০২:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুর অঞ্চলে সুগন্ধি ধান চাষে নিরব বিপ্লব

রংপুর অঞ্চলে  বিশেষ জাতের ধান থেকে তৈরি সুগন্ধি চাল কৃষি ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব ঘটিয়েছে। মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে এ ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সুগন্ধি ধানের জাতগুলোর মধ্যে চিনিগুড়া, কালিজিরা ও কাটারিভোগ ধানের আতপ চালের পোলাও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এসব ধান কৃষি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এসব চাল এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রংপুর অ লের গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় বোরো এবং আমন মৌসুমে ৩৪ হাজার ৫৯৬ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বোরো মৌসুমে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর এবং আমন মৌসুমে ৩২ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধান চাষ করা হয়েছে। বোরো ও আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধানের উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রিধান-৩৪, বিআর-৫৫, ব্রিধান-৩৪, ব্রিধান-৩৭, ব্রিধান-৩৮, ব্রিধান-৭০, ব্রিধান-৮০ এবং স্থানীয় জাতের মধ্যে কাটারিভোগ, কালিজিরা, চিনিগুড়া (জিরাকাটারি), চিনি আতপ, বাদশাভোগ, জটাকাটারি, বেগুনবিচি, ফিলিপিনকাটারি, বাসমিত, বাবুই ভোগ, নুনিয়া, পটলপারি, জামাই সোহাগী, তিলকাপুড়, উকুন মধু, জটাপাইরি, দড়িয়া, ভোগধান উল্লেখযোগ্য। ব্রিধান-৩৪ স্থানীয় সুগন্ধি জাতের ধান চিনিগুড়া বা কালিজিরার মতই অথচ ফলন প্রায় দ্বিগুণ। কৃষকেরা এ জাতের ধান চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। তাছাড়া আলোক সংবেদনশীল হওয়ায় আমনে বন্যাপ্রবণ এলাকায় রোপণ উপযোগী এ জাতের ধান। এসব ধান সুগন্ধিযুক্ত এবং খেতেও সুস্বাদু। অপরদিকে বোরো মৌসুমে সুগন্ধিযুক্ত আধুনিক জাত হচ্ছে ব্রিধান-৫০ (বাংলামতি)। এ জাতের চালের মান বাসমতির মতই। হেক্টর প্রতি ফলন হয় ৪ মেট্রিক টন। এ ধান বোরো মৌসুমে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ এবং রোপা আমন মৌসুমে ৫-২৫ জুলাই পর্যন্ত বীজতলা করতে হয়। তবে স্বল্পমেয়াদি জাতের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের ২য় বা ৩য় সপ্তাহে বপন করার উত্তম সময় বলে মনে করে কৃষি বিভাগ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের বুড়িহাট হটিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু সায়েম বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেশি অতি উন্নতমানের সুগন্ধি চালের জাতগুলো স¤পর্কে ধারণা ও প্রচারণার অভাব থাকায় নামি-দামি হোটেলে আমাদের জনপ্রিয় সুগন্ধি ধানের পরিবর্তে বিদেশি বাসমতি জাতের চাল ব্যবহার প্রচলন দেখা যায়। বর্তমান সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত কয়েক বছরে রংপুর অ লে সুগন্ধি ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

রংপুর অঞ্চলে সুগন্ধি ধান চাষে নিরব বিপ্লব

আপডেট সময় : ০২:৩১:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০২৪

রংপুর অঞ্চলে  বিশেষ জাতের ধান থেকে তৈরি সুগন্ধি চাল কৃষি ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব ঘটিয়েছে। মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে এ ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সুগন্ধি ধানের জাতগুলোর মধ্যে চিনিগুড়া, কালিজিরা ও কাটারিভোগ ধানের আতপ চালের পোলাও জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। এসব ধান কৃষি ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। এসব চাল এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রংপুর অ লের গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলায় বোরো এবং আমন মৌসুমে ৩৪ হাজার ৫৯৬ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বোরো মৌসুমে ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর এবং আমন মৌসুমে ৩২ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে সুগন্ধি ধান চাষ করা হয়েছে। বোরো ও আমন মৌসুমে সুগন্ধি ধানের উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রিধান-৩৪, বিআর-৫৫, ব্রিধান-৩৪, ব্রিধান-৩৭, ব্রিধান-৩৮, ব্রিধান-৭০, ব্রিধান-৮০ এবং স্থানীয় জাতের মধ্যে কাটারিভোগ, কালিজিরা, চিনিগুড়া (জিরাকাটারি), চিনি আতপ, বাদশাভোগ, জটাকাটারি, বেগুনবিচি, ফিলিপিনকাটারি, বাসমিত, বাবুই ভোগ, নুনিয়া, পটলপারি, জামাই সোহাগী, তিলকাপুড়, উকুন মধু, জটাপাইরি, দড়িয়া, ভোগধান উল্লেখযোগ্য। ব্রিধান-৩৪ স্থানীয় সুগন্ধি জাতের ধান চিনিগুড়া বা কালিজিরার মতই অথচ ফলন প্রায় দ্বিগুণ। কৃষকেরা এ জাতের ধান চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। তাছাড়া আলোক সংবেদনশীল হওয়ায় আমনে বন্যাপ্রবণ এলাকায় রোপণ উপযোগী এ জাতের ধান। এসব ধান সুগন্ধিযুক্ত এবং খেতেও সুস্বাদু। অপরদিকে বোরো মৌসুমে সুগন্ধিযুক্ত আধুনিক জাত হচ্ছে ব্রিধান-৫০ (বাংলামতি)। এ জাতের চালের মান বাসমতির মতই। হেক্টর প্রতি ফলন হয় ৪ মেট্রিক টন। এ ধান বোরো মৌসুমে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ এবং রোপা আমন মৌসুমে ৫-২৫ জুলাই পর্যন্ত বীজতলা করতে হয়। তবে স্বল্পমেয়াদি জাতের ক্ষেত্রে জুলাইয়ের ২য় বা ৩য় সপ্তাহে বপন করার উত্তম সময় বলে মনে করে কৃষি বিভাগ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুরের বুড়িহাট হটিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু সায়েম বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেশি অতি উন্নতমানের সুগন্ধি চালের জাতগুলো স¤পর্কে ধারণা ও প্রচারণার অভাব থাকায় নামি-দামি হোটেলে আমাদের জনপ্রিয় সুগন্ধি ধানের পরিবর্তে বিদেশি বাসমতি জাতের চাল ব্যবহার প্রচলন দেখা যায়। বর্তমান সরকার সুগন্ধি চাল রপ্তানিতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত কয়েক বছরে রংপুর অ লে সুগন্ধি ধানের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।