোষণা করা হয়। এর আগে গত ৯ মার্চ বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে স্পিকারের দপ্তরে আইয়ুবের মনোনয়ন সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেয় পিটিআই ও সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি)।

 

উল্লেখ্য, জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে সংরক্ষিত আসন পেতে তারা এসআইসিতে যোগ দেন। অবশ্য দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে গহর খান ও ওমর আইয়ুব যোগ দেননি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনো দল সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে সবচেয়ে বেশি আসন পান পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পায় পিএমএল-এন। তৃতীয় অবস্থানে ছিল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পরে পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

বুশরা বিবিকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:১৭:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল ২০২৪

❖বিরোধীদলীয় নেতা হলেন ওমর আইয়ুব

 

 

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান বলেছেন, কারাগারে থাকা তার স্ত্রী বুশরা বিবির শরীরে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। সাব- জেলে বুশরাকে বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে। বুশরা বিবির ত্বক ও জিহ্বায় বিষপ্রয়োগের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। আর আমি জানি, এর পেছনে কার হাত রয়েছে। গত মঙ্গলবার ইমরান আদিয়ালা কারাগারে বসা আদালতের শুনানির সময় তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছেন পিটিআই সাধারণ সম্পাদক ওমর আইয়ুব।

 

 

ইমরান নিজে এখন রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন। অন্যদিকে বুশরা বিবি এখন রাজধানী ইসলামাবাদে ইমরান খানের বানি গালার বাড়িতে বন্দি আছেন। ওই বাড়িকেই সাব- জেল ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের প্রশাসন। এ সময় আদালতের কাছে তার কারাবন্দি স্ত্রীকে বিষপ্রয়োগের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার দাবি জানান। সেই সঙ্গে বুশরার প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ চান। তবে ইমরানের এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কোনো নির্দেশ জারি করেননি। বুশরার স্বাস্থ্য পরীক্ষার আর্জির নিয়ে ইমরানকে লিখিত আবেদন জমা দিতে বলেছেন।

 

 

কারাবন্দি বুশরার জীবন ও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে গভীর উদ্বেগ জানায় পিটিআই। দলের নারী শাখার প্রেসিডেন্ট কানওয়াল শাউজাব জানান, বুশরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। কেননা কারাগারে তাকে সন্দেহজনক ও ক্ষতিকারক খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। ওই সময় পিটিআইয়ের আইনজীবী নাঈম হায়দার বলেছিলেন, কারাবন্দি বুশরা খুবই অসুস্থ। তাকে ‘খুব মসলাযুক্ত’ খাবার খাওয়ানো হয়েছে। এতে তার মুখের ভেতর আলসার হয়ে গেছে।

 

 

এর আগে আদালতে হাজিরা দেওয়ার ফাঁকে সাংবাদিকদের কাছে একই অভিযোগ করেছিলেন বুশরা নিজেও। তিনি বলেছিলেন, শবে মেরাজের সময় কারা কর্তৃপক্ষের দেওয়া খাবার ও পানি খুবই ‘তেতো স্বাদের’ ছিল। তখন তার খাবারে ‘তিন ফোঁটা টয়লেট ক্লিনার’ মেশানো হয়েছিল। ২০১৮ সালে ইমরান খানের সঙ্গে বুশরার বিয়ে হয়। বিয়ের আয়োজন ছিল বেশ সাদাসিধে, ঘরোয়া। গুঞ্জন রয়েছে, তেরো শতকে নির্মিত একটি সুফি দরগায় ইমরানের সঙ্গে পাঁচ সন্তানের জননী বুশরার প্রথম সাক্ষাৎ হয়। তখন বুশরা প্রথম স্বামীর সংসার করছিলেন। বুশরার বয়স এখন ৪০-এর কোঠায়। তিনি সব সময় নিজেকে নেকাবে ঢেকে রাখেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার জাতীয় পরিষদ সচিবালয়ের এক বিবৃতি অনুযায়ী, পিটিআই নেতা গহর খান, আমির দোগার ও আইয়ুব নিজে স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়।বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে আইয়ুবের নাম ঘোষণা করেন স্পিকার।

 

 

বিরোধীদলীয় নেতার পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ছিল গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এ সময়ে অন্য কেউ মনোনয়নপত্র দাখিল না করায় একক প্রার্থী হিসেবে আইয়ুবকে বিরোধীদলীয় নেতা ঘোষণা করা হয়। এর আগে গত ৯ মার্চ বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে স্পিকারের দপ্তরে আইয়ুবের মনোনয়ন সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেয় পিটিআই ও সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি)।

 

উল্লেখ্য, জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। পরে সংরক্ষিত আসন পেতে তারা এসআইসিতে যোগ দেন। অবশ্য দলীয় নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে গহর খান ও ওমর আইয়ুব যোগ দেননি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনো দল সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তবে সবচেয়ে বেশি আসন পান পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পায় পিএমএল-এন। তৃতীয় অবস্থানে ছিল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। পরে পিএমএল-এন ও পিপিপি জোট সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।